ঢাকা, ১০ অক্টোবর ২০১৫, নিরাপদনিউজ : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, প্রকৃতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই প্রকৃতির উপর সেচ্ছাচারিতা, যেমন-বন উজার, পাহাড় ধ্বংস ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলা ও প্রকৃতিকে রক্ষায় শেখ হাসিনার সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। যা বিশ্বব্যাপি প্রশংসিত হয়েছে। তারই স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ আমাদের প্রধানমন্ত্রী অর্জন করেছেন।
আজ নটরডেম কলেজ মিলনায়তনে দু’দিনব্যাপি ‘৬ষ্ঠ জাতীয় প্রকৃতি মেলা ২০১৫’র সমাপানী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
নটরডেম কলেজ নেচার স্টাডি ক্লাবের সহযোগিতায় ইন্টারন্যশনাল ইউনিয়ন কনজারভেশন নেচার (আইইউসিএন) এই প্রকৃতি মেলার আয়োজন করেছে।
এতে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রকৃতিকে রক্ষায় তাদের উদ্ভাবনী নানা প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়েছে। ছিল প্রকৃতির উপর ধারণকৃত আলোকচিত্র, চারা গাছ ও বিভিন্ন ধরণের বইয়ের প্রদর্শনী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লক্ষ্যেই নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতি বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে শেখ হাসিনার সরকার নতুন কারিকুলামের পাঠ্যপুস্তকে প্রকৃতি বিষয়ক অধ্যায় অন্তর্ভূক্ত করেছে।
জ্ঞান-বিজ্ঞানে আমাদের শিক্ষার্থীরাও বিশ্বমানের হয়ে গড়ে উঠবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারাই গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন থিউরি আবিস্কার করবে। বাংলাদেশের প্রকৃতি রক্ষায় তারাই নতুন জ্ঞান বিতরণ করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আর্থিকভাবে বিশ্বে আমাদের দেশ গরীব হতে পারে, কিন্তু নতুন প্রজন্মের মেধার দিক দিয়ে আমাদের দেশ গরীর নয়।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের মেধা যেন দেশ ও সমাজ উন্নয়ন এবং প্রকৃতি রক্ষায় ব্যবহার করা যায়, সেভাবেই নিজেদের গড়ে তুলবে। তবে শুধু জ্ঞান দিয়ে মাথা ভর্তি করলে চলবে না সেই সঙ্গে নৈতিক শিক্ষাও গ্রহণ করতে হবে। যেন ওই জ্ঞান দেশ ও সমাজের কল্যাণে ব্যবহার হয়।
শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শতকরা ৯৯ ভাগেরও বেশি শিশু স্কুলে যাচ্ছে। তাদের সবাইকে এখনও ধরে রাখতে না পারলেও ৯৭ ভাগকে ধরে রাখতে সরকার সক্ষম হয়েছে। শিগগিরই এটা শতভাগে উন্নীত হবে বলেও তিনি জানান।
কারিগরি শিক্ষাকে বিগত সময়ে হেয় করা হতো উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬ সালে যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে, তখন মোট শিক্ষার্থীর ১ ভাগেরও কম শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় পড়াশুনা করছে।
তিনি বলেন, কিন্তু দেশের উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। তাই তাদের সরকার এ নানা ফলপ্রসু উদ্যোগ গ্রহণ করায় বর্তমানে মোট শিক্ষার্থীর ১৩% কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছে। তাদের জন্য বিদেশ থেকে শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে বর্তমান সরকার শিক্ষার প্রসারে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার ড. হেমন্ত পিউস রোজারিও।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন সংরক্ষক ড. তপন কুমার দে এবং আইইউসিএন’এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইসতিয়াক উদ্দিন আহমেদ।-বাসস
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।