হটনিউজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম,ঢাকা: এবার দুধে ফরমালিন মিশাচ্ছে একটি চক্র। রমজান মাসে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে দুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। দীর্ঘ সময়ে যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য দুধের সঙ্গে মিশানো হচ্ছে ফরমালিন। এর সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের ৮ সদস্যকে সোমবার র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত জেল-জরিমানা করেছে।
সূত্র জানায়, সোমবার দিবাগত রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর নবাবপুর রোডের রথখোলা মোড়ে রাজধানীর বৃহত্তম তরল দুধের আড়তে র্যাব-১০ অভিযান চালায়। দুধে ফরমালিন মেশানোর দায়ে ৮ জনকে তাৎক্ষনিকভাবে দণ্ড দেয়া হয় এবং ১ হাজার ২শ লিটার ফরমালিন মেশানো দুধ ধ্বংস করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএইচএম আনোয়ার পাশা। এ অভিযানে র্যাব-১০ এর এএসপি জাকির হোসেন, র্যাবের ফরেন্সিক ল্যাবের রাসায়নিক পরীক্ষক শফিকুল ইসলাম সরকার, মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ মনিরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হল- ভাসানী মিয়া(৬০), আব্দুস সাত্তার(৩৮), সুমন মিয়া(২৪), রূপচান মিয়া(৫০), দিলু মিয়া(৩০), রেজাউল হোসেন(২২), রেজাউল হোসেন(২২), মোশারফ হোসেন(৩৫) ও জহিরুল ইসলাম(৩২)।
দণ্ডপ্রাপ্ত জহিরুল ইসলামের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, সে মুন্সিগঞ্জ থেকে দুধ নিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় এই হাটে আসে। সকালে দোয়ানো দুধ সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাল রাখতে তিনি ফরমালিন মিশিয়ে থাকেন। ফরমালিন না মেশালে এই হাটের কেউ দুধের ব্যবসা করতে পারবে না, সব দুধ নষ্ট হয়ে যাবে বলে জানান।
তাই তারা সবাই ফরমালিন মেশান।এ হাটেই কিছু ব্যক্তি বোতলে ভরে ঘনমাত্রার ফরমালিন নিয়ে আসেন। তাদের কাছ থেকে আধা লিটার বোতল ৩শ’ টাকা করে ফরমালিন কিনে নিয়ে যান। দুধ সংগ্রহের পর পরই সামাণ্য পরিমাণ ঘনমাত্রার ফরমালিন মিশালেই কাজ হয় বলে জানান।
এর আগে মাছ, শাক সব্জিসহ বিভিন্ন পণ্যে ফরমালিন মেশানো হলেও এখন দুধেও মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর এ রাসায়ণিক দ্রব্য।
সূত্র জানায়, রমজান মাসে রাজধানীতে দুধের চাহিদা বাড়ায় আশেপাশের জেলাগুলো থেকে দুধের সরবরাহ বেড়ে যায়। দূর-দূরান্ত থেকে রথখোলা মোড়ে দুধ আসতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
স্থানীয়ভাবে দুধ সংগ্রহের পর সড়ক ও নৌপথে শীতলকরণ প্রক্রিয়া ছাড়া ড্রামে করে ঢাকার পাইকারি বাজারে নিয়ে আসায় দুধ রাস্তায় নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও দুধ যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য দুধে ফরমালিন দিয়ে থাকেন পাইকাররা।
জানা গেছে, এছাড়াও নোংরা পরিবেশ এবং দুধে পানি মেশানোর ঘটনাও ঘটছে। সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে দুধ সংগ্রহের পর একত্রিত করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাহনে পরিবহন করা বাঞ্চনীয় হলেও অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে গতানুগতিক পদ্ধতিতে দুধ প্রক্রিয়াজাত করেন।
ঢাকা জেলার বাইরে থেকে আনা দুধের পাইকারি বিক্রেতারা জানান, স্থানীয়ভাবে দুধ কেনার পর দুধে ফরমালিন মেশানো হয়। তা না হলে দুধ নষ্ট হয়ে তাদের ক্ষতি হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৫ জুলাই একই স্থানে একই আদালত ফরমালিনযুক্ত ৭ মণ দুধ বিনষ্ট করে। তারপরও দুধে ফরমালিন প্রয়োগের প্রবনতা বন্ধ না হওয়ায় শেষ অভিযানে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।