সকল মেনু

মাওয়ায় যাত্রীরা সংকটে, বিপাকে লঞ্চ মালিকরা

 শরীফুল ইসলাম, মাওয়া থেকে ফিরে : পদ্মা নদীতে পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিআইডব্লিউটি কর্মকর্তারা এবার নড়েচড়ে বসেছেন। বলতে গেলে খুবই তৎপর হয়ে পড়েছেন তারা। কিন্তু যাত্রীদের সংকট কাটছে না। বিপদে আছেন লঞ্চ মালিকরাও। সরেজমিন দেখা গেছে, মাওয়া থেকে কাওড়াকান্দি নদী পারাপারের ক্ষেত্রে আরোপ করা হয়েছে বিভিন্ন ধরণের আইন কানুন। ফিটনেস ছাড়া চলতে দেয়া হচ্ছে না কোন লঞ্চ। অতিরিক্ত যাত্রী নিলে আদায় করা হচ্ছে জরিমানা। তবে এ সব নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে যাত্রীরা পড়েছেন ভীষণ সংকটে, আর লঞ্চ মালিকরা পড়েছেন বিপাকে। মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে রয়েছে মোট ৮৭টি লঞ্চ, যা দিয়ে প্রতিদিন নদী পারাপার হতেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এখন সেই চিত্র বদলে গেছে। বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা লঞ্চের ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ওঠাতে দিচ্ছেন না গত কদিন ধরে। এ প্রসঙ্গে লঞ্চ মালিক মোশারেফ হোসেন নসু হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘আমরা বিআইডব্লিউটি কর্মকর্তারাদের সকল নির্দেশনা পালন করতে রাজি আছি। কিন্তু  আমাদের দিকটাও তাদের ভেবে দেখতে হবে। একটি লঞ্চে একশর বেশি যাত্রী উঠতে দেওয়া হচ্ছেনা, যা দিয়ে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য।’

তিনি বলেন, একশ যাত্রী নিয়ে ভাড়া পাচ্ছি তিন হাজার তিনশ টাকা। এর মধ্যে ফুয়েল খরচ বারশ টাকা। স্টাফ খরচ আছে আরো এক হাজার টাকা। তাহলে আমরা ব্যবসা করব কি? আবার আবহাওয়া একটু খারাপ হলেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে লঞ্চ চলাচল। এর ফলে লঞ্চ মালিকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে ভয়ানকভাবে।

এছাড়া নতুন করে আমাদের লঞ্চের ফিটনেস পরীক্ষা করা হচ্ছে। অনেকগুলো লঞ্চের ফিটনেস বাতিলের কথা বলা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন করতে চাই কর্মকর্তাদের কাছে, ‘এখন কেন বলা হচ্ছে আমাদের বেশীরভাগ লঞ্চেরই ফিটনেস নেই। যখন আপনারা এ সব লঞ্চের অনুমতি দিয়েছিলেন, তখন কি আপনারা ফিটনেস চেক করেননি?’

এ সব কারনে বর্তমানে মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে লঞ্চ চলাচল করছে খুবিই সীমিত সংখ্যক লঞ্চ। যার ফলে এই রুটের যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রতিদিন লক্ষাধিক যাত্রী পারাপারের এই ঘাট দিয়ে লঞ্চযোগে পার হতে পারছেন ২০ থেকে ২৫ হাজার যাত্রী। বাকি যাত্রীরা শরণাপন্ন হচ্ছেন ফেরির।

যাত্রী আনিসুল জানান, ফেরিতে পার হতে অনেক সময় লাগে। সেই তুলনায় লঞ্চে সময় লাগে অনেক কম। কিন্তু লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী উঠতে না দেওয়ার ফলে ফেরীতে পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছি। তবে ফেরীতে উঠতে ইজারাদদেরকে দিতে হচ্ছে জনপ্রতি ১০ টাকা করে। ভাড়া দেওয়া লাগছে ২৫ টাকা। সরকারি ঘাটে ইজারা দিচ্ছি আবার ভাড়াও দিচ্ছি-বিষয়টা ঠিক বুঝলাম না।

তিনি আরও বলেন, দেখি বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের তোড়জোড় কতদিন থাকে। আজ লঞ্চ ডুবছে, মানুষ মরছে, তাই তাদের টনক নড়েছে। কদিন পরে যখন সবাই লঞ্চ ডুবির ঘটনাও ভুলে যাবে, তখন তাদের তৎপরতাও থেমে যাবে। যদি তাই হয় তাহলে বুঝবো তারা জনগণের সুরক্ষার কথা চিন্তা করেন না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top