সকল মেনু

বিরলের ক্লিনিক গুলোতে চলছে সরকারী ঔষুধ বাণিজ্য

mail.google.comমোঃ তিমির, দিনাজপুর : দিনাজপুর জেলাকে বলা চলে শিক্ষা ও সু-চিকিৎসার নগরি। স্বাস্থ্য সেবা জনগনের দারপ্রান্তে পৌছে দেওয়ার জন্য সরকার ইতিমধ্যে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ছোট, বড় ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করছে। আর এসকল স্থাপিত ক্লিনিকগুলোতে চলছে স্বাস্থ্য সেবা। আসলে কি প্রকৃত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে সাধারণ জনগণ ? এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে নজড় পরলো বিরল উপজেলার ৭ নং  ইউনিয়নের বিজোড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে। বেশ সুন্দর পরিবেশে অবস্থিত এই ক্লিনিকটি দেখে মনে হয় ৭ নং ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ ভালো মানের স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। কিন্তু যাচাই করে দেখা যায়, চিত্রটি ভিন্ন। ক্লিনিক আছে তা বাস্তবে সত্য, রোগি আছে তাও ঠিক, ডাক্তার নেই তাও নয়, এতসব আছে তার পরেও নেই তেমন কোন স্বাস্থ্যসেবা। ক্লিনিকে ডাক্তার আছে সপ্তাহে দু’দিন অথাৎ সোম ও বুধবার কিন্তু রোগী সপ্তাহে সাত দিন। যদিও এসব ক্লিনিকের ডাক্তাররা সরকারী চাকুরীজিবী তাছাড়াও রয়েছে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তারপরেও কেন তারা তাদের দায়িত্ব পালনে করছে অনিহা।

ক্লিনিকের সামনে হিন্দুপাড়ায় শ্রী জীবন এর গো-খাদ্দ্যের দোকান সহ বিভিন্ন সাইনবোর্ড বিহীন দোকনে ও হাট বাজারে সরকারী সীলমারা ওষুধ বিক্রয় হতে দেখা গেছে। যাতে লিখা আছে “বিক্রয়ের জন্য নহে”। এই ওষুধ কোথায় পেয়েছে এমন প্রশ্ন শ্রী জীবনকে করা হলে সে জানায় পাশের গ্রামের ওষুধ বিক্রেতা মোঃ আলেফ এর কছে ক্রয় করেছে। মোঃ আলেফ হাট বাজারে হাটে বাজরে ফেরী করে ওষুধ বিক্রি করে বলে জানা যায়।

বিরল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার তাজউন নাহার এর সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি নিশ্চিত করেন যে, বিজোড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকের ডাঃ মোঃ ফারুক আহম্মেদ এর দায়িত্ব পালনের সময় সকাল ৮.৩০ মিনিট হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত। মাত্র সাড়ে পাঁচ ঘন্টা। অথচ অনুসন্ধান করে দেখা গেছে ডাঃ মোঃ ফারুক আহম্মেদ তার উপর অর্পিত দায়িত পালন করেন ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত মাত্র ৩ ঘন্টা। ক্লিনিকের আশ পাশে এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, ক্লিনিকের জন্য বরাদ্দকৃত ঔষধ অথাৎ সে সকল ঔষুধের গায়ে লেখা রয়েছে “বিক্রয়ের জন্য নহে” সে সকল ঔষুধ ক্লিনিকের আশ পাশের এলাকায় খই মড়ির মত বিক্রি হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে পেরাসিটামল, ফ্লামিট, কট্রিন, এমক্সিসিল্যান ইত্যাদি জাতীয় ঔষুধ। গরু ছাগলের খাবার দোকান থেকে শুরু করে পান-সিগ্যারেটের দোকানে পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে সরকারি ঔষুধ। দেখার কেউ নেই। অথচ বিজোড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে সেবা নিতে যাওয়া রোগীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, কিছু হলেই ডাক্তার সাহেব আমাদের পেরাসিটামল ও দু একটি বড়ি দিয়ে বাকিগুলো কিনে নিতে বলে। এ বিষয়ে ক্লিনিকের কর্মরত ডাঃ ফারুক আহম্মেদ এর সাথে কথা বললে ঘটনার সত্যতা অস্বিকার করে বলেন এসব বিষয় দেখার দায়িত্ব আমার নয়। ঔষুধ বিক্রির ঘটনায় এফপিআই মোঃ তোজাম্মেল হক এর সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন এসব বিষয় দেখার দায়িত্ব জনগনের আমার নয়। এভাবেই চলছে ক্লিনিকের ঔষুধ বানিজ্য সত্যতা সামনে আসলেই অস্বিকার করছে সকলেই। এ বিষয়ে হেলথ অফিসার, বিরল থানার ডাঃ জাহিদ এর সাথে কথা বলতে তিনিও জানান একই কথা “এ বিষয় দেখার দায়িত্ব আমার নয়” তবে এ বিষয় দেখার দায়িত্ব কার ? ওষুধ চুরির ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে রাজী নন। শুধু উদরপিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে নিজে বাঁচার চেষ্টা করে। এ চিত্র দিনাজপুর জেলার ১৩ টি উপজেলায়। তবে দিনাজপুর শহরে গোপনে ও সাবধানে বিক্রি হয়। কিন্তু পল্লি গ্রামে সহজ-সরল মানুষদের নিকট প্রকাশ্যে সরকারী ওষুধ বিনা বাধায় বিক্রি হচ্ছে।

দেশকে দূর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে দেখতে সরকার সরকারী চাকুরীজিবীদের বেতন, ভাতা ইত্যাদি বৃদ্ধি করছে। কারণ সরকারি সম্পদ রক্ষায় যাতে সরকারী চাকুরীজিবীরা সর্বপ্রথম এগিয়ে আসে। কিন্তু ঘটনা ঘটছে ঠিক উল্টো। ঘটনার সত্যতা যাচাই বাচাই করে দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যাথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছে ভু’ক্তভোগীরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top