নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ৩০ জুলাই : মাগুরায় মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ শিশুটির দেহে গত বুধবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির হাত, বুক ও চোখের পাপড়ির জমাট রক্ত বের করা হয়েছে। শিশুটি ভালো আছে। তবে এখনই আশঙ্কামুক্ত কি-না তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ এতটুকু ছোট শিশুর অস্ত্রোপচারের পর বিভিন্ন ধরনের ‘ইনফেকশন’ হয়। সেগুলো থেকে রক্ষা পাওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এদিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির মায়ের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ নাজমা বেগম, আব্দুল মোমিন ও মিরাজ হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। গত শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আব্দুল মোমিন। গুলিবিদ্ধ নাজমা বেগমকে দ্রুত অপারেশন করলে তিনি একটি কন্যা শিশুর জন্ম দেন। এদিকে এ ঘটনায় নিহত আব্দুল মোমিনের ছেলে রুবেল মিয়া বাদি হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। গত রোববার দুই আসামি সুমন হোসেন (২৪) ও আব্দুস সোহাগকে (২৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। শিশুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আশরাফুল হক কাজল গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটির যেসব জায়গায় ক্ষত হয়েছিল, ওই সব জায়গায় সফলভাবে অপারেশন হয়েছে। তবে সে এখনই পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। শিশুটির পরিবার বলছে, নাজমা ৩৪ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন। শিশুটি প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে জন্মেছে। ওজন দুই কেজি। স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০০ গ্রাম কম। শিশুটির অবস্থা এখন স্থিতিশীল। কিন্তু অপরিণত ও কম ওজন হওয়ায় ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। তবে আশার কথা, শিশুটি এখন স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছে। একটু একটু খাচ্ছে। কাঁদছে। এক চোখে তাকানোর চেষ্টা করছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কানিজ হাসিনা শিউলীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছে শিশুটি। তিনি বলেন, ‘বাচ্চাটির পিঠ দিয়ে গুলি ঢুকে বুক দিয়ে বেরিয়ে গেছে। হাতে-গলায় জখম। চোখটা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। স্থায়ী ক্ষতির ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’ গত বুধবার সকালে মাগুরা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ মা নাজমা খাতুন যন্ত্রণায় শুতে পারছেন না। তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমার মা-মণি পৃথিবীর আলো দেখার আগেই বুক পেতে আমার জীবন বাঁচাল। জন্মের পর ওর মুখটাও আমি দেখতে পারলাম না। যারা আমার মণির কচি বুক ঝাঁজরা করল, আপনারা তাদের ধরে ফাঁসি দেন।’ প্রসঙ্গত, গুলিবিদ্ধ শিশুটির বাবা বাচ্চু ভুঁইয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দুই পক্ষের গোলাগুলির সময় তিনি বাড়িতেই ছিলেন। এক পর্যায়ে ভয়ে ঘরের দরজা খুলে দৌড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু স্ত্রী নাজমা খাতুন অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তাকে সরানো যায়নি। ঘরের বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।