নিজস্ব প্রতিবেদক,হটনিউজ২৪বিডি.কম: ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে সুলভ মূল্যে স্মার্টফোন পৌঁছে দেয়া। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশীয় যেসকল ব্র্যান্ড মোবাইল ফোন উৎপাদনের জন্য এগিয়ে আসবে, তাদেরকে সরকার প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করবে ।
প্রতিমন্ত্রী আজ (১৬ মার্চ, বুধবার) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পরিদর্শন শেষে তার প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে জানান তিনি।
”যেহেতু দেশে ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইলস ও হোম এ্যাপ্লায়েন্স খাতের বিকাশে ওয়ালটন হলো পাইওনিয়ার, তাই দেশবাসীর হাতে সাশ্রয়ী মূল্যে স্মার্টফোন পৌঁছে দিতে ওয়ালটনের ব্যাপক সক্ষমতা রয়েছে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ইতোমধ্যে, ওয়ালটন কারখানায় মোবাইল ফোনের প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণ তৈরির ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে বুধবার দুপুরে প্রতিমন্ত্রী ওয়ালটন কারখানা কমপ্লেক্সে পৌঁছলে তাকে ফুলের তোঁড়া দিয়ে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এসএম শামসুল আলম, ওয়ালটন গ্রুপের পরিচালক এসএম মঞ্জুরুল আলম অভি এবং তাহমিনা আফরোজ তান্না। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এসএম জাহিদ হাসান, মোঃ হুমায়ুন কবীর, সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর লে. কর্ণেল (অব.) আব্দুল কাদের, অপারেটিভ ডিরেক্টর কর্নেল (অব.) এসএম শাহাদাত আলম ও মিডিয়া উপদেষ্টা এনায়েত ফেরদৌস প্রমূখ।
প্রতিমন্ত্রী কারখানা প্রাঙ্গণে পৌছানোর পর ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এ স্থাপিত বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, মেশিনারিজ এবং অত্যন্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে উন্নতমানের ফ্রিজ, এলইডি টেলিভিশন, মাদারবোর্ড, এয়ারকন্ডিশনার, সিলড লিড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারি, সুইচ, সকেটসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রীর উৎপাদন ইউনিট ঘুরে দেখেন।
কারখানা কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী ওয়ালটনের কর্পোরেট ডক্যুমেন্টারি উপেভোগ করেন। এরপর তিনি কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তিনি বলেন, দেশের প্রযুক্তি পণ্য খাতে ওয়ালটন হলো পাইওনিয়ার।ইতোমধ্যে ওয়ালটন একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্য খাতে ওয়ালটনের খুব স্ট্রং ব্র্যান্ড ভ্যালু রয়েছে বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী। ভবিষ্যতে বিশ্ব বাজারেও শক্তিশালী ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করতে ওয়ালটন সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এসএম শামসুল আলম বলেন, এক মহান উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে ওয়ালটন। তা হলো সাশ্রয়ী মূল্যে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য ভোক্তার মাঝে পৌঁছে দেয়া। তিনি বলেন, আমাদের আরেকটি লক্ষ্য হলো উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ওয়ালটন ইতোমধ্যে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছে। দেশেই কম্পিউটার ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, কম্পিউটার মনিটর ও মোবাইল ফোনের প্রধান উপকরণ প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড (মাদারবোর্ড) তৈরির একটি ইউনিট স্থাপন করেছে ওয়ালটন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, খুব শীঘ্রই নিজস্ব কারখানায় তৈরিকৃত উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন মাদারবোর্ড দিয়ে ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের মনিটর, মোবাইল ও ট্যাব উৎপাদন করবে ওয়ালটন।
প্রতিমন্ত্রীকে এসএম মঞ্জুরুল আলম অভি বলেন, মোবাইল ফোন সেট তৈরির কাঁচামাল আমদানিতে সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা পেলে ২০১৭ সালের মধ্যে দেশেই মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরি করবে ওয়ালটন। এক্ষেত্রে তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীকে বিশেষ ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
তিনি বলেন, মোবাইল ফোন তৈরির জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সেটআপ করা হয়েছে ওয়ালটন ফ্যাক্টরীতে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মোবাইল ফোনের প্রধান উপকরণ মাদারবোর্ডে উৎপাদন ইউনিট ও অত্যন্ত দক্ষ প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে শক্তিশালী আরএন্ডডি টিম তৈরি।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও পলিসি, এইচআরএম ও এডমিন বিভাগের প্রধান এসএম জাহিদ হাসান বলেন, বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে উচ্চ গুণগতমানের ফ্রিজ, এলইডি টেলিভিশন, এসিসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য সামগ্রী তৈরি করছে ওয়ালটন। একসময় এসকল পণ্য আমদানি করতে প্রচুর পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে চলে যেতো। কিন্তু, দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে দেশেই তৈরি করছে বিশ্ব মানসম্পন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্য। এই খাতের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ওয়ালটন দেশেই ইলেকট্রনিক্স পণ্য প্রস্তুত করায় দেশীয় মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিও সুসংহত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।