সকল মেনু

মুন্সিগঞ্জে ডাক্তার দেখাতে এসে শিশুর মৃত্যু

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি : একটি মর্মান্তিক করুন মৃত্যু যা দেখলে সকলের  চোখের পানি ঝরঝর করে পড়বে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে মুন্সিগঞ্জে। মা বিউটি বেগম অধীর আগ্রহে তার অসুস্থ শিশুটিকে নিয়ে অ+ডায়েগানষ্টিক সেন্টারে ডা. এম.এ মতিনের চেম্বারের সামনে অপেক্ষা। দুপুর দুইটায় সিরিয়াল লেখান মা বিউটি বেগম। সাড়ে তিনটায় ডাক্তার এম.এ মতিনের আগমন ঘটে চেম্বারে। তার চেম্বারের সামনেই এমন একটি রুগী দেখেও যেন দেখেননি তিনি। এই চেম্বারে রানা নামের কর্মচারী সিরিয়াল লিখেন। তাকে ২০টাকা করে অতিরিক্ত দিলে সিরিয়াল ভেঙ্গে রুগী প্রবেশ করার সুযোগ দেন। দু:খের বিষয় হলেও সত্য বিউটি বেগম রানাকে অতিরিক্ত টাকা দিতে পারে নাই। তাই তার শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেও ডাক্তারের দেখা মেলেনি। যখন দেখা মিললো তখন শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। ডাক্তার দেখে বললেন শিশুটি আর বেঁচে নেই। মায়ের বুক ফাটা কান্না কেউ থামাতে পারছিল না। ডাক্তারের চেম্বারের সামনে এ ধরনের একটা মৃত্যু হলো কিন্তু ডাক্তার নির্দোষ এটা কেউ মানতে নারাজ। এখানে ডাক্তারের কি কোন ভূমিকাই নাই। শুধুকি সিরিয়াল লিখে ঐ ছেলেটিরই দোষ। এক দিকে শিশুহারা মায়ের আর্তনাদ অপরদিকে ডাক্তার ও ডায়োগনষ্টিক সেন্টার রক্ষার তদবিরে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে স্থানীয় কিছু হোমড়া চোমড়া। ভিতরে সাংবাদিকরাও ডাক্তারের কাছে প্রবেশ করার সুযোগ পেতে বেগ পেতে হয়েছে। শিশুহারা মাকে বুঝানো হলো ডাক্তারতো এখানেই আছে তাকে পাওয়া যাবে আগে শিশুটিকে মাটি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এভাবে একটি শিশুর মৃত্যু হতে পারে না এর সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত। অবশেষে শিশু হারা মা চেম্বারের টেবিলে একটি লাথি মেরে শিশুটিকে আদর করে কোলে তুলে নিয়ে গেছেন। টেবিলের উপর যখন মৃত্যু শিশুটি ঘুমাচ্ছিল। তখন মা বার বার শিশুকে আদর করছিল। কি মায়াবি দৃশ্য দেখা যায় না। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এম এ মতিন জানান, স্পাইনাল মাসকুলার এটট্রাই রোগে মারা গেছে শিশুটি। এই রোগে আক্রান্ত হলে মায়ের গর্ভেই মারা যেতে পারে অথবা ২বছরের মধ্যে মারা যায়। আদরের শিশু সন্তানকে কোলে করে রোগীর দীর্ঘ লাইনে দীর্ঘ ৪ ঘন্টা ধরে ডাক্তারের সাক্ষাতের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মা বিউটি বেগম। এ অবস্থায় শিশুর মৃত্যু হয়। নিহত রবিউল হাসান জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মামুন হোসেনের ছেলে।  শিশু সন্তানকে হারিয়ে বুক ফাঁটা কান্না আর আহাজারী করছেন বাবা মামুন হোসেন ও মা বিউটি বেগম। শিশুর মা-বাবার অভিযোগ- শনিবার দুপুর ২ টায় ডাক্তার এম এ মতিনের চেম্বারে আসেন। ডাক্তারের সাক্ষাত পেতে রোগীর সিরিয়ালে সন্তানের নাম লেখান। সন্তানের শারিরিক অবস্থা নাজুক হয়ে উঠলে বার বারই সিরিয়াল ভেঙ্গে ডাক্তারের সাক্ষাত পাওয়ার আকুলতা ব্যক্ত করলেও চেম্বারের সামনে সিরিয়াল বসান যিনি-তার মন গলেনি। ঠান্ডা জনিত কারনে অসুস্থ্য হয়েছিল শিশু রবিউল। বাবা মামুন আফসোস করে বললেন, আমার ছেলেকে নিয়া আসাটাই কি আমার অপরাধ? এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ এম এ মতিন বলেন- আমি চেম্বারে রোগী দেখায় ব্যস্ত ছিলাম। বাইরে কার শারিরিক অবস্থা বেশী খারাপ-তা আমি জানার কথা নয়। রাত ৭ টার দিকে রোগীর ভীড় ঠেলে শিশুকে নিয়ে মা যখন চেম্বারে ঢুকেন তখন শিশুটি আর বেঁচে নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top