মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী ০৬ সেপ্টেম্বর: কেউ কিনেছেন ঈদের পরে, কেউবা ২ থেকে আড়াই মাস আগে। সেসব গরু গোয়াল ঘরে রেখে লালন-পালন চলছে প্রাকৃতিক উপায়ে। আর খামারি ও মৌসুমী গরু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম উপায়ে বড় করে কোরবানির হাটে তোলার জন্য তৈরি করেছেন। সৈয়দপুর শহর ও গ্রাম এলাকায় প্রায় শতাধিক খামার ও ব্যক্তি মালিকানায় এসব গরু বিক্রির জন্য প্রস্তত করা হয়েছে। এতে করে প্রতিটি গড়ে অর্ধেক লাভ হবে বলে আশা করছেন তারা। শহরের কাজীরহাট মীঢ়ধাপাড়া এলাকার হামিদুর রহমান। প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ১০টি গরু কিনেন। গোয়াল ঘরে গরু লালন-পালন আর খাইয়ে বড় করে তোলেন। এর মধ্যে দুটি গরু নিজের কোরবানির জন্য রেখে বাকি ৮টি গরু বেচে দেন। কোরবানির হাটে কিংবা পাইকাররা বাড়ি থেকে এসব গরু নিয়ে যায়। এতে গড়ে প্রতিটি গরুতে অর্ধেকের বেশি লাভ হয়। হামিদুর রহমান জানান, এসব গরুর পেছনে খাবার বাবদ প্রতিদিন ৮শ’ টাকা খরচ হয়। খাদ্য হিসাবে গমের ভুষি, চালের খুদি, ধানের গুড়ো, ভুট্টার গুড়ো দেওয়া হয়। গরু দেখভাল করার জন্য একজন রাখালকে প্রতিদিন ২শ’ টাকা হাজিরায় রাখা হয়েছে। অপরদিকে একশ্রেণির খামারি ও গরুর মালিক অধিক মুনাফার আশায় কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে তারা ইনজেকশন, খড়ের সাথে ভারতীয় ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোসহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। খামারি ও গরু মালিকরা গরু মোটাতাজাকরণে ভারতীয় ডেকসামিথাজল ও পেকাটিন ( লাল বড়ি) খাওয়ানোর কথা জানা গেছে। পরিমাণের অধিক এই বড়ি খাওয়ানোর ফলে গরু খাবারের রুচি বৃদ্ধি পায় এবং বেশি বেশি খাবার ও পানি খেয়ে থাকে। ফলে গরু মোটা হয়ে যায়। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল আলম জানান, এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে গরুর হার্ট কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মোটাতাজাকরণ গরু কোরবানির দেয়ার পর দীর্ঘদিন এই মাংস খেলে মানুষেরও হার্ট ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবণা থাকে। আইনগতভাবে কৃত্রিম এই উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণ করা নিষিদ্ধ। কোন খামারি বা গরু মালিক বিরুদ্ধে এ ধরণের সুস্পষ্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।এদিকে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু কেনার আগ্রহ ক্রেতাদের বেশি। এ কারণে গরু পালনকারীদের বাড়িতে গিয়ে অগ্রিম বায়না করে আসছেন। এ ক্ষেত্রে দাম কিছুটা বেশি চাওয়া হয় বলে জানান ক্রেতারা। অপরদিকে কৃত্রিমভাবে মোটাতাজাকরণ গরু বিক্রির জন্য তৈরি করেছেন খামারি ও কিছু গরু ব্যবসায়ী। এসব গরু খুব শিগগিরই স্থানীয় হাটবাজারে তুলবেন বলে জানান তারা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।