সকল মেনু

পোড়া জ্বালানী তেলে সয়লাব মংলা

সংলামাহমুদ-হাসান, মংলা প্রতিবেদক : মংলায় আবারো পরিবেশ বিধ্বংসী পোড়া জ্বালানী তেলে সয়লাব। জাহাজী চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের হোতারা ডাম্পিংয়ের পোড়া তেল ডাম্পিং না করে প্রকাশ্যে বাজারজাত করে উল্টো বিক্রি করছে। মংলা নদীর পাশে শহরের রিজেকশন গলিতে গর্ত করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে এ বর্জ্য্য তেল । যেকোনো মুহূর্তে এ দূষিত তেল নদীর পানিতে মিশে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে। শত শত ব্যারেল পোড়া তেল বাজারজাত করছে চোরাকারবারী এই চক্রটি। তারা মংলা বন্দরে আসা বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে দূষিত বর্জ্য্য/পোড়া তেল ডাম্পিং করার নামে নামিয়ে আনে। পরে ওই চক্রটি পরিবেশ বিনষ্টকারী ওই তেল ডাম্পিং না করে মোটা অংকের টাকায় দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে। মংলায় চোরাকারবারী হোতা আলু মোস্তফা, বোসন জাহাঙ্গীর ও তাহের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ পোড়া তেল জাহাজ থেকে চোরাকারবারীদের দিয়ে পাচার করে আনে। এ পাচারকারীদের গডফাদার হিসেবে আছে দু’প্রভাবশালী নেতা। মংলা বন্দরে এরা দীর্ঘদিন থেকে চোরকারবারী ব্যবসা চালিয়ে আসছে। কেউ এদের প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর চালানো হয় হামলা ও মিথ্যে মামলা। কিছু দিন পূর্বে মংলার শেলা নদীতে একটি তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে গেলে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর টনক নড়ে। তারা সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করে বিভিন্ন বক্তব্য প্রদান করে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মংলায় ভিড় করে। দেশী-বিদেশী সাংবাদিকরা ফার্নেস ওয়েলের ভাসমান ছবিসহ বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশ করে। পরে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতির আশংকায় সরকারের আহ্বানে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সুন্দরবনের শেলা নদীর অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করে একটি সুপারিশমালা পেশ করেন। তবে বর্তমানে মংলা বন্দর শহরে যে হারে পরিবেশের সব চেয়ে ক্ষতিকর পোড়া ফার্নেস অয়েল মজুদ করা হচ্ছে তাতে যেকোনো মুহূর্তে ওই পোড়া তেল মংলা নদীতে ভেসে গিয়ে আরো মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাতে পারে। বিশেষ করে মংলা নদীর মাত্র ৫০ গজের মধ্যে এ বিষাক্ত পোড়া তেলের মজুদ গড়ে তোলায় ওই এলাকার বাসিন্দারা মারাত্মক হুমকির মধ্যে বসবাস করছেন। ইতোমধ্যে কিছু তেল নদীতে মিশে যাচ্ছে রাস্তার ড্রেনের মাধ্যমে। এলাকাবাসী এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে চোরাচালানী সিন্ডিকেট সদস্য বোসন জাহাঙ্গীর বলেন, তারা এ দূষিত তেল চোরাকারবারী ও ভেন্ডার লাইসেন্সধারীদের কাছ থেকে ক্রয় করেছেন। তবে তিনি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, বৈধ কাগজপত্রের অন্তরালে জাহাজ থেকে বর্জ্য্য তেল নামানো হয় ডাম্পিং করার জন্য। এজন্য নির্দিষ্ট পরিমান টাকাও বরাদ্দ থাকে। তবে দূষিত এ তেল ডাম্পিং করার বিধান থাকলেও তা করা হচ্ছে না। ডাম্পিংয়ের নিয়মানুযায়ী জাহাজী বর্জ্য তেল নদী থেকে অনেক দূরে মাটিতে গর্ত করে পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়মানুযায়ী সকল আইন মেনে ডাম্পিং করতে হবে। মুনাফালোভী ওই পাচারকারী চক্রটি বর্জ্য তেল ডাম্পিং না করে ঢাকা খুলনার বিভিন্ন পার্টির নিকট বিক্রি করছে। এর ফলে মংলা বন্দর শহর আবারো পরিবেশ বিপর্যয়ে পড়তে যাচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সচেতন মহল। এ ব্যাপারে মংলা কাস্টমস এর সহকারী কমিশনার তাহমিনা আক্তার পলি জানান, মংলা বন্দর শহরে এভাবে বর্জ্য তেল সংরক্ষণ ও বিক্রির বৈধতা নেই। তবে কোনো ভেন্ডর লাইসেন্সের অন্তরালে এধরনের কাজ করা হলে কাস্টমস্ তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি আরো জানান কাস্টমস-এর পূর্ব অনুমতি ছাড়া বিদেশি জাহাজ থেকে সকল প্রকার পণ্য নামানো অবৈধ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top