‘যুক্তরাষ্ট্রের সকল পর্যায় থেকে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ কোনো চাপ অনুভব করছে কিনা’- এর উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। আমরা নিজেরাই সুষ্ঠূ নির্বাচন চাই। যুক্তরাষ্ট্র বারবার বলছে দেখে ভালো, আমাদের চাঙ্গা রাখছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বহু রকম নালিশ দেয়। সে জন্য যখনই নালিশ দেয়, তখনই আমাদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি সহযোগিতা চেয়েছি। সুষ্ঠূ নির্বাচন সরকার বা ইসি একা চাইলে হবে না, সব দল ও মতের মানুষের আন্তরিকতা ও প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি এ বিষয়ে সাহায্য করতে।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সহযোগিতা? এর উত্তরে ড. মোমেন বলেন, আমি তা বলিনি। আমি বলেছি সব দলের আন্তরিকতা না থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি যত পার নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাও।
সুষ্ঠু নির্বাচনে যদি সব দল অংশগ্রহণ না করে তাহলে কি গ্রহণযোগ্য হবে? এ নিয়ে তিনি বলেন, অবশ্যই হবে। কেন হবে না? দেশের মানুষ ভোট দিলে গ্রহণযোগ্য হবে না কেন?
রোববার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। গত ১০ এপ্রিল ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র সুষ্ঠূ, অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়- এ নিয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গ্রহণযোগ্য বা অংশগ্রহণমূলক নয়, যুক্তরাষ্ট্র শুধু বলেছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। বাকিগুলো আমরা চাই।
বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের বক্তব্য বলেছি, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই। যার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি, প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলেছি। এক সময়ে বিএনপির সময় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার ছিল। ভুয়া ভোটার যাতে না হয়, এ জন্য আমরা বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র দিয়েছি। দ্বিতীয়ত রাতের অন্ধকারে ব্যালট বাক্স ভর্তি হয়। এ জন্য আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করেছি। ভোটের দিন দেখা যাবে ভেতরে আগেই ব্যালট ভরে রেখেছে কিনা। তৃতীয়ত যেটা বলেছি যে, আমরা স্বাধীন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করেছি। তাদের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন নাই। একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তারা (নির্বাচন কমিশনাররা) নিয়োগ পেয়েছেন।
ড. মোমেন বলেন, নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন (ইসি) সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। তারা যাকে ইচ্ছা সাসপেন্ড করতে পারে। এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সাসপেন্ড বা চাকরি থেকে অপসারণ করতে পারে। আর ইসি যদি কোথাও অনিয়ম দেখে তাহলে নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারে।
এ ব্যাখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট কিনা এর উত্তরে তিনি বলেন, আমরা আমাদের ব্যাখ্যা দিয়েছি। আমার মনে হয়, আমাদের ব্যাখ্যায় তারা সন্তুষ্ঠ। যুক্তরাষ্ট্র চায়, কারণ ছাড়া যাতে কাউকে হয়রানি না করা হয়।
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা এর উত্তরে তিনি বলেন, না এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তোমাদের দেশের আইনে তোমাদের দেশের নির্বাচন হবে। আমরা আশা করব, তোমরা এবার একটা জাদু দেখাবা, নির্বাচন এমন ভালো করবা যাতে দুনিয়ার কাছে বলতে পারি।
এদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আজ বিএনপির বৈঠক নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এগুলো খুবই দুঃখজনক। কারণ হলো উনাদের (বিএনপি) বরং তৃণমূলের মানুষের কাছে যাওয়া দরকার। বিদেশিদের কাছে নালিশ করে খুব লাভ হবে না। কারণ বিদেশিরা তো ভোট দেবে না। ভোট দেবে বাঙালিরা। তাদের তৃণমূলের ভোটারদের কাছে যাওয়া উচিত। নালিশ করে খুব সুবিধা হবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।