রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হতেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা। ১৯৫১-র জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) নম্বর ধারার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন সমাজকর্মী আভা মুরালিধরন। এই আইনেই খারিজ হয়েছে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ।
১৯৫১-র আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি অপরাধে দু’বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য সাজাপ্রাপ্তদের জনপ্রতিনিধি থাকার অধিকার সঙ্গে সঙ্গে খারিজ করা যায়। মামলাকারীর দাবি, এভাবে সদস্য পদ খারিজ হলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ভোটারদের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। যা গণতান্ত্রিক রীতির পরিপন্থী। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
মামলাকারীর আইনজীবী দীপক প্রকাশ ও শ্রীরাম পারাক্কত জানিয়েছেন, ১৯৫১-র আইনে একাধিক স্ববিরোধিতা রয়েছে। এই আইনের ৮(৩) নম্বর ধারার সঙ্গে ৮(ক), ৯, ৯(ক) ও ১০ নম্বর ধারার স্ববিরোধিতা সুস্পষ্ট। এই ধারাগুলিতে পরস্পর বিরোধী কথা বলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি, কেন্দ্র বনাম লিলি থমাস মামলার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারী। ১৯৫১-র আইনের ৮(৪) ধারার উপর চলা ওই মামলায় ২০১৩-য় ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
কী রয়েছে ৮(৩) নম্বর ধারায়?
১৯৫১-র আইনের এই ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারী অপরাধে কোনও ব্যক্তির দু’বছর বা তাঁর বেশি সময়ের জন্য জেলের সাজা হলে, রায় ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধিত্বের অধিকার খারিজ করা হবে। পাশাপাশি, ছ’বছর পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না ওই ব্যক্তি।
কী রয়েছে ৮(৪) নম্বর ধারায়?
কিন্তু এই আইনেরই ৮(৪) নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সাজা ঘোষণার দিন অভিযুক্ত ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি থাকলে, সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সদস্য পদ খারিজ করা যাবে না। সেক্ষেত্রে সাজা শোনানোর পর তিন মাস বা উচ্চ আদালতে ওই রায় পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি থাকতে পারবেন ওই ব্যক্তি।
পরবর্তীকালে এই ৮(৪) নম্বর ধারা নিয়েই সর্বোচ্চ আদালতে জনস্বার্থ সংক্রান্ত মামলা করেন লিলি থমাস। ২০১৩-য় সেই মামলার রায়তে এই ধারাটিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
শুধু তাই নয়, নিম্ন আদালতে সাজা কার্যকর হওয়ার দিন থেকেই অভিযুক্ত ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি থাকার অধিকার হারাবেন বলে উল্লেখ করেছিলেন বিচারপতিরা। সেই আইন বলেই রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে বলে জানিয়েছে লোকসভার অধ্যক্ষের সচিবালয়।
২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের সময় কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে মোদী পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধী। এর জেরেই তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার সেই মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করেন সুরাটের জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক এইচ এইচ ভার্মা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।