নিজস্ব প্রতিবেদক : সততাই শক্তি। সততা থাকলে জোর গলায় কথা বলা যায়। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবেসের আলোচনায় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এবার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগ দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারই অংশ হিসেবে দলের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশ জাতির পিতা আমাদের দিয়ে গেছেন। তার জীবনে তিনি সবকিছু ত্যাগ করেছেন বাংলার মানুষের জন্য। তিনি একটি লক্ষ্য স্থির করে তার সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তার বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ পেয়েছি। আর তার স্বপ্ন ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাবেন।
‘আজ সেই হাসি ফোঁটানোর দায়িত্ব আমাদের উপর। তাই আমাদের সব ধরনের চেষ্টাই হচ্ছে দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য’।
‘বঙ্গবন্ধু সব সময় একটা কথা বলতেন। সেটা হলো- ভিক্ষুক জাতির কোন ইজ্জত থাকে না’ তা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘কাজেই আমরা কারও কাছে হাত পেতে চলতে চাই না। আমরা নিজের পায়ে দাড়াব। মাথা উঁচু করে চলব। আমাদের ওপর যখন অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই অপবাদ আমরা প্রত্যাখান করেছি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন, সততাই শক্তি। সততা থাকলে জোর গলায় কথা বলা যায়। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়। যে আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্যে আমরা পড়তে গিয়েছিলাম তা সততা ছিল বলেই আমরা তা মোকাবেলা করতে পেরেছি।
আজকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মত বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারছি শুধু একটা কারণে। বাঙ্গালি জাতি হিসেবে এটা আমাদের গর্ব। কারণ এটা আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল। তাই বলে ষড়যন্ত্র থেমে যায় বা থেমে গেছে তা কিন্তু না।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বর্তমান সরকারের এক বছর পূর্তিতে সরকারবিরোধী বিএনপি-জামায়াত জোটের আগুন সন্ত্রাসের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ তিনি বলেছিলেন এই সরকার না হটিয়ে তিনি ঘরে ফিরবেন না। তাই ৯৯ দিন ৬৮ জন মানুষ নিয়ে অফিসে বসে থাকল। আর বসে বসে মানুষ পোড়াল। মানুষের জীবন নিয়ে এভাবে খেললে আল্লাহও নারাজ হয় সেটা তার জানা উচিত ছিল।
নাকে খত দিয়ে তাকে ঘরে ফিরতে হয়েছিল। তাই এদের চরিত্রই হচ্ছে অপরাধী, খুনীদের রক্ষা করা, মদদ দেয়া, তাদেরকে নিয়ে চলা। আর নিজেরাও অপরাধ ও খুনের মতো কর্র্মকান্ড করা। এরা তো দেশের কল্যাণে কোন কাজ করতে পারে না কিংবা বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্বে মর্যাদা নিয়ে চলবে এটাও তাদের পছন্দ না।
‘ওই পরাজিত শক্তির পুরনো প্রভুদের এখনো তারা ভুলতেই পারে না। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্য।’
সরকারের টানা দুই মেয়াদে বিভিন্ন গৃহীত পদক্ষেপ ও উন্নয়ন চিত্রের পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে চৈত্র্য মাস সবসময় খরার মাস। এই হাহাকার থাকত একসময় বাংলাদেশে। আজকে আল্লাহর রহমেত সেই হাহাকার নেই। সেই চৈত্রালী মঙ্গাও নাই। দেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ যেন ব্যহত করতে না পারে।’
বাঙ্গালি জাতি বিশ্বসভায় মর্যাদা নিয়ে চলছে, মর্যাদা নিয়ে চলবে। মাথা উচু করে চলবে। আমরা সেইভাবেই এই দেশকে গড়ে তুলব। এই জাতিকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব। জাতির পিতার জন্মদিনে এটাই হোক অঙ্গীকার। তিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আমরাও তার মানুষের জন্য উন্নত সমৃদ্ধ জীবন গড়ে তুলব।
স্বাধীনতার পর সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব কাজই শুরু করে গেছেন। কোন কাজই অধরা রেখে যাননি বলেও উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।