সকল মেনু

আ.লীগ রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিলো

4307_hasan হটনিউজ ডেস্ক: রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে বৈজ্ঞনিক ব্যাখ্যা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, রামপাল প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনে ফ্লাইএ্যাশ ভরে যাবে, সালফার ডাই-অক্সাইডে সুন্দরবণ বিষাক্ত হবে, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডে সুন্দরবনের বাতাস ভারি হয়ে যাবে, পশুর নদীর পানি গরম হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে বলেছেন।’ কিন্তু একজন মেট্রিক ফেল মহিলা (খালেদা জিয়া) যেভাবে বিশেষজ্ঞের মত কথা বলেছেন, তাতে আমরা আতঙ্কিত হয়েছি। কারণ অল্প বিদ্যা ভয়ানক হয়। খালেদা জিয়া এ প্রকল্প নিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য কিছু ভুল তথ্য পরিবেশন করছেন।
শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ অর্থাৎ প্রায় শতভাগে ফ্লাইএ্যাশ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তির ইএসপি সিস্টেমে শতভাগ ফ্লাইএ্যাশ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো বাংলাদেশের সিমেন্ট কারখানায় ব্যবহার করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ৯৬ শতাংশ সালফার ডাই অক্সাইড নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নাইট্রোজেন অক্সাইড, লো নাইট্রোজেন অক্সাইড ব্যবহারের মাধ্যমে এখানে নাইট্রোজেন অক্সাইড নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, যারা  রামপাল নিয়ে আন্দোলন করেন, তাদের সঠিক তথ্য জানা নেই। অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য উপস্থাপন করছেন। অনেকে বলেছেন, পানি ব্যবহার করায় নদী শুকিয়ে যাবে। প্রকৃতপক্ষে শুষ্ক মৌসুমে শুন্য দশমিক শুন্য পাচ ভাগ পানি ব্যবহার করা হবে। বর্ষা মৌসুমে আরো কম। আবার এই পানি কুলিং সিস্টেমে ঠান্ডা করে আবার নদীতে ফেরত দেয়া হবে। সুতরাং ব্যপকভাবে নদীর পানি ব্যবহারের কোনো সম্ভাবনাই নেই।
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, রামপালের বাতাস গিয়ে সুন্দরবনের পরিবেশ বিনষ্ট করবে’। কিন্তু প্রায় ৯০০ ফিট বা ৯০ তলার সমান উচু চিমনি ব্যবহার করা হবে। আর এ প্রকল্পের এরিয়ার বাতাস বছরের ৯ মাস বাতাস সুন্দরবনের বিপরিতে প্রবাহিত হয়। এতে করে কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রামপাল প্রকল্প সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার, ওয়াল্ড হেরিটেজ থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অবিস্থিত। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কোনো কৃষি জমি এবং বসত-বাড়ি উচ্ছেদ করা হয়নি। শুধু ১৫০টি স্থাপনা পূর্নবাসন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের জনগণ বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করেছেন। দিনাজপুরের ফুলবাড়ি, চাপাইনবাবগঞ্জের কানসাটসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের গুলিতে ১৮জন নিহত হয়েছে। খালেদা জিয়া তাঁর আমলে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়াতে পারেন নি। বরং দেশের ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে লোপাট করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিভ্রান্তমূলক কথা বলছেন। তারপরেই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিক বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছিল। তারই অংশ হিসেবে দলের পক্ষ থেকে তাঁর (খালেদা জিয়ার) বক্তব্যের বিপক্ষে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ এবং তথ্য উপাত্তসহ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে এবং কোনো ইস্যু না পেয়ে অন্যের ইস্যু হাইজ্যাক করার চেষ্টা করছেন। অন্যের ইস্যুকে হাইজ্যাক করে রাজনীতিতে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। বিএনপি এখন একটি পরগাছা দলে রুপান্তরিত হয়ে গেছে।
বিএনপির বাইরে যারা রামপাল ইস্যুতে আন্দোলন করছেন তাদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের এ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, আমরা আপনাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কিন্ত অতি উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কখনোই ভালো নয়। ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আবেগপ্রবণ হয়ে বক্তব্য রাখলে জাতি বিভ্রান্ত হয়। আপনাদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা সরকারে কাছে উপস্থাপন করুন। কিন্তু এমন কোনো পরিবেশ সৃষ্টি করবেন না, যাতে আপনাদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে যারা দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিতে চায়, তাদের হাতে হাতিয়ার চলে যাক।
এ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top