সকল মেনু

আহমদ শফীর মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি ৩১৩ আলেমের

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমির শাহ আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য ২ দিন ধরে চরম নির্যাতন ও মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়েছে বলে দাবি করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন দেশের শীর্ষ ৩১৩ আলেম-পীর মাশায়েখ।

আজ শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) মহিব্বিনে আহমদ শফি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রচার সচিব মাওলানা মুফতি আব্দুস ছাত্তারের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেশের এই শীর্ষ আলেমরা এ দাবি জাানান।

বিবৃতিতে তারা দাবি করেন, ‌‘হাটহাজারী মাদ্রাসায় আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস লুটতরাজের মাধ্যমে আল্লামা আহমদ শফির রুম ভাংচুর মাদ্রাসার মুহাদ্দিসদের রুম ভাংচুর ও তাদেরকে শারীরিকভাবে মারধরের মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা পুরো কওমি অঙ্গনকে কুলষিত করেছে। জামাত শিবিরের ক্যাডার ও মানহাজী ও চরমপন্থী এ চক্রান্তের সাথে জড়িত। মূলত হাটাহাজারী মাদ্রাসার ক্ষমতা দখল, কওমি অঙ্গনকে দখল ও রজনৈতিকভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্ল্যাটফরম তৈরি করতে এবং কওমি মাদ্রাসার লক্ষ লক্ষ ছাত্র-তরুণ প্রজন্ম সরকার বিরোধী ইস্যু সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের পতন তরান্বিত করতে বিরোধী রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শাহ আহমদ শফীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়াই তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।’

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আজ যখন আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পরিবার হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে, যখন বিচারের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হলো, তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি এক শ্রেণীর ক্ষমতা লোভী ও রাজনৈতিক এজেন্ডা বস্তবায়ন কারিরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিকে অস্বীকার করে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর লাশ কবর থেকে তুলতে হবে বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। সাথে সাথে সরকারের কাছে অনতিবিলম্বে শায়খুল ইসলামের খুনের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি এবং দোষীদেরকে গ্রেপ্তার পূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।’

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘গত বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) হাটহাজারী মাদ্রাসায় জুনাইদ বাবুনগরী তার আপন মামাকে ও হাটহাজারী মাদ্রাসার কিছু নিরহ ওস্তাদদের সাথে নিয়ে যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার মাধ্যমে তিনি একটি কথাই বারবার তুলে ধরেছেন, তা হলো- আল্লামা শাহ আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। যদি স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তবে তদন্ত হলে সমস্য কোথায়? স্বাভাবিক মৃত্যু হলে তদন্তের ফলাফলে তাইতো বেরিয়ে আসবে। তাহলে তিনি কেন মামলা প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন এবং প্রত্যাহার করা না হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে হুমকি দিচ্ছেন?’

‘এতে করে বোঝা যায়, ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। যদি তার দাবি সত্য হয়ে থাকে তাহলে তাঁর উচিত ছিল এ মামলা ও তদন্ত সব কিছুতে সাধুবাদ জানানো। তা না করে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে হুমকি-ধামকি দিয়ে এটাই প্রমাণ করলেন যে, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু অস্বাভাবিক হয়েছে। হাটহাজারী মাদ্রাসার কোনো ওস্তাদ মামলায় অভিযুক্ত না হলেও সংবাদ সম্মেলনে হাটহাজারী মাদ্রাসার ওস্তাদদেরকে উপস্থিত রেখে মূলত নিরীহ আলেম ওলামাদেরকে বিতর্কে জড়ানোর চেষ্টা করছেন এবং পাবলিকের দৃষ্টিভঙ্গিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার পায়তারা করছেন।’- বিবৃতিতে বলেন আলেমরা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘৩৬ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে যে মামলা হয়েছে তারা সবাই আল্লামা শাহ আহমদ শফীর হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে তারা আজ বিভিন্ন আলেমদের নামে নিজেদের বিবৃতি দিচ্ছে মিডিয়াতে। যারা আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজায় শরিক হয়েছিলেন তারা সবাই আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে হত্যাকাণ্ডের নিশান প্রত্যক্ষ করেছে এবং হযরতের পরিবার থেকে একাধিকবার বক্তব্য ও সাংবাদিক সম্মেলন করে বিচারের দাবি করা হয়েছে। একজন ভিকটিম হিসাবে হত্যার বিচার দাবি করা তার পরিবারের জন্য আপরাধ? সন্ত্রাসীরা হযরতের পরিবার এবং মাওলানা আনাছ মাদানীকে আজও হত্যার হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকির ভয়ে তিনি সচরাচর চলাফেরা করতে পারছে না। আমরা এই পরিস্থিতির জন্য আইন শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কমনা করছি।’

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন মুফতি ওসমান সাহেব (ঢাকা), মুফতি নুরুল ইসলাম (ঢাকা), আব্দুল কাদের, মুফতি সাইফুল ইসলাম (ঢাকা), মুফতি খেফায়ত উল্লাহ (ঢাকা), মুস্তাফা কামাল (সিলেট), মুফতি সিরাজুল ইসলাম (চট্টগ্রাম), মুফতি নোমান কাসেমী (নোয়াখালী), মাহমুদুল হাসান জিহাদী (চট্টগ্রাম), রহিম উল্লাহ নোমানী (কুমিল্লা), আব্দুল হক (চাঁদপুর), আব্দুস সাত্তার জিহাদী (ঢাকা), মুজাহেরুল হক (জামালপুর), সাইফুদ্দিন কাসেমী (চট্টগ্রাম), আমিনুল ইসলাম (বাগেরহাট), নাছির উদ্দিন আফেন্দি (পাবনা), মুফতি আহমদ আলী (কুমিল্লা), হাফেজ জাবের আহমদ (নরসিংদী), মুফতি ফয়জুল করিম (সিলেটি), শহিদুল্লাহ (যশোর), ইয়াকুব আহমেদ (কক্সবাজার), মুবিনুল হক, এনামুল হক, সুলাইমান, সাদেক হোসাইন, ইকবাল হোসেন, সাকের হোসেন জালালী, নজরুল ইসলাম রহিমী, আব্দুল ওয়াহাব জাফরী নওগা, মুফতি রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top