চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গায় এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজারে দাঁড়িয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন শতাধিক রোগি আসছে। সাত দিন অতিবাহিত হলেও ডায়রিয়ার কারণ উদঘাটন হয়নি। তবে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণ হিসেবে বিশুদ্ধ খাবার পানীয়র সংকটকেই দায়ি করছে এলাকাবাসী। পৌরপিতাকেই দুষছে তারা। গত সাত দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার বাগান পাড়া, মাঝের পাড়া, মসজিদ পাড়া ও মুক্তি পাড়া থেকে সদর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় দেড়হাজার। প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে শতাধিক রোগী। পৌরবাসীর নানা অভিযোগ । তারা বিশুদ্ধ পানি সমস্যায় ভুগছে। ঠিক কি কারণে এই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব এর কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ঢাকা স্বাস্থ্য বিভাগের গবেষণা দলের ধারণা চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাপ্লাইয়ের পানি থেকেই এই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। প্রকৃত কারণ জানা যাবে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসার পর। তবে ঠিক কবে নাগাদ এই পরীক্ষা রিপোর্ট স্বাস্থ্য বিভাগের গবেষণা দল পাবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি ঢাকার গবেষণা দল ও সিভিল সার্জন চুয়াডাঙ্গা।
আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগেরই অভিযোগ পৌরসভার পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা পানি পান করে তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় পৌর কর্তৃপক্ষ পাইন লাইনের পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে বলেছে। সেইসাথে টিউবওয়েলের পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দিয়েছে।
ঢাকা আইইডিসিআর এর মেডিকেল সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগ প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মু . মুশতাক হোসেন জানান, পানি ও মল সংগ্রহ করে ঢাকায় সংশ্লিষ্ট বিভাগে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এর রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সঠিক করে বলা যাচ্ছে না কি কারণে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পৌরসভার সাপ্লাইয়ের পানি পান করেই পৌরবাসী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সদর হাসপাতালে আসা ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪শত ছাড়িয়ে গেছে। আরো নতুন নতুন রোগী আসছে। ১০০ শয্যার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। হাসপাতালের বারান্দা, সিঁড়ির তলায়, করিডোরে এবং চিকিৎসক সম্মেলন কেন্দ্রে রোগী রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকগুলিতেও শতাধিক রোগি চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. শুকুমার সরকার জানান, ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। রোগীদের চিকিৎসার সব ব্যবস্থা ওষুধপত্রের পর্যাপ্ত মজুদ রাখা আছে এবং লোকবল বাড়ানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরে স্মরণকালের এই ভয়াবহ ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি, পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনও এগিয়ে এসছে রোগীদের সেবা দিতে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।