উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইল জেলায় চলতি বছর রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০ হাজার ৮৯৫ হেক্টর। কিন্তু ৪ হাজার ৩৯০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। ধানের দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষক। এরই মধ্যে জমি থেকে ৮০ ভাগ ধান কাটা শেষ। বাকি ধান দ্রুতই কাটা ও মাড়াই শেষ হবে। ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় আগামী বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ বাড়বে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। নড়াইলের তিনটি উপজেলাতেই এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা দাবি করছেন, বিস্তারিত উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, গত ছয় বছরের মধ্যে চলতি বছরই সর্বোচ্চ ফলন পাচ্ছেন তারা। বাজারে দামও ভালো। কৃষকদের এ উচ্ছ্বাসের প্রতিফলন আসন্ন বোরো মৌসুমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ। নড়াইলের দুর্গাপুর এলাকার একাধিক কৃষক জানান, তারা বংশ পরম্পরায় কৃষক। তাদের অভিজ্ঞতায় গত ছয় বছরের মধ্যে এবার আমনের ফলন বেশি ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দামও বেশ ভালো। প্রতি মণ ধান বর্তমানে ১০০০-১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এ সময় প্রতি মণ ৬৫০-৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।এদিকে দিন দিন শ্রমিক বিরল হয়ে যাওয়ায় কৃষিকাজ অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠছে বলে জানান কৃষকরা। এমনকি বেশি মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান দুর্গাপুরের কৃষক আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, এ জেলায় ধান চাষ বেশি হওয়ায় বিভিন্ন জেলা থেকে কাজের সন্ধানে মানুষ আসে। প্রতি শ্রমিককে তিন বেলা খাবার দিয়েও দৈনিক মজুরি হিসেবে ৪০০-৪৫০ টাকা করে দিতে হয়। তার পরও স্থানীয় শ্রমিক পাওয়া কঠিন। হাড়ভাঙা খাটুনির পর এবার যে ফলন ও দাম পাওয়া যাচ্ছে, তাতে তারা খুশি।নলদী বাজারের ধান ব্যবসায়ী বাবু বেগ জানান, গত বছর আমন ধান ৬৫০-৭৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। চলতি বছর দাম অনেক বেশি। ১০০০-১০৫০ টাকা মণ ধান বিক্রি হচ্ছে।নড়াইল প্রতি বছরই ধানের দাম বৃদ্ধি করার জন্য কৃষকরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেন। কিন্তু এবার দাম এ রকম থাকলে আর কৃষকদের আন্দোলনে নামতে হবে না। ধানের দাম ভালো পাওয়ায় আগামী মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদ অনেক বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক কৃষিবিদ চিন্ময় রায় জনান, নড়াইল জেলায় কিছু জমিতে চলতি বছর আমন ধানে বাদামি গাছ ফড়িংয়ের আক্রমণ হলেও দ্রুত দমন করতে সক্ষম হয়েছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আমন আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। গত কয়েক বছর এক একর (১০০ শতক) জমিতে কৃষকরা ৪০-৪৫ মণ আমন ধানের ফলন পেয়েছেন। কিন্তু চলতি বছর ৫০ থেকে ৫৫ এবং সর্বোচ্চ ৬০ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া, সঠিক যতœ এবং উচ্চফলনশীল জাত ব্যবহারের কারণেই এ ফল পাওয়া গেছে বলে মনে করেন এ কৃষি কর্মকর্তা। তিনি আরো জানান, বর্তমানে জমি থেকে ৮০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে শতভাগ ধান জমি থেকে কৃষকের ঘরে উঠবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।