রোমান শেখ, চট্টগ্রাম : এবার নাশকতা মামলায় পলাতক আসামিদের ধরতে চিরুনি অভিযান চালাবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। ১৬ থানা নিয়ে গঠিত সিএমপি একযোগে এ অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডল।
সম্প্রতি ওমরাহ হজ্জ পালন শেষে পুলিশের মাসিক সভায় বসেই চট্টগ্রামে সংগঠিত নাশকতাকারীদের ধরতে ১৬ থানার ওসিদের কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডল।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলায় বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী পলাতক রয়েছে। গত ৬ জানুয়ারি থেকে ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ এবং থেমে থেমে হরতালে এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে প্রায় ৭০ টি মামলা দায়ের হয়েছে। নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুর, বোমা মারা, মানুষ পোড়ানোসহ এসব বিভিন্ন মামলায় নামে-বেনামে আসামি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী। এদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর অভিযানে তৃণমূল পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হলেও গ্রেপ্তার এড়াতে পলাতক রয়েছে উচ্চপদে থাকা নেতারা।
এসব নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে নাশকতায় উস্কানিদাতা হিসাবেও তালিকায় রয়েছে প্রায় এক হাজার নেতাকর্মী। যাদের একটি তালিকা ইতিমধ্যে পুলিশ ও র্যাব তৈরি করেছে।
৬ জানুয়ারি থেকে নাশকতায় এ পর্যন্ত আটক অনেকে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতাকর্মীদের নাম বেরিয়ে আসে। আগের তালিকা এবং আসামিদের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে যাদের নাম এসেছে এ দুটোই সমন্বয় করে একযোগে খুব শিঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে সিএমপি’র এক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) প্রকৌশলী বনজ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় বিভিন্ন সময়ে নাশকতার অভিযোগে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে মামলা থাকার পরও বিভিন্ন সমেয় এরা চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, পেট্রলবোম, ককটেল নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে বিএনপি-জামায়াতের প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী পালিয়ে থাকার পরও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এরা এসব হামলা চালাচ্ছে। তবে, নাশকতা মামলায় পলাতক এসব আসামিদের ধরতে সম্প্রতি পুলিশ কমিশনার ১৬ থানার ওসিদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশে একযোগে সিএমপি এ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, সিএমপির ১৬ থানার ওসিদের কাছে জরুরী ভিত্তিতে চিহ্নিত নাশকতাকারীদের নাম, ঠিকানা ও ছবি (যদি থাকে) সহ এসব মামলার সকল তদন্তকারি কর্মকর্তাদের ডেকে খুব শিঘ্রই পলাতক নাশকতাকারিদের ধরতে চিরুনি অভিযান চালানোর পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে
তিনি আরো জানান, এই উদ্যোগের ফলে নাশকতাকারীরা এক থানায় নাশকতা করে অন্য থানায় আত্মগোপনে থাকতে পারবে না। বিশেষ অভিযান চালিয়ে চিহ্নিত এসব নাশকতাকারীদের খুঁজে বের করতে সুবিধা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।