সকল মেনু

হুন্ডিরোধে জনমত গড়তে সহযোগিতা চাইলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী

চলমান ডলার সংকটের অন্যতম কারণ হুন্ডি উল্লেখ করে হুন্ডিরোধে জনমত গড়তে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাইলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।

শনিবার (৯ মার্চ) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ সহযোগিতা চান। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। এ নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবেও প্রশংসিত হয়েছে। শেখ হাসিনা শুধু স্বপ্ন দেখান না, স্বপ্ন বাস্তবায়নেও নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের চিত্রই তার প্রমাণ।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তা-চেতনা নিয়েই দেশ চালাচ্ছেন। বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের বিষয়ে তিনি আগে থেকেই বলে আসছিলেন, আপনারা উৎপাদন বাড়ান, সাশ্রয়ী হন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে গত দেড় দশকে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক অগ্রগতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু টানেল তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে সাড়ে ৮ লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে যাদের জমি ছিল, ঘর ছিল না, সেরকম ১১০টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিগত ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্রভাগে থেকে সামাল দিয়েছেন। অনেক উন্নত দেশের আগেই বাংলাদেশ বিনামূল্যে কোভিড টিকা পেয়েছে। এখন চতুর্থ ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। যা অনেক উন্নত দেশেও সম্ভব হয়নি। এখন থেকে সুদক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিগত নির্বাচনের ইশতেহারে এটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে চারটি স্তরে মেধা ও প্রযুক্তিনির্ভর একটি স্মার্ট বাংলাদেশ তথা স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট রাষ্ট্র এবং স্মার্ট সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা রয়েছে ইশতেহারে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশ অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বিগত সময়গুলোতে দেশের অভ্যন্তরে বাদেও আন্তর্জাতিকভাবে চ্যালেঞ্জ এসেছিল। এসব চ্যালেঞ্জ অনেক দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়েছে। অনেক বন্ধুর পথ আমরা একত্রে অতিক্রম করেছি। সামনেও অনেক বন্ধুর পথ আসতে পারে। এখন আমরা সবাই একটি গ্লোবাল ভিলেজের মধ্যে বাস করছি। পুরো বিশ্বই সেই ভিলেজের অংশ। সবাই একে অনেকের তথ্য পেয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা দায়িত্ব দিয়েছেন। তার সঙ্গে সাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাবো। তিনি নতুন দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে সাংবাদিকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ চান।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মিস ইনফরমেশন যাতে না ছড়ায়। মিস ইনফরমেশন অনেক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। অতীতে তার অনেক প্রমাণ আমরা দেখেছি।

ডলার সংকট থেকে উত্তোরণ, হুন্ডিরোধ, বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে সুষ্ঠু প্রণোদনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হুন্ডির বিরুদ্ধে সরকার সজাগ রয়েছে। হুন্ডির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন সাংবাদিকরা। তাদের লেখার মাধ্যমে হুন্ডিকে নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে জনমত তৈরি করতে পারে। এজন্য হুন্ডির বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের অনেক বেশি লিখতে হবে।

তিনি বলেন, ডলার সংকট কাটাতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিয়োগ ও সঞ্চয়কে আইনী কাটামোতে আনার জন্য বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে অফশোর ব্যাংকিং আইন পাশ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিদেশে দেশের বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগকে আইনী কাঠামোয় আনা হয়েছে। এখন অফশোর ব্যাংকে যে কেউ সঞ্চয়ী হিসাবও খুলতে পারবেন। এজন্য তারা মুনাফাও প্রাপ্য হবেন।

সাবেক এক মন্ত্রীর যুক্তরাজ্যে তিন হাজার কোটি টাকার সম্পদ থাকা এবং এসব সম্পদ ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, দেশ থেকে পাচার হওয়া সব অর্থই ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেসব স্থানে পাচার হওয়া অর্থ জমা রাখা হয়েছে এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে রয়েছে, সেইসব অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এরই মধ্যে কয়েকটি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top