কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া : জমির পর জমি তামাকে ছেয়ে যাচ্ছে কুষ্টিয়ায়। কুষ্টিয়ার ছয় উপজেলার যেসব জমিতে একসময় সবজি উৎপাদন করে কৃষকেরা পরিবার চালাতো এখন বেশি লাভের আশায় সেই জমিতেই চলছে সর্বনাশা তামাকের চাষ।
তামাকের আগ্রাসনে শেষ হয়ে যাচ্ছে সবুজ ফসলের মাঠ। এখন দিগন্ত জোড়া তামাক চাষে বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ, খাদ্যের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। তামাক উৎপাদকারী বিভিন্ন টোবাকো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রলোভনে পড়ে প্রান্তিক চাষিরা তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছে। আর এতে ফসলি জমির ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেলার ৬৬ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ফসলি জমিতে শুরু হয়েছে তামাক চাষ। জেলার প্রায় সব বাড়ির কৃষকেরাই নেমে পড়েছে এই তামাক চাষে। এক সময় শাক-সবজি ও বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে যারা জীবনযাপন করতো এখন তারাই তামাক চাষে মগ্ন।
বিভিন্ন টোবাকোর উৎসাহ, ঋণ, সার, কীটনাশক ও আনুষাঙ্গিক কৃষি সরঞ্জাম সরবরাহের সহজ লভ্যতার কারণে এলাকার কৃষকেরা এই তামাক চাষে ঝুঁকছে ।
ঢাকা টোবাকোর খলিসাকুন্ডি ডিপো ম্যানেজার আকতার হোসেন বলেন, কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলার মধ্যে প্রায় সবকটি উপজেলায় তামাক চাষ শুরু হয়েছে। কৃষকদের সবধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়ে এই তামাক চাষ করানো হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, এ বছর জেলার ছয়টি উপজেলায় আবাদী জমির পরিমান ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। তারমধ্যে চলতি মৌসুমে এ জেলায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে তামাকের আবাদ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কিংকর কুমার দাস জেলায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হবার কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, বিশাল পরিমাণ জমিতে তামাক চাষের ফলে কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, তামাক কোম্পানির প্যাকেজে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে সাধারণ কৃষক, আর ফসলি জমি হারাচ্ছে উর্বরাশক্তি। তামাক চাষে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে, পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য ও খাদ্য পরিস্থিতিও পড়ছে হুমকির মুখে। মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করায় ক্রমেই জমি উর্বরাশক্তি হারাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।