সকল মেনু

জাম্বুরা গুণেভরা

  মাগুরা প্রতিনিধি : গোলাকৃতি ফলটির নাম জাম্বুরা। কেউ বলেন, ছোলম। ফলটি টক-মিষ্টি স্বাদের। সুপরিচিত দেশি এই ফলটি মাগুরাসহ দেশের প্রায় সর্বত্রই পাওয়া যায়।  ফলের বাইরের দিকটা সবুজ এবং ভেতরে সাদা বা গোলাপী রঙের হয়। ফলটির খোসা বেশ পুরু। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলের ভেতরের রসাল কোষগুলোর ঘনত্বও বেশি। জাম্বুরা ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। এর পুষ্টিমান অনেক উন্নত। প্রতি ১০০ গ্রাম জাম্বুরার মধ্যে আছে ৩৭ কিলো ক্যালোরি, শর্করা ৯.২ গ্রাম, মুক্ত চিনি থাকে ৭ গ্রাম, সামান্য খাদ্যআঁশ, প্রোটিন ও ফ্যাট বিদ্যমান। বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণ ১২০ মি.লি. গ্রাম, ভিটামিন ৬০ গ্রাম, ভিটামিন ‘বি’ও থাকে। ফলটিতে ক্যালরি কম থাকায় ডায়াবেটিস ও স্থুলকায়দের জন্য খুবই উপকারী। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটির দামও সাধ্যের মধ্যে। জাম্বুরাতে বিদ্যমান বায়োফ্লভনয়েড বেশি থাকায় ব্রেস্ট ক্যান্সারের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন ‘সি’ বেশি থাকায় রক্তনালির সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডায়াবেটিস, জ্বর, নিদ্রাহীনতা, মুখের ভেতরে ঘা, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে, সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই অনেকে এই ফলটিকে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রক ফলও বলে। জাম্বুরাতে থাকা ফাইটোকেমিকেলস ইনসুলিন লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং এটি শরীরের ক্যালরিকে চর্বিতে রূপান্তরিত করার পরিবর্তে শক্তিতে রূপান্তর করে। জাম্বুরা শরীরের বিষাক্ত রক্ত পরিষ্কার করে শরীরকে সুস্থ রাখে। পাচন প্রক্রিয়ায় কাজ করে, কিডনি সচল রাখতে জাম্বুরার ভূমিকা অপরিসীম। এছাড়া অ্যাসিডিটি সমস্যাও দূর করে।

যে কোনো ধরনের কাটা ছেঁড়া ও ক্ষত সারাতে জাম্বুরার জুড়ি নেই। যকৃত, দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায় জাম্বুরা অতুলনীয়। তাছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় জাম্বুরা বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং বুড়িয়ে যাওয়া বিলম্বিত করে।

এর আদিভূমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ফুল আসে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পাঁকা ফল পাওয়া যায়। সাদা ফুল সুগন্ধ ছড়ায়। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছে ৩০০-৫০০ টি জাম্বুরা ধরে। একটি জাম্বুরা স্থান ভেদে ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

মাগুরার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোখলেছুর রহমান জানান, ‘মৌসুমি ফল হিসেবে জাম্বুরার সর্বত্র চাহিদা রয়েছে। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ফল মাগুরাতে ব্যাপক জন্মে। তেমন কোন পরিচর্যা করতে হয়না। বসতবাড়ির আশপাশে অনাদরে জন্মে এই গাছ। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই  বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। ’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top