১৫ অক্টোবর ২০১৫, নিরাপদ নিউজ : সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৯ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল।
আজ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন সংক্রান্ত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি’র চূড়ান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আহম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো কর্মসংস্থান তৈরী এবং আয় বৈষম্য কমিয়ে আনা। পরিকল্পনা মন্ত্রী এ সময় বলেন, “এবারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গড়ে ৭.৪ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দারিদ্র্যের হার ৬.২ ভাগ কমিয়ে বর্তমানের ২৪.৮ থেকে ১৮.৬ ভাগে নিয়ে আসা হবে।
শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি ৯.৬ ভাগ থেকে ১১.৯ ভাগে উন্নীত করা হবে।” সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কৃষিভিত্তিক শিল্পকে প্রাধান্য দেয়া হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, “এবারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কৃষি প্রক্রিয়াজতকরণকে সর্বাধিক সুযোগ দিতে কৃষি প্রক্রিয়াজাত যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানিতে শূন্য কর সুবিধার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।”
এ বারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বাজেটের সাথে সঙ্গতি রেখে পরিকল্পনা দলিলকে তেরটি খাতের আওতায় প্রণয়ন করা হয়েছে।
এ বিষয়টিকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে মন্তব্য করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, “এতে করে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাজেট বরাদ্দের মধ্যে সমন্বয় সাধিত হবে। একই সাথে বাস্তবায়ন কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করা সম্ভব হবে।”
বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিসংখ্যান ভালো নয় এমন এক প্রশ্নের উত্তরে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ভূ- অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উৎকৃষ্ট স্থান। এদেশের মানুষ যারা বিদেশে বিনিয়োগ করছেন তারা একযুগ পর এদেশে বিনিয়োগ করতে চাইলেও সুযোগ পাবেন না।
অন্যেরা ততদিনে সে স্থান পূরণ করে ফেলবে।”
সভায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান দেশে আয় বৈষম্য কমে আসছে উল্লেখ করে বলেন, “বর্তমানে রংপুর অঞ্চলে শ্রম মজুরী ২০১৩/১৪ সালের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এটা এ নির্দেশনা দেয় গ্রাম ও শহরের মজুরী দিনে দিনে কমে আসছে।”
মশিউর রহমান আরও বলেন, “এদেশের টাকা যত বেশী এদেশেই ব্যবহৃত হবে জনগণ ততবেশি এর সুফল পাবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এ বিষয়ে স্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকতে হবে।
একই সাথে আমাদের স্থলভাগ ও সমুদ্র থেকে বিভিন্ন খনিজ সম্পদ উত্তোলন ও ব্যবহারের স্পষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে। অন্যদিকে সারাদেশে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক কার্যক্রম হাতে নিয়ে জনগণকে প্রশিক্ষিত করে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানী করতে হবে।”
আজকের সভায় জানানো হয় সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সামাজিক ব্যয়ের হার বর্তমানের জিডিপি’র দুই ভাগ থেকে ২.৩ ভাগে উন্নীত করা হবে। একই সাথে গবেষণা ব্যয় জিডিপি’র ০.৬ ভাগ থেকে ১ ভাগে বৃদ্ধি করা হবে।
এ স্টিয়ারিং কমিটির সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ও সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম ,বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লা আল মামুনসহ সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।