সকল মেনু

সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ – সংবাদ সম্মেলন

unnamed হুমায়ুন কবীর,বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) থেকে:  ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুন ও দেশত্যাগে বাধ্য করার ভুয়া সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া ছবি প্রকাশের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সহ স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা কর্মী সহ সহস্রাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া আইডি খুলে ভুয়া ছবি দিয়ে অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ট মোহন সিংহ তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা রণবাগ নামক স্থানে ঠাকুরগাঁও-০২ আসনের সংসদ সদস্য চা বাগান গড়ে তুলেছেন। সে চা বাগানের অভ্যন্তরে ২২ শতাংশ জমি স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের জনৈক অকুল চন্দ্র তার জমি বলে দাবি করেন। এমন দাবির প্রেক্ষিতে কিছুদিন পূর্বে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারগন জমি পরিমাপ করে অকুল চন্দ্রের জমির পরিমান উল্লেখ করে বিষয়টির সুরাহা করলেও স্থানীয় কিছু জামায়াত-শিবিরের লোকজন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আইয়ুব আলী অকুল চন্দ্রকে তার দাবিকৃত জমি পাইয়ে দিবেন বলে প্রলোভন দেন। কয়েকদিন আগে জামায়াত নেতা আইয়ুব আলীর উষ্কানীতে অকুল চন্দ্র সহ তার পরিবারের লোকজন সেই জমি দখল করতে গেলে চা বাগানের শ্রমিকরা বাধা প্রদান করে অকুল চন্দ্র সহ তার পরিবারকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন একটি সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদে উল্লেখ করা হয়, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রণবাগে কয়েকটি হিন্দু পরিবারের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা সহ ধর্ষণ এবং সংখ্যালঘুদের দেশান্তর করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
সংবাদ প্রকাশের পরে প্রায় ১ সপ্তাহ আগে ঠাকুরগাঁও জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা সহ জেলা আওয়ামীলীগ নেতারা, জেলা ও উপজেলার মানবাধিকার কর্মীরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান এবং ঠাকুরগাঁও হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি এডভোকেট বলরাম গুহ ঠাকুরতা, সাধারন সম্পাদক এডভোকেট ইন্দ্রনাথ রায়, এডভোকেট অতুল চন্দ্র রায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অরুনাংশু দত্ত টিটো সহ জেলার মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সংবাদ পত্রে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। রণবাগ এলাকায় এরকম ঘটনার কোন সত্যতা তাঁরা খুজে পাননি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারে যে নারীর ছবি ছাপা হয়েছে তা গত ২ বছর আগের একই উপজেলার মধুপুর নামক একটি সম্পূর্ণ পুড়ে যাবার পরে সেখানকার আহাজারিরত একজন নারীর ছবি। সংশ্লিষ্ট নারীটিকেও সনাক্ত করা হয়েছে। অপপ্রচারকারীরা ফটোশপের মাধ্যমে ওই নারীর সিঁথিতে সিঁদুর ও হাতে শাখা একে দিয়েছেন। এডভোকেট ইন্দ্রনাথ রায় জেলা ও উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও স্থানীয় সুশিল ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দাব্ িকরে বলেন, ঠাকুরগাঁও-০২ আসনের সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম ধারাবাহিকভাবে ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত হওয়া আওয়ামীলীগ জেলা কাউন্সিলে দবিরুল ইসলাম সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেনকে পরাজিত করে জেলা সভাপতি নির্বাচিত হবার পর থেকেই দলীয় আভ্যন্তরীন কলোহ ও ষড়যন্ত্র শুরু করেন রমেশ চন্দ্র সেন।
জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতা অরুনাংশু দত্ত টিটো দাবি করে বলেন, সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী তার হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এবং পরপর ৬ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যে এ ষড়যন্ত্র করেছেন। সংখ্যালঘু নির্যাতনের মত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় লিপ্ত হয়ে দেশদ্রোহীতার সামিল অপরাধ করেছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি সহ প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরে সরেজমিন রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। উপস্থিত নেতা কর্মীরা ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার দাবি করেন। রাজনৈতিক নেতারা দাবি করে বলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সংবাদপত্রের জেলা প্রতিনিধি জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের ভাই এবং একজন জামায়াত কর্মী হওয়ায় এমন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তারা এ ঘটনার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন। সাবেক মন্ত্রী রমেশ সেন টেলিফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, এরকম কোন ষড়যন্ত্রে তিনি লিপ্ত নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top