নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৬ আগস্ট : রাজশাহীর তানোরে কথিত অশুভ শক্তি (জিন) তাড়ানোর নামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির এক নারীকে পদদলিত করে ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার মুণ্ডুমালা পৌরসভার ‘সাধুজন মেরী ভিয়ান্নী’ গির্জায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফুলমনি (৬০) ওই পৌরসভার চুনিয়াপাড়ার মৃত ঝাদেম মার্ডির স্ত্রী। এদিকে ফুলমনিকে হত্যার অভিযোগে ওই গির্জার শিক্ষিকা বিলাসীসহ ৭ জনকে পুলিশ আটক করেছে। অন্যরা হলেন- রতন মার্ডি (২৫), হিউবার্ড ববি মার্ডি (২০), ফাল্গুনী মুরমু (১৪), বর্ষা মার্ডি (১৩), সম্পা মার্ডি (১৪) ও পিয়াস হেমরম (২৫)। খবর পেয়ে রাজশাহী সদর সার্কেলের (এএসপি) আব্দুর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে গির্জার ফাদার মাইকেল কোড়াইয়াকেও গ্রেফতার করা হবে।’ নিহতের মেয়ে আরতির অভিযোগ, সন্ধ্যায় তার মা ফুলমনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় অশুভ শক্তির প্রভাব আছে চিন্তা করে তাকে ঝাড়ফুঁক দেয়ার জন্য স্থানীয় গির্জায় নিয়ে যাওয়া হয়। গির্জার ফাদার মাইকেল কোড়াইয়াও জানায়, ফুলমনির শরীরে অশুভ শক্তি ভর করেছে। তিনি গির্জার শিক্ষিকা বিলাসীকে ঝাড়-ফুঁকের মাধ্যমে ফুলমনির শরীর থেকে অশুভ শক্তি দূর করার নির্দেশ দেন। এরপর শিক্ষিকা বিলাসীর নেতৃত্বে একদল ঝাঁড়-ফুঁকের নামে ফুলমনির ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। তারা ৭ জন মিলে ফুলমনিকে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে মাড়িয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এক পর্যায়ে ফুলমনির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মেয়ে আরতি তাকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য গির্জার ফাদারের কাছে অনুরোধ করেন। কিন্তু আরতিকে পাত্তা না দিয়ে কথিত চিকিৎসার নামে ফুলমনির ওপর শারীরিক নির্যাতন চলতে থাকে। এক পর্যায়ে রাত একটার দিকে ফুলমনির মৃত্যু হয়। তানোর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, নিহতের মেয়ে আরতির মাধ্যমে খবর পেয়ে মুন্ডুমালা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ কথিত চিকিৎসার নামে নির্যাতনে জড়িত ৭ জনকে আটক ও ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে গির্জার ফাদার মাইকেল কোডাইয়া নিহত ফুলমনিকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, এখানে শুধু অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়ফুঁক দেয়া হয়।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।