সকল মেনু

কাবা শরিফকে “ভাস্কর্য” বলা মাওলানা জিয়াউল হাসান অবশেষে ক্ষমা চাইলেন

হটনিইজ ডেস্ক:

কাবা শরিফকে “ভাস্কর্য” বলে নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান।

বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি ক্ষমা চেয়ে এ কথা বলেন।

তিনি জানান, “মুখ ফসকে কথাটা আমার বের হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এটিকে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়।”

মাওলানা জিয়াউল হাসানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি তুলে ধরা হল-
একজন প্রেমিক তার প্রেমাস্পদের বাড়ির চতুর্দিকে একঝলক দৃষ্টি পাওয়ার জন্য যেভাবে ঘোরে ঠিক তেমনি পবিত্র কাবা শরিফের চতুর্দিকে আল্লাহ তা’লার সুদৃষ্টিলাভের আশায় মুসলিমরা তাওয়াফ করে থাকেন। তওয়াফের আগে ও পরে সুযোগ পেলে তারা কালো পাথরকে চুম্বন করে থাকেন। কালো পাথর বাহ্যিকভাবে নিছক একটি পাথর। কিন্তু বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই কালো পাথরকে চুমু দিয়েছিলেন বলে আমরাও এই কালো পাথরকে চুমু দিতে উদগ্রীব থাকি। হজরত ওমর (রা.) বলেছিলেন, আমি জানি তুমি নিছক একটি পাথর, আমি কখনই তোমাকে চুম্বন করতাম না, যদি আমি রসুল (সা.)-কে না দেখতাম তোমাকে চুম্বন দিতে।

এই বিষয়টাকে তুলে ধরতে গিয়ে আমি চার বছর আগে একটি টেলিভিশনের টকশোতে মুখ ফসকে কাবা শরিফকে ভাস্কর্য বলে ফেলে ছিলাম। বলার উদ্দেশ্য ছিল ইট-পাথরের তৈরি হলেও এগুলো আল্লাহ এবং রসুল (সা.) কর্তৃক স্বীকৃত বিধায় আমাদের নিকট পবিত্র ও সম্মানিত। আল্লাহ এবং তার রসুল (সা.) কর্তৃক স্বীকৃত না হলে সোনায় মোড়ানো বা হাজার কোটি টাকার হীরা মুসলমানদের দৃষ্টিতে সম্মানিতও নয়, পবিত্রও নয়।
চার বছর আগে আমার মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়া কথাকে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সমস্ত অপচেষ্টাকে তীব্র নিন্দা জানাই এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানাই। চার বছর পর আমার মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়া শব্দ বা বাক্যকে নিয়ে একটি কুচক্রী মহল এখন কেন বিষোদগার করার চেষ্টা করছে তা এ দেশের সুশীল সমাজ বা নাগরিকরা ভালোই বোঝেন। ইসলাম ধর্মে মূর্তি পূজার যেমন স্থান নেই, তেমনি পাথর পূজারও কোনও স্থান নেই। এটি আমরা সকল মুসলমান মাত্রই জানি।

এরপরও হাজরে আসওয়াদ পাথর হওয়া সত্ত্বেও আমাদের কাছে এটি বিশেষ সম্মানের স্থান দখল করে আছে। এর কারণ কী? কারণ হল আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এটাকে চুমু খেয়েছেন ও সম্মান করেছেন। তথাপি মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে আমার কথায় যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন সেজন্য আন্তরিকভাবে আমি দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

এর আগে বুধবার ইসলাম ধর্ম নিয়ে অপব্যাখ্যার অভিযোগে সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এক সাংবাদিক। বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আরিফুর রহমান নামের এক সাংবাদিক মামলাটি দায়ের করেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. শামীম জানান, বৃহস্পতিবার বাদী আদালতে জবানবন্দি দিলে বিচারক পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ওই টক শোতে আসামি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান বলেন, “আমাদের কাবা শরিফ যেটা বায়তুল্লাহ শরিফ, সেটাও কিন্তু একটা স্ট্যাচু। আমরা সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। তারপর আমরা শয়তানকে যে পাথর নিক্ষেপ করি, সেখানে কিন্তু শয়তান থাকে না। সেখানে আমরা ঘৃণা প্রদর্শন করি।”

আসামির এমন বক্তব্য রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সম্পর্কে মনগড়া ব্যাখ্যা ও বিভিন্ন মিথ্যা কাহিনী সৃষ্টি করে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top