সকল মেনু

সরকার আন্দোলনরত শিক্ষকদের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে!

সরকার আন্দোলনরত শিক্ষকদের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে!
সরকার আন্দোলনরত শিক্ষকদের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে!

ঢাকা, ০৪ অক্টোবর ২০১৫, নিরাপদনিউজ : বেতন কাঠামো পুনর্গঠন, পদমর্যাদা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে গত এক মাস ধরে রাজপথে নেমেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা। কর্মবিরতি, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে তারা আসছে ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জনেরও হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু তাদের কোনো দাবিতে এখনো পর্যন্ত কর্ণপাত করেনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে সরকারি চাকরি করে তারা এ ধরনের আন্দোলন করতে পারেন কি না সে বিষয়েও খোঁজ নিচ্ছে সরকার। সর্বপরি আন্দোলনরত শিক্ষকদের তালিকা প্রণয়ন করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিকের শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে রোববার দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি। তারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে এ ধরনের আন্দোলন-সংগ্রাম করতে পারেন কি না সে বিষয়ে আমরা খোঁজ নিচ্ছি। সেই সঙ্গে যেসব শিক্ষকরা এসব আন্দোলন করছেন ও ইন্ধন দিচ্ছেন, তাদের তালিকা করতে ইতোমধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
শিক্ষকরা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করতে পারেন- এ হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কাজ তো তারা করতেই পারেন না। তারা সরকারি চাকরি করেন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন। তাই তারা এরকম কোনো কর্মসূচি করতে পারবেন না।’
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব সময়ই পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে সচেতন। পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের বলতে চাই, আপনার বিন্দুমাত্র চিন্তা করবেন না। ঠিকমতো পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন। যথসময়ে, নির্ধারিত সময়সূচি মেনেই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’
এ বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক রিয়াজ পারভেজ বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে নেমেছি। গত ৩০ সেপ্টেম্বরের দাবি পূরণ করতে সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়ায় আমারা শনিবার থেকে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করছি। যা চলবে সোমবার পর্যন্ত। এরপরও সরকার দাবি না মানলে আগামী ৬ অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবো আমরা।’ তিনি নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বর্জনেরও কর্মসূচি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান শিক্ষকদের দাবি : বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা বাস্তবায়ন, জাতীয় বেতন স্কেলের দশম গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত, সেলফ ড্রয়িং ক্ষমতা প্রদান, নতুন নিয়োগবিধি অনুসারে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিধান চালু, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পুনর্বহাল।
এদিকে ৬ দফা দাবিতে পাঁচদিনে চারঘণ্টা করে টানা কর্মবিরতির কর্মসূচি শুরু করেছে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফেডারেশন।
সহকারী শিক্ষক ফেডারেশনের নেতা শাহিনুর আল আমিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘৮ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১৫ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন পালন করা হবে।’
তিনি জানান, সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আসন্ন সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করার মতো কর্মসূচিও ঘোষণা করা হবে।
সহকারী শিক্ষকদের ৬ দফা : প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ঘোষিত অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে পুনঃনির্ধারণ করা, প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ সরাসরি না করা, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা পরিবর্তন, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা করা ও সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত চালু করা, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করে দ্রুত পদোন্নতির ব্যবস্থা করা এবং নন-ভ্যাকেশনাল ডিপার্টমেন্ট হিসেবে ঘোষণা করে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য অর্জিত ছুটির বিধান প্রণয়ন করা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top