সকল মেনু

যে দোয়া পাঠ করলে মানুষের অভাব দূর হয়!

হটনিউজ ডেস্ক:

মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তাঁর সুন্দর সুন্দর নামের জিকির বা আমল করার মাধ্যমে এই অভাব দূর করার দোয়া করার কথা বলেছেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে আলাদা আলাদাভাবে এ নামের জিকিরের আমল ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে (اَلرَّافِعُ) ‘আর-রাফিয়ু’ একটি। যার অর্থ হলো- ‘মুমিনদের মর্যাদা উঁচুকারী।’

সংক্ষেপে এ গুণবাচক নাম (اَلرَّافِعُ) ‘আর-রাফিয়ু’-এর জিকিরের আমল ও ফজিলত তুলে ধরা হলো-
উচ্চারণ : ‘আর-রাফিয়ু’
অর্থ : ‘মুমিনদের মর্যাদা উঁচুকারী।’

ফজিলত
যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার এ পবিত্র গুণবাচক নামের জিকির মধ্যরাত বা রাতের দ্বিপ্রহরের পর ১০০ বার পাঠ করে, মহান আল্লাহ তাকে তার সৃষ্টির মধ্যে মনোনীত ও অর্থশালী করেন এবং অন্যের মুক্ষাপেক্ষীতা থেকে মুক্ত রাখেন।
যে ব্যক্তি অত্যাচারীর জুলুম অত্যাচার থেকে এ পবিত্র গুণবাচক (اَلرَّافِعُ) ‘আর-রাফিয়ু’ নামটি প্রতিদিন ১০০বার পাঠ করে।
অন্যত্র এসেছে, ‘যে ব্যক্তি এ পবিত্র গুণবাচক (اَلرَّافِعُ) ‘আর-রাফিয়ু’ নামের জিকির প্রতিদিন ঘুমানোর সময় ১০০ বার করবে, ঐ ব্যক্তি সকল বিপদাপদ থেকে হিফাজত থাকবে।

যে দোয়া পাঠ করলে মানুষের অভাব দূর হয়-

বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত মাকহুল (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এ বাক্যগুলো সাতবার বলবে আল্লাহতায়ালা তার সত্তরটি অভাব দূর করবেন। (তন্মধ্যে) সবচেয়ে হাল্কা বিপদ হলো (মানুষের) অভাব। দোয়াটি হলো-
لاَ حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ ، وَلا مَلْجَأَ مِنَ اللهِ إِلاَّ إلَيْهِ
উচ্চারণ : লা হাউলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ- লা মালজায়া মিনাল্লাহি ইল্লা ইলাইহি।
অর্থ : আল্লাহর সাহায্য ছাড়া গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং নেক আমলে মশগুল হওয়া সম্ভব না। আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তার কাছেই আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে।
টাঁকা পয়সার সমস্যা কাটিয়ে উঠার, দারিদ্র্যতা-অভাব দূর হওয়ার পরীক্ষিত আমল!
নিচের আমলটি অভাব দূর হওয়ার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী ও পরীক্ষিত! অভাব দূর হওয়ার জন্য সূর্য উঠার আগে একটু কষ্ট করলেই ফযরের নামাযের

আগে বা পরে আপনি নিচের আমলটি করতে পারেন-

একজন সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু আরয করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া আমার প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে। (অর্থাৎ আমি চরমভাবে অভাবগ্রস্থ) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন: “তোমার কি ঐ তাসবীহ স্মরণ নেই, যে তাসবীহ ফেরেশতা এবং মাখলুকের, যার বরকতে রুজি প্রদান করা হয়। যখন সুবহে সাদিক উদিত (শুরু) হয় তখন এ তাসবীহ ১০০ বার পাঠ কর:
سُبْحَانَ اللّهِ وَ بِحَمْدِهِ ، سُبْحَانَ اللّهِالْعَلِيِّ الْعَظِيمُ وَ بِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ
উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম, ওয়া বিহামদিহি আস্তাগফিরুল্লাহ।
অর্থঃ মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য; মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি সমুচ্চ, মহান; এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। দান সাদকার গুরুত্ব। কোথায় দান করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়?

যদি ১০০ বার পড়, তাহলে দুনিয়া তোমার নিকট অপমানিত হয়ে আসবে। (অর্থাৎ তুমি সহজেই স্বচ্ছলতা লাভ করবে।) ঐ সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু চলে গেলেন। কিছুদিন পর পুনরায় হাজির হয়ে, আরয করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! দুনিয়া আমার নিকট এত বেশি আসছে, আমি হতবাক! কোথায় উঠাব, কোথায় রাখব! (উৎস: আল খাছায়িছুল কুবরা, ২য় খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)আ’লা হযরত রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: এ তাসবীহ যথাসম্ভব সুবহে সাদিক (শুরু) হওয়ার সাথে সাথে যেন পাঠ করা হয় নতুবা সকালের আগে, জামাআত যদি আরম্ভ হয়ে যায় তবে জামাআতে শরীক হয়ে পরে সংখ্যা পূর্ণ করুন এবং যেদিন নামাযের পূর্বেও পাঠ করতে না পারেন, তবে সূর্য উদিত হওয়ার আগেও পাঠ করতে পারবেন। (উৎস: মলফুজাতে আ’লা হযরত, ১২৮ পৃষ্ঠা)

উপরোক্ত তাসবীহ পড়ার সাথে সাথে নিচের আয়াত শরীফও সকাল সন্ধ্যায় তিনবার পড়বেন-
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ ۚ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ ۚ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا
উচ্চারণঃ ওয়া মাই-ইয়াত্তাকিল্লাহা ইয়াজ আল্লাহু মাখরাজা। ওয়া ইয়ারযুকহু মিন হাইসু লা ইয়াহ তাসিব।ওয়া মান ইয়া তা ওয়াক্কাল আলাল্লাহি ফাহু ওয়া হাসবুহু ইন্নাল্লাহা বালিগু আমরিহি কাদযায়াল্লাহু লিকুল্লি শাইয়িন কাদরা।
অর্থঃ আর যে আল্লাহ্‌কে ভয় করে, আল্লাহ্‌ তার জন্য মুক্তির পথ বের করে দেবেন; এবং তাকে ওই স্থান থেকে জীবিকা দেবেন, যেখানে তার কল্পনাও থাকে না এবং যে আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে, তবে তিনি তার জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তার কাজ পরিপূর্ণকারী। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ প্রত্যেক বস্তুর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখেছেন। (উৎস: সূরা-ত্বালাক, আয়াতঃ ১, ২)
নিচের দোয়াটি পবিত্র কাবা শরীফের দরজার উপরের গিলাফের উপর লিখা আছে। একটু খেয়াল করলে গিলাফের উপরে দোয়াটি আপনি বুঝতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন মসজিদে, বিশেষ করে মানুষ ইন্তেকাল করলে তার খাটিয়ার উপরেও এ গিলাফটি ব্যবহার করা হয়। ইচ্ছে করলে আপনি তাতেও খেয়াল করে দেখতে পারেন।

এই দোয়ার ফযিলতঃ ইমামে আহলে সুন্নাত, ওস্তাযুল মুহাদ্দেসীন, আল্লামা হাশেমী হুযূর কেবলা বলেছেন, ‘কেউ যদি এই দোয়া নিয়মিত পড়ে, তবে আসমান হতে বৃষ্টির ফোটার মত তার উপর রিযিক বর্ষিত হবে।’

কেউ যদি এই দোয়া প্রতিদিন ১০০ বার পড়ে তবে তা দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে তাকে নিরাপত্তা দিবে, সম্পদ অর্জনের মাধ্যম হবে এবং কবরের পরীক্ষা থেকে সে মুক্ত থাকবে। (উৎস: তারিখে বাগদাদ, খন্ডঃ ১২, পৃষ্ঠাঃ ৩৫৮, আল হিলিয়া, খন্ডঃ ৮, পৃষ্ঠাঃ ৩০৯)
দোয়াটিঃ لا اله الا الله الملكال حق المبين محمد رسول الله الصادق الوعد الأمين
দোয়াটির উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল মালিকুল হাক্কুল মুবিন, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ, আস সাদিকুল ওয়াদিল আমিন।
দোয়াটির অর্থঃ সর্ব শক্তিমান আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের কেউ যোগ্য নয়, শুধুমাত্র তিনিই প্রকৃত মালিক। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রেরিত রাসূল, যিনি অঙ্গীকার রক্ষা করেন এবং ‍যিনি বিশ্বস্ত।

সর্বদা ইস্তেগফার (আল্লাহ পাকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) করলে ও দরুদ শরীফ পড়লে যাবতীয় সমস্যা সমাধান হয়, অভাব দূর হয়! হাদিস শরীফে রয়েছে,
হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা) করবে, (অর্থাৎ সর্বদা আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি.. শেষ পর্যন্ত পড়বে) আল্লাহ তার সকল সংকট থেকে উদ্ধারের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা দূর করে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস হতে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (উৎস: আবু দাউদ শরীফ: ১৫২০, ইবনে মাজা শরীফ:৩৮১৯)
হযরত সায়্যিদুনা উবাই বিন কা’ব (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) আরজ করলেন যে, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ﷺ আমি (সমস্ত বাড়তি ওয়াজিফা ছেড়ে দেব আর) নিজের পরিপূর্ণ সময় দরূদ শরীফ পাঠ করাতে ব্যয় করব। তখন রাসূল ﷺ ইরশাদ করলেন: “তা তোমার পেরেশানী সমূহ দূর করার জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।” [উৎস: তিরমিযী,৪র্থ খন্ড,২০৭ পৃষ্ঠা,হাদিস- ২৪৬৫]
দানেও অভাব দূর হয়! বলতে পারেন, “আমি অভাবী, কিভাবে দান করবো?” যতটুকু আছে তা থেকে দান করুন সুখে ও দুঃখে। আল্লাহ পাকের ঘোষণাঃ
ঐসব লোক, যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে সুখে ও দুঃখে এবং ক্রোধ-সংবরণকারীরা, মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শনকারীরা এবং সংব্যক্তিবর্গ আল্লাহর প্রিয়। (উৎস: সূরা আল ইমরান, আয়াত: ১৩৪)
মাতা-পিতা, নিজ পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, এতিম ও অসহায়দেরকে দান করার জন্য আল্লাহ পাক নিজেই বলেছেন:
আল্লাহর প্রেমে আপন প্রিয় সম্পদ দান করবে আত্মীয়-স্বজন, এতিমগণ, মিসকীনগণ, মুসাফির ও সাহায্য প্রার্থীদেরকে আর গর্দানসমূহ মুক্তকরণে…..(উৎস: সূরা বাকারা, ১৭৭ নং আয়াতের অংশ বিশেষ)
সুখে ও দুঃখে মাতা-পিতার জন্য, নিজ পরিবারের জন্য, আত্নীয় স্বজনের জন্য, গরীব ও অসহায়দের জন্য, সর্বোপরি আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় করলে আল্লাহ পাকও আমাদের জন্য ব্যয় করবেন। হাদিস শরীফে রয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, হে, আদম সন্তান! ব্যয় কর, আমিও তোমার উপর ব্যয় করবো। (উৎস: বুখারী শরীফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস: ৪৯৬১)

দানকারীর সম্পদ বৃদ্ধির জন্য ফিরিশতারা প্রতিদিন দো’আ করেন! হাদিস শরীফে রয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যহ মানুষের যখন ভোর হয়, তখন দু-জন ফিরিশতা অবতরণ করেন। অতঃপর তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দানকারীরকে আরো বেশি দিন (অর্থাৎ দানকারীর সম্পদ আরো বৃদ্ধি করুন)। অপরজন বলেন, কৃপনের ধন ধ্বংস করুন। (উৎস: মুসলিম শরীফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস: ২২০৮)

একটা কথা বিশেষভাবে স্মরণ রাখতে হবে, দো’আ কবূল হওয়ার পূর্বশর্ত হল হালাল উপার্জন। হালাল উপার্জন ছাড়া দো’আ কবূল হওয়ার আশা করা বোকামি। হাদিস শরীফে রয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘সে আকাশের দিকে দু’হাত তুলে বলে, হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোষাক-পরিচ্ছদ হারাম এবং তার শরীর গঠিত হয়েছে হারামে। অতএব, তার দু’আ কিভাবে কবুল করা হবে?’ (উৎস: মুসলিম শরীফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস: ২২১৮)
আল্লাহ পাক আমাদরকে হারাম উপার্জন থেকে রক্ষা করুক। অভাব দূর হওয়া ও রিযিক বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত উপরোক্ত আমলগুলো করার আল্লাহ পাক আমাদের তাওফিক দান করুক।

আল্লাহ পাক আমাদেরকে সৎকাজ করার প্রবল আগ্রহ দান করুক। আমিন।
রিজিক বৃদ্ধির শ্রেষ্ঠ ১০ আমল সবাই চায় তার রিজিক বেড়ে যাক, জীবনে প্রাচুর্য আসুক। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির ১০টি আমল বর্ণনা করা হয়েছে। সেগুলো হলো—

১) তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল মেনে চলা
খোদাভীতি ও আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা স্থাপন রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তার উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ২-৩)

২)পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা
আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করলে ইহকালেই সুফল পাওয়া যায়। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কামনা করে যে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘ করা হোক, সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৫; মুসলিম, হাদিস : ৪৬৩৯)

৩)তওবা ও ইস্তিগফার বেশি বেশি পাঠ করা
মুমিনের জীবনে তওবা ও ইস্তিগফারের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। অধিক পরিমাণে ইস্তিগফার এবং বেশি বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া রিজিক বৃদ্ধির কারণ। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস : ৭৬৭৭)

৪)আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা
দানে ধন বাড়ে—এটা সর্বজনবিদিত। এ বিষয়ে কোরআনের বক্তব্য এমন—বলে দাও, ‘নিশ্চয়ই আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো, তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা।’ (সুরা : সাবা, আয়াত : ৩৯)

৫)একাধিক হজ-ওমরাহ করা
একের পর এক হজ-ওমরাহ পালনে রিজিক বাড়ে। ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা একের পর এক হজ ও ওমরাহ করতে থাকো, কেননা তা অভাব ও গুনাহ দূর করে দেয়, যেভাবে কামারের হাপর লোহা, সোনা ও রুপার ময়লা দূর করে দেয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৮১৫)

৬)অসহায়ের প্রতি ভালো আচরণ
বিপদ-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো সামাজিক ইবাদত। মোসআব বিন সাদ (রা.) যুদ্ধজয়ের পর মনে মনে কল্পনা করলেন, তিনি বোধ হয় তাঁর বীরত্ব ও শৌর্যবীর্যের কারণে অন্যের চেয়ে বেশি মর্যাদাবান। এমন প্রেক্ষাপটে মহানবী (সা.) তাকে বলেন, তোমাদের মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা হয়। (বুখারি, হাদিস : ২৮৯৬)

৭)ইবাদতের জন্য নিজেকে ফারেগ করে নেওয়া
আল্লাহর ইবাদতের জন্য নিজেকে ফারেগ করার মাধ্যমে অভাব দূর হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র্য ঘুচিয়ে দেব। আর যদি তা না করো, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব দূর করব না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৬৫৪)

৮)আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করা
আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে হিজরত তথা স্বদেশ ত্যাগ করলে এর মাধ্যমেও রিজিকে প্রশস্ততা ঘটে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করবে, সে জমিনে বহু আশ্রয়ের জায়গা ও সচ্ছলতা পাবে। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উদ্দেশে মুহাজির হয়ে নিজ ঘর থেকে বের হয় তারপর তাকে মৃত্যু পেয়ে বসে, তাহলে তার প্রতিদান আল্লাহর ওপর অবধারিত হয়। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০০)

৯) সময়মত বিয়ে করা
বিয়ের মাধ্যমে জীবনে বরকত ও প্রাচুর্য নেমে আসে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিয়ে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৩২)

১০) আল্লাহর কাছে দোয়া করা
আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ বান্দার হাত ফিরিয়ে দেন না। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৬০)

পরিশেষে…
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াকিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না।
আমাদের অনেকেই মাগরিবের পরে সুরা ওয়াকিয়াহ পড়েন। কেননা একটি হাদিসে এসেছে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেছিলেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াকিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) তার মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন। (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস নং-২৪৯৮)
তাছাড়া এ সুরা শারীরিক সুস্থতা রক্ষা ও অসুস্থতা দূরীকরণেও উপকারী।

মুসলিম উম্মাহর উচিত আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নামের জিকির করে দুনিয়ার মুখাপেক্ষিতা, অত্যাচার-জুলুম-নিপীড়ন থেকে মুক্ত থেকে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হওয়ার প্রস্তুতি নেয়া। আল্লাহ তাআলা সবাইকে নিয়মিত এ গুণবাচক নামের জিকির ও আমল করার তাওফিক দান করুন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top