নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ছয় হাজার টাকা দিয়ে কিরণ মালা কিনেছি, অথচ ড্রেসটি পরে কাউকে দেখাতেই পারলাম না। কোথাও ঘুরতেও যেতে পারলাম না। দিনভর বৃষ্টিতে ভাটা পড়েছে আমার ঈদ আনন্দ।’
ঈদ উদ্যাপন সম্পর্কে বলতে গিয়ে এভাবেই আক্ষেপ করেন ইডেন কলেজের ছাত্রী তাসলিমা রিনি।
প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা মাসুম মিজান। তিনি বলেন, ইচ্ছে ছিল ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরবো মনের আনন্দে। কিন্তু টানা বর্ষণে সে ইচ্ছে আর পূরণ হলো না।
বর্ষায় ঘরে বসেই ঈদের আনন্দ পাবার চেষ্টা করছেন তিনি। এতে সঙ্গী হয়েছে, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। মাসুম মিজান তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘শ্রাবণের টানা বর্ষায় অবরুদ্ধ ঢাকার ঈদ ! তবুও ঘরে ঘরে আজ মহা আনন্দ।’
খুলনা থেকে এবার বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকায় আসছেন মাহমুদুল ইসলাম মিঠুন। ঈদের আনন্দে ভিন্নতা আনতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টি তা তা আর হতে দিলো না। ঘরে বসে টেলিভিশন দেখে সময় পার করছেন তিনি। সময় কাটাতে ফেসবুকে গ্রাম ও শহরের বন্ধুদের সঙ্গে আলাপচারিতা করছেন। দিচ্ছেন নতুন নতুন স্ট্যাটাস। একটি স্ট্যাটাস লিখেছেন, ‘বৃষ্টিস্নাত দিনে ঘরে বসে একাকী সময় পার করছি। আজো কোথাও বের হতে পারবো না মনে হচ্ছে।’
মাসুম মিজান ও মিঠুনের মতো লাখো মানুষের ঈদের ছুটি কাটছে ঘরে বসে টেলিভিশন দেখে ও ফেসবুক ব্যবহার করে। আত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবের বাসায় যাওয়ার কর্মসূচি থাকলেও বৃষ্টির কারণে বাতিল করতে হয়েছে পরিকল্পিত শিডিউল।
দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শেখ সোহেল। বিগত ঈদে ঢাকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন তিনি। কর্মসূচিতে আরো থাকে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের নিয়ে বাসায় জম্পেশ আড্ডা ও ভরপুর খাবারের আয়োজন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এবারের ঈদে এসব কিছুই হচ্ছে না। তাই তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে সেলফি তোলা ছাড়া আরতো কোন কাজ খুঁজে পাইলাম না!’
ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়ি গেছেন কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী কলি আক্তার। বৃষ্টির কারণে পুরনো সেই বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা করতে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। মোবাইল ফোনে কলি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি ঠিকই, কিন্তু ঘর থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। তাই বসে বসে টিভির অনুষ্ঠান উপভোগ করছি আর মাঝে মাঝে ফেসবুকে সেলফি দিচ্ছি।’
অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের পোস্টে লিখেছেন, ঈদের নতুন জামা-কাপড় কিনেই যেন ভুল করেছি। তার চেয়ে রেইনকোট কিনলেই ভালো হতো। পুরনো পোশাকের ওপর নতুন নতুন রেইনকোট পরে ঈদের দিন ঘোরা যেত।
শাহীন মোখলেস উদ্দিন নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারি তার পোস্টে লিখেছেন, ‘সারাদিন বৃষ্টিতে কোথাও যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই অযথা ফটোসেশন করে সময় পার করছি।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।