এম কামরুজ্জামান,সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকার সবজির মধ্যে পটল একটি উল্লেখযোগ্য। শীত ও গ্রীস্মকালিন মৌসুমে ব্যাপক হারে চাষ করা হয় এই সবজিটি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে সাতক্ষীরার পটল। চলতি গ্রীস্ম মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলায় পটলের বাম্পার উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের সবজি চাষী অজিত কুমার জানান, তিনি বারো মাসই নানা ধরনের সবজি চাষ করে থাকেন। চলতি গ্রীস্ম মৌসুমে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি পটল চাষ করেছেন দুই বিঘা জমিতে। ভারতীয় সন্ধ্যামনি জাতের পটল চাষ করেছেন এবার। এটি যেমন আগাম উৎপাদন হয় তেমনি উচ্চ ফলনশীল। বিঘাতে ১১০ থেকে ১২০ মন পর্যন্ত ফলন হয় বলে জানান এই কৃষক। ইতিমধ্যে ক্ষেত থেকে পটল উত্তোলন শুরু করেছেন চাষী অজিত কুমার। বর্তমান বাজারে পটল পাইকারী দাম পাওয়া যাচ্ছে প্রতি মন ৯৬০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলে দাম আরো ভালো পাওয়া যেত বলে জানান তিনি। তার পরেও দুই বিঘা জমির পটল উৎপাদনে এবার ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হতে পারে বলে আশা করছেন তিনি। সার, কিটণাশক ও অন্যান্য খরচ দিয়ে বিঘা প্রতি ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকার মত উৎপাদন খরচ পড়ে যায়। আর বাজারে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে দুই বিঘা জমির পটল বিক্রি হবে কমপক্ষে ২ লাখ টাকা। যা উৎপাদন খরচ তুলেও অন্তত দেড় লাখ টাকা লাভ থাকতে পারে।সাতক্ষীরা জেলা সদরের সুলতানপুর বড় কাঁচামাল ব্যবসায়ী ও আড়তদার সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. রওশন আলী জানান, শীতের চেয়ে গ্রীস্মকালিন পটলের চাহিদা প্রচুর। উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে প্রায় এক পক্ষকাল। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের চাষিরা বাজারে নিয়ে আসছে তাদের উৎপাদিত পটল। তাছাড়া স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি খুলনা ও ঢাকাতেও সরবরাহ করা হচ্ছে এখানকার পটল। বর্তমানে স্থানীয় আড়তে প্রতি কেজি পটল পাইকারী ২৪ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে হরতাল-অবরোধ না থাকলে আরো বেশি দাম পাওয়া যেত বলে জানান তিনি। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি গ্রীস্মকালিন মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলাতে ৮০০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে স্থানীয় ও ভারতীয় জাতের পটল। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১৬০ হেক্টর , কলারোয়ায় ৩০০ হেক্টর, তালায় ১৪৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৬০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৪০ হেক্টর, আশাশুনিতে ৪০ হেক্টরও শ্যামনগরে ৫৫ হেক্টর। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে কলারোয়া ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলায়। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. আব্দুল গফুর জানান, এ জেলার অন্যান্য সবজির মধ্যে পটল একটি লাভজনক ফসল। সল্প সময়ের মধ্যে অধিক লাভবান হতে পারে কৃষক পটল চাষ করে। তাছাড়া সবজিটির চাহিদাও ভালো বাজারে। তবে এবার ফসলটি বাম্পার উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।