ঢাকা, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫, নিরাপদনিউজ : রাজধানীর ক্রমবর্ধমান খাবার পানির চাহিদা মেটাতে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প (ফেজ-৩) নামে একটি নতুন প্লান্ট স্থাপন করা হবে।
৪ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দৈনিক ৪৫০ মিলিয়ন লিটার পানি সরবরাহ ক্ষমতাসম্পন্ন এই প্লান্ট ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীলতা কমাবে। ঢাকা ওয়াসা ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
আজ শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) চলতি বছরের ৬ষ্ঠ সভায় এ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়। একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, একনেকে ৭ হাজার ২১৫ কোটি টাকায় ৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এর মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে ৩ হাজার ১১৭ কোটি, প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ৩ হাজার ৯৯৩ কোটি এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে ১০৪ কোটি টাকা যোগান দেয়া হবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৬টি নতুন ও একটি সংশোধিত।
মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের ইনটেক লোকেশন হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার হরিয়ায় মেঘনা নদীর ডান তীর। প্রকল্পটির ওয়াটার ট্রান্সমিশন লাইন হরিয়া থেকে সোনারগাঁও ও নারায়ণগঞ্জ হয়ে সায়দাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এর পরিশোধিত পানি সরবরাহ লাইন হচ্ছে ঢাকা শহর।
এ প্রকল্পের আওতায় অপরিশোধিত পানি সরবরাহের জন্য টুইন র ওয়াটার পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ, স্লুজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন, ৫২ দশমিক ৮ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন ও ৫৪ কিলোমিটার ডিস্ট্রিবিউশন লাইন এবং ৩৩ কেভি ইলেকট্রিক লাইন নির্মাণ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীর বর্তমান দেড় কোটি মানুষের দৈনিক ২ হাজার ২শ’ মিলিয়ন লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ হয় ২ হাজার লিটার পানি। ২০৩৫ সালের মধ্যে দৈনিক এ চাহিদা ৫ হাজার ২৬৮ মিলিয়ন লিটারে পৌঁছবে। ঢাকা ওয়াসা এখন মূলতঃ ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল। ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে প্রতি বছর পানির স্তর ২ থেকে ৩ মিটার নেমে যাচ্ছে, যা শুধু পরিবেশের জন্যই নয় বরং ভবিষ্যতে খাবার পানি সরবরাহেও হুমকিস্বরূপ।
সভায় ১৬৪ কোটি টাকায় বিসিক শিল্প পার্ক টাঙ্গাইল শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এ প্রকল্পে প্রায় ২৮০টি শিল্প প্লটের জন্য ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এতে রাস্তা, নর্দমা, কালভার্ট, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগের মত প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধা থাকবে।
একনেকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ৬৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের সমন্বিত গবেষণা কার্যক্রম জোরদার প্রকল্প, ৩০১ কোটি ৫৩ লাখ টাকায় বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কুর্নিবাড়ী থেকে চন্দনবাইসা পর্যন্ত যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ কাজসহ বিকল্প বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প, ১ হাজার ৮৪৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকায় কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (দ্বিতীয় সংশোধনী, ৪১ কোটি ৫ লাখ টাকায় মেঘনা সেতুর স্কাউয়ার প্রটেকশন এবং মেঘনা সেতু ও গোমতী সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ এবং ১৯৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকার রাস্তা, এ্যাসফল্ট প্লান্টের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্প।
মন্ত্রীবর্গ ও প্রতিমন্ত্রীবৃন্দ এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।-বাসস
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।