সকল মেনু

দুই বছরে ১৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান

হটনিউজ ডেস্ক :  এই দুই বছরে  অর্থাৎ ২০১৪ ও ২০১৫ সালে দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে ১৪ লাখ মানুষের। এরমধ্যে অবশ্য আট লাখ নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। বাকি ছয় লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে পুরুষের। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ‘শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬’ এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবন মিলনায়তনে শ্রমশক্তি জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। খবর বাসসের।

এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কে এম মোজ্জামেল হক,বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুদরত ই খোদা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদর সদস্য ড.রুশিদান ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক আমির হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইন্ডাষ্ট্রি এন্ড লেবার উইং এর প্রধান ঘোষ সুব্রত।মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক কবীর হোসেন।

সেমিনারে শ্রমশক্তি জরিপের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন,বাংলাদেশে এখন বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ। ২০১৩ সালের শ্রমশক্তি জরিপেও বেকারের সংখ্যা একই ছিল। বেকারের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী, ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে কোনো ব্যক্তি যদি এক ঘণ্টার জন্য কাজ না করে থাকে এবং এক মাসে কাজ খুঁজে থাকে কিন্তু কাজ না পেয়ে থাকে,তাকে বেকার হিসেবে গণ্য করা হয়। আর ১৫ বছরের তদূর্ধ্ব কোনো ব্যক্তি এক সপ্তাহে এক ঘণ্টার জন্য হলেও মজুরির বিনিময়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিলে তাকে কর্মক্ষম ধরা হয়।

শ্রমশক্তি জরিপে বিবিএস বলেছে,গত দুই বছরে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে পুরষের তুলনায় নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। দুই বছরে শ্রমবাজারে পুরষের অংশগ্রহণ তেমন বাড়েনি,যতটা বেড়েছে নারীর।

এছাড়া তরুণদের বড় একটি অংশ বেকার বসে আছে। অথচ বাংলাদেশ জনসংখ্যার বোনাসকাল ভোগ করছে। যারা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত তাদের মধ্যে বেকারের হার বেশি। এর পেছনে যুক্তি তুলে ধরে কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন,যারা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত তারা তাদের কাঙ্খিত মানের চাকুরি পাচ্ছে না। পছন্দমতো চাকুরি না পাওয়ার কারণে বসে আছে।সে কারণে তারা বেকারের মধ্যে পড়েছে।

জরিপে দেখা গেছে,দেশে এখন ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে কর্মক্ষম জনসংখ্যা দশ কোটি ৬১ লাখ। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে ৫ কোটি ৯৫ লাখ মানুষ। ২৬ লাখ বেকার। আর বাকি চার কোটি ৪০ লাখ মানুষ এখনো শ্রমশক্তির বাইরে রয়েছে। বিবিএস বলেছে, অর্থনীতিকে বিকশিত করতে এবং মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

গত দুই বছরে পুরুষের তুলনায় শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে উল্লেখ করে কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৩ সালের শ্রমবাজারে পুরুষের অংশগ্রহণ ছিল ৮১.৭ ভাগ। দুইবছর পর সেটি বেড়ে উন্নীত হয়েছে ৮১.৯ ভাগে। অন্যদিকে দুই বছর আগে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ ছিল ৩৩.৫ ভাগ। যেটি একলাফে বেড়ে ৩৫.৬ ভাগে উন্নীত হয়েছে।

বিবিএস দেখিয়েছে, ধীরে ধীরে শ্রমবাজারে কৃষি খাত থেকে মানুষ সরে গিয়ে অন্যপেশার দিকে ঝুঁকছে। যার প্রমাণ মিলল জরিপে। তাতে দেখা গেছে,কৃষিতে শ্রমবাজারের অবস্থান এখন ৪২.৭ ভাগে নেমে এসেছে। ২০১৩ সালে যা ছিল ৪৫ ভাগে। এছাড়া শিল্প খাতে ২০১৩ সালে জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ ছিল ২৩ ভাগ। সেটি কমে ২০ ভাগে নেমে এসেছে। তবে সেবা খাতে শ্রমশক্তি বেড়েছে গত দুই বছরে। তাতে এখন সেবা খাতে ৩৭ শতাংশ অংশ্রগ্রহণ রয়েছে।আগে যেখানে ছিল ৩২ ভাগ।

জরিপে দেখা গেছে, সপ্তাহে একজন নারী ২৭ ঘন্টা কাজ করে। আর পুরুষ করে ৯ ঘন্টা। এই কাজ অর্থের বিনিময়ে নয়। এছাড়া বিনা পরিশ্রমে কাজ করছে এক কোটি ৪৯ লাখ। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে এখন কর্মরত আছে ৮৬ ভাগ। বাকি ১৪ ভাগ প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মজুরির মধ্যেও পুরুষ মহিলার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে একজন পুরুষ আয় করে ১৩ হাজার ১০০ টাকা। মহিলারা আয় করে গড়ে ১২ হাজার ১০০ টাকা। অন্যদিকে সপ্তাহে গড়ে ৪৯ ঘন্টা কাজ করে একজন কর্মযুক্ত হওয়া মানুষ। এর মধ্যে পুরুষরা কাজ করে সপ্তাহে ৫৩ ঘন্টা এবং মহিলারা কাজ করে ৩৯ ঘন্টা।এখানে বৈষম্য রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top