আছাদুজ্জামান,হটনিউজ২৪বিডি.কম : প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পত্রিকা দুটি প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর একটু নিরপেক্ষ ছিল। এর পরে গোটা ২০টি বছর আমার রাজনীতির জীবনে এই পত্রিকাগুলো শুধু আমার বিরুদ্ধে কুৎসাই রটনা করে গেছে, আমার বিরুদ্ধে লিখে গেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেন তাদের শত্রু। … যখন লিখেছে, লেখার শেষে একটা খোঁচা দিয়ে ছেড়েছে। এটাই ছিল ওই পত্রিকার চরিত্র, এবং তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে। ওই দুই পত্রিকার সম্পাদকের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, জরুরি অবস্থার সময় সম্পাদকদ্বয় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’র সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের বিচার হবে।
আজ সোমবার বিকালে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, দুটি পত্রিকা (প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার ) ডিজিএফআইয়ের লিখে দেয়া মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়ে সে সময় রাজনীতি থেকে আমাকে এবং খালেদাকে চিরদিনের জন্য সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম আমাকে দুর্নীতিবাজ বানানোর জন্য বহু চেষ্টা করেছিলেন। তিনি স্বীকারও করেছেন- ডিজিএফআইয়ের চাপে তিনি সেসব নিউজ ছেপেছিলেন। এখন ভুল স্বীকার করায় তাই তার পদত্যাগ করে সাংবাদিকতা থেকে সরে আসা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মাহফুজ আনামকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিএফআই’র সাথে উনার কী সখ্যতা ছিল? উনাকে যা ধরিয়ে দিতেন তাই হুবহু ছাপিয়ে দিতেন। যুদ্ধাপরাধীদের যেমন বিচার হচ্ছে, ঠিক সেভাবে একদিন তাদেরও বিচার হবে। তিনি বলেন, সত্য কখনও চাপা থাকে না। মাহফুজ আনামকে একটা কথাই বলব- অনেক চেষ্টা করেছেন। আপনার পিতৃতুল্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও দুর্নীতিবাজ বানাতে পারেনি। আর আপনি। ২০০৭ সালে এক-এগারোর প্রেক্ষাপট তৈরিতে ষড়যন্ত্রে জড়িতদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ডিজিএফআই দেশ চালাবে না, দেশ চালাবে সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিনা ওয়ারেন্টে তাকে গ্রেফতার করে সলিটারি কনফাইনমেন্টে পাঠানো হয়। গ্রেফতারের সময় তার অসুস্থ স্বামীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়। কারাগারে কাউকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। অসুস্থ হয়ে পড়লেও চিকিৎসা করানো হয়নি। তিনি বলেন, সেখানে স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে তাকে থাকতে দেয়া হয়। ছেঁড়া কম্বলে তার গায়ে এলার্জি উঠে যায়, চোখে সমস্যা দেখা দেয়। এরপর পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিলেও তাকে কারাগারেই পাঠানো হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আওয়ামী লীগ সরকারেরই অর্জন। তিনি বলেন, বাংলা ভাষা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে তার সরকার কাজ করছে। আওয়ামী লীগ সরকারই এই শাসনতন্ত্র উপহার দেয় যেখানে পাকিস্তানের জন্য উর্দু আর পূর্ববঙ্গের জন্য বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়। ২১শে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ছুটি ঘোষণা করা হয় এবং শহীদ মিনার তৈরি করবার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বাজেট দেয়া হয় এবং সেই পরিকল্পনা নিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। তিনি আরও বলেন, ১৯৯৯ সালে ১৭ই নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কোর যে সাধারণ সভা হয় সেখানে ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃতি পায়। বাঙালির আত্মত্যাগের ইতিহাস বিশ্বব্যাপী যেন সবাই জানতে পারে সেই পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।