সকল মেনু

ঈদুল আজহাঃ প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান

প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান
প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫, নিরাপদ নিউজ : ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম হলো ঈদুল আজহা। ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের এ ঈদের বাকী আর মাত্র পাঁচ দিন।

ঈদুল আজহার পশু কোরবানির আগে ঈদগাহ মাঠে জামাতের সঙ্গে দু’রাকাত ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। এদিন রাজধানী ঢাকায় প্রধান জামায়াতটি অনুষ্ঠিত হয় হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠে।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে রাষ্ট্রপতি,মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিমকোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র আইনজীবী, কূটনীতিকসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ব্যক্তিবর্গই এখানে নামাজ আদায় করেন।

তাই মাঠের সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি নিরাপত্তার দিকটিতেও পরিপূর্ণ নজর রাখতে হয় কর্তৃপক্ষকে। এ ঈদের দু রাকায়াত ওয়াজিব নামায আদায়ের জন্য জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।

ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করার দায়িত্ব নিয়েছেন পিয়ারু সর্দার এ্যান্ড সন্স ডেকোরেটর। সুপ্রিমকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় এ ঈদগাহ মাঠের নামাযে লাখো মুসল্লি এক হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করবেন।

দু রাকায়াত ওয়াজিব নামাজ আদায়ে মুসল্লিদের যেন কোনো ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয় সে বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান।

আনুমানিক ২ লাখ ৫৯ হাজার বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট জাতীয় এ ঈদগাহ ময়দানটির সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ প্রায় শেষ। সরেজমিনে ঈদগাহ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, শেষ সময়ের টুকিটাকি কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাঠ প্রস্তুতকারী শ্রমিকরা।

পিয়ারু ডেকোরেটর ছাড়াও মাঠ প্রস্তুতের কাজে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আরও ১০-১২টি ডেকোরেশন প্রতিষ্ঠানকে। এরা সবাই মিলে মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছেন।

মাঠে কর্মরত শ্রমিক আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে মাঠ প্রস্তুতের কাজ সম্পন্ন করেছি।’ একই কাজে নিয়োজিত আরেক শ্রমিক শাহজাহান বলেন, ‘আমি বিগত চারদশক(চল্লিশ বছর) ধরে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছি।

মাঠ প্রস্তুতে লাখেরও বেশি বাঁশ লাগে। শামিয়ানার জন্য ত্রিপল, রশি, সুতাসহ আরও অনেক কিছু ব্যবহার করতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘এখানে দেশি-বিদেশি পুরুষ-নারী অনেক মুসল্লি নামাজ আদায় করেন।

জানা যায়, নারীদের জন্য ঈদগাহ মাঠে আলাদা পর্দার ব্যবস্থা করে নামাজের জায়গা প্রস্তুত করা হয়। অনাড়ম্বর পরিবেশে এখানে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন।

এতো মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ পড়তে আসাতে জায়গার কোনো সঙ্কট হয় কিনা জানতে চাইলে মাঠ প্রস্তুতে কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, ‘ঈদের দিন বৃষ্টি না হলে এখানে মুসুল্লিদের জায়গা সঙ্কট হয় না। আর বৃষ্টি হলে এ মাঠের পাশে শিক্ষাভবন, কদম ফোয়ারাসহ আশপাশ এলাকায় মুসুল্লিরা নামাজ আদায় করেন।’
আর নিরাপত্তার বিষয়গুলো দেখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এখানে ঈদের নামাজের ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব। রাত পোহালে ভোর থেকেই মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করতে আসতে শুরু করেন।

এরপর কোরবানীর মাসয়ালাসহ ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওয়াজ নসিহত শুরু করেন ইমাম সাহেব। জানা যায়, দেশের অন্যান্য ঈদগাহ মাঠে গুরুত্ব পুর্ন ব্যাক্তিরা বক্তব্য রাখার সুযোগ পেলেও জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ইমাম ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি এখানে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পান না।

জাতীয় ঈদগাহে এক সঙ্গে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এছাড়া নারী মুসুল্লিদের জন্য থাকে আলাদা ব্যবস্থা।

আলাদা ব্যবস্থা থাকছে কূটনৈতিক মিশনের সদস্য ও তাদের স্ত্রীদের জন্যও। মুসল্লিদের সুবিধার্থে এবার ময়দানে ৪৭০টি সিলিং ফ্যান ও ৪৬৪টি বাতি লাগানো হবে বলে জানা গেছে। মাঠের পূর্বপাশে রাস্তা সংলগ্ন এলাকায় থাকবে অজুর ব্যবস্থা।

অজুখানায় একসঙ্গে প্রায় দুইশত মুসল্লি অজু করতে পারেন। আর ভিআইপিদের জন্য থাকছে একটি টয়লেটের ব্যবস্থাও। এছাড়া ঈদগাহ ময়দান জুড়ে সার্বিক নিরাপত্তা বলায় গড়ে তুলেছেন আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা।

জানা গেছে ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা রক্ষার্থে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) টিভিসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশগুলো ময়দানের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। বৃষ্টিতে যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য মাঠের ওপর মোটা ত্রিপলের ছাউনি টানানো হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য রাখা হয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা।

নারী মুসুল্লিদের জন্য এখানে ব্যাবস্থা করা হয়েছে আলাদা নামাযের জায়গা। একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীমুসুল্লি এখানে নামায আদায় করতে পারবেন। দতাদের জন্য রাখা হয়েছে আলাদা তিনিট গেট। রাষ্ট্রপতি সুপ্রিমকোর্টের গেট ব্যাবহার করবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top