সকল মেনু

নিরাপত্তা প্রশ্নে অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

নিরাপত্তা প্রশ্নে অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
নিরাপত্তা প্রশ্নে অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

নিরাপদনিউজ ডেস্ক, ০৩ অক্টোবর ২০১৫ : ঝুঁকি বিবেচনা করে পশ্চিমা দেশগুলো বিশ্বের দৃশ্যত নিরাপদ দেশগুলোর যে মানচিত্র তৈরি করেছে তাতে রয়েছে বাংলাদেশও। নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে যে অস্ট্রেলিয়া তার ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করছে তারই পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দপ্তরের হালনাগাদ ভ্রমণ পরামর্শে অস্ট্রেলীয়দের বাংলাদেশে আসতে নিষেধ করা হয়নি। বরং অস্ট্রেলীয়দের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আফগানিস্তান, বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, চাদ, ইরাক, লিবিয়া, মালি, নাইজার, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেনের মতো ১৩টি দেশ সফরের ক্ষেত্রে। এর চেয়ে কম মাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ সৌদি আরব, পাকিস্তান, বাহরাইন, মিসর, ইরান, লেবাননসহ ১৭টি দেশ সফরের ক্ষেত্রে ‘রিকনসিডার ইয়োর নিড টু ট্রাভেল’ (ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা পুনর্বিবেচনা করুন) পরামর্শ রয়েছে অস্ট্রেলীয়দের জন্য।
বাংলাদেশে কথিত নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ে গত সপ্তাহে পশ্চিমা দূতাবাসগুলোর সতর্কতামূলক উদ্যোগে হুলস্থুল পরিস্থিতির মধ্যেই এই ভিন্ন চিত্র মিলেছে ওই দেশগুলোর ভ্রমণবার্তায়।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রশ্নে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৩০তম। নিরাপত্তার দিক থেকে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্স ও ভারতের চেয়েও ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা জরিপকারী প্রতিষ্ঠান গ্যালাপের এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘বৈশ্বিক আইনশৃঙ্খলা সূচক-২০১৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে গত ২৪ সেপ্টেম্বর। জরিপে ৮৯ স্কোর পেয়ে তালিকায় সিঙ্গাপুর সবার ওপরে রয়েছে। আগের বছরও দেশটি শীর্ষে ছিল। তালিকায় ৩০ নম্বরে থাকা বাংলাদেশের স্কোর ৭৮। জাপান ও নিউজিল্যান্ডের স্কোরও তাই। ৩৮ নম্বরে থাকা যুক্তরাষ্ট্র এবং ৩৯ নম্বরে থাকা অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৭৭। ৪৪ নম্বরে থাকা ফ্রান্সের স্কোর ৭৫। ৬৩ নম্বরে থাকা ইতালির স্কোর ৭১ এবং ৭৭ নম্বরে থাকা ভারতের স্কোর ৬৭।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া তার নাগরিকদের বাংলাদেশের বিষয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ‘এক্সারসাইজ আ হাই ডিগ্রি অব কশান’ বা উচ্চমাত্রার সাবধানতা অবলম্বন করার যে পরামর্শ দিয়েছে তা ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় ‘ভ্রমণ করবেন না’ ও ‘ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা পুনর্বিবেচনা করুন’ পরামর্শের চেয়ে কম। অস্ট্রেলিয়ার এমন পরামর্শ বলবৎ আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ অ্যাঙ্গোলা, বেনিন, বলিভিয়া, ব্রাজিল, মিয়ানমার, ক্যামেরুন, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, আইভরি কোস্ট, জিবুতি, ডমিনিক প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েডর, এল সালভাদর, গ্যাবন, গুয়াতেমালা, গায়ানা, হাইতি, হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া, ইসরায়েল, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীর, জ্যামাইকা, জর্দান, কেনিয়া, কসভো, কুয়েত, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, লেসেথো, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, মেক্সিকো, মরক্কো, মোজাম্বিক, নিকারাগুয়া, পানামা, পাপুয়া নিউ গিনি, প্যারাগুয়ে, পেরু, ফিলিপিন্স, রাশিয়া, রুয়ান্ডা, সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা, তাজিকিস্তান, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, তিমুর লেস্তে, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, তুরস্ক, উগান্ডা, ইউক্রেন, উজবেকিস্তান, ভেনিজুয়েলা ও জিম্বাবুয়ে অর্থাৎ বিশ্বের অন্তত ৫৯টি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে। পরামর্শের তালিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর নামও বাদ যায়নি। ওই দেশগুলোসহ মোট ৮৩টি রাষ্ট্র বা ভূখণ্ড সফরের সময় অস্ট্রেলীয়দের ‘সাধারণ মাত্রার সাবধানতা’ অবলম্বন করার কথা বলছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। ওপরের চারটি নিরাপত্তা পরামর্শ থেকে কোনো দেশই বাদ যায়নি। বরং ওই চারটি নিরাপত্তা ঝুঁকির মাত্রায় (উচ্চ থেকে নিম্ন) বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৩৯টি দেশের বিষয়ে ‘ট্রাভেল ওয়ার্নিং’ এবং ছয়টি দেশের বিষয়ে ‘ট্রাভেল অ্যালার্ট’ রয়েছে। এর কোনোটিতেই বাংলাদেশ নেই। ‘ট্রাভেল ওয়ার্নিং’-এর মেয়াদ কয়েক বছর পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত অস্থিতিশীল সরকার, গৃহযুদ্ধ, ভয়াবহ অপরাধ বা সহিংসতা অব্যাহত থাকা কিংবা প্রায়ই সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ‘ট্রাভেল ওয়ার্নিং’ দিয়ে মার্কিন নাগরিকদের সে দেশে না যেতে জোরালোভাবে উৎসাহিত করা হয়। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, সৌদি আরবের মতো দেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ট্রাভেল ওয়ার্নিং’ রয়েছে। অন্যদিকে ‘ট্রাভেল অ্যালার্ট’ হয় স্বল্প মেয়াদে। নির্বাচন, বিক্ষোভ, সমাবেশ, সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব এসব কারণে সাধারণ ‘ট্রাভেল অ্যালার্ট’ দেওয়া হয়। তিউনিসিয়া, তানজানিয়ার মতো দেশের ক্ষেত্রে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অ্যালার্ট রয়েছে।
এর বাইরেও বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলো তার নাগরিকদের নিয়মিত স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য দিয়ে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়। এমনকি নিরাপত্তাজনিত কারণে দূতাবাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম সীমিত করার নজির রয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার এবং গুলশানে তার কার্যালয় তল্লাশির বিষয়ে আদালতের নির্দেশনার প্রেক্ষাপটে গত ৪ মার্চ মামলার হাজিরার দিনে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জরুরি কাজ ছাড়া অন্য সব স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রাখে। এমনকি সেদিন সব ভিসা ও কনস্যুলার সেবার অ্যাপয়েন্টমেন্টও স্থগিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো অন্যান্য পশ্চিমা দেশের দূতাবাসগুলো বাংলাদেশ ভ্রমণবিষয়ক পরামর্শে যেকোনো সময় রাজনৈতিক উত্তেজনা, সংঘাত, সহিংসতার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছে। এ ছাড়া সব সময় সতর্ক থাকা, হরতাল-অবরোধ-ধর্মঘট অনুযায়ী ভ্রমণ পরিকল্পনা সাজানো, হরতাল-অবরোধ-মিছিল-সমাবেশের সময় গুলশানে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়সংলগ্ন ৮৬ নম্বর সড়ক, নয়াপল্টন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের আশপাশের এলাকা পরিহার করার কথা বলা হয়। কয়েক বছর ধরেই এমন পরামর্শ-বার্তা দেখা যায়।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বিশ্বের মোট ২২৫টি দেশ ও ভূখণ্ড ভ্রমণের বিষয়ে ভ্রমণ পরামর্শ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার হালনাগাদ করা পরামর্শে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে সন্ত্রাসের উচ্চমাত্রার ঝুঁকি আছে। বিশেষ করে এ সময় আপনাদের বিশেষ সজাগ থাকা উচিত। নিজেকে গুটিয়ে রাখুন এবং পশ্চিমারা সমবেত হয় এমন স্থান যেমন হোটেল বা সম্মেলন কেন্দ্রে আপনাদের উপস্থিতি সীমিত রাখুন।’ ওই পরামর্শে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলশানে ইতালির এক নাগরিক হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়। যুক্তরাজ্যের ওই পরামর্শে আরো বলা হয়েছে, ‘প্রতিবছর প্রায় ৭৫ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক বাংলাদেশ সফর করে। বেশির ভাগ সফরই কোনো ঝামেলা ছাড়াই সম্পন্ন হয়।’
এদিকে যুক্তরাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ক্ষেত্রেও ব্রিটিশ নাগরিকদের যুক্তিসংগত আগাম সতর্কতামূলক উদ্যোগ নেওয়ার ভ্রমণবিষয়ক পরামর্শ রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসের সাধারণ ঝুঁকি রয়েছে। বিদেশিদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে হামলা হতে পারে।
কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়ার মতো ১৩টি দেশে তার নাগরিকদের না যাওয়ার এবং পাকিস্তানসহ ১৪টি দেশে খুব প্রয়োজন ছাড়া না যাওয়ার পরামর্শ দেয়। কানাডা গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে তার নাগরিকদের যে ‘উচ্চমাত্রার সতর্কতা’ অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে তা বর্তমানে ভারত, মিয়ানমারসহ বিশ্বের প্রায় ৯৩টি দেশ ও অঞ্চল সফরের ক্ষেত্রে বহাল রেখেছে।
জানা গেছে, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের নাগরিকদের প্রতিনিয়তই পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিরাপত্তা বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য দিয়ে থাকে। নাগরিকরা সে অনুযায়ী তাদের বিদেশ ভ্রমণ পরিকল্পনা সাজাবে বলেই আশা করা হয়। সতর্কবার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্য, নাগরিকদের আগে থেকেই সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সজাগ রাখা যাতে কোনো অঘটন ঘটলে কেউ বলতে না পারে যে তাদের জানানো হয়নি।
এমনকি পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশও বিভিন্ন সময় নাগরিকদের সুনির্দিষ্ট দেশ সফরের বিষয়ে সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে। যেমন নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে বর্তমানে বাংলাদেশিদের লিবিয়া যাওয়ার ওপর এ দেশের সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, যখন কোনো দেশে অতিমাত্রায় নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয় তখন পশ্চিমা দেশগুলো তাদের নাগরিকদের সেই দেশ সফর না করার পরামর্শ দেয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে নাগরিকদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার এবং দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট মোটেও এমন নয়। তবে সন্ত্রাসের কোনো ভৌগোলিক সীমা নেই। সন্ত্রাসের ঝুঁকি সবখানেই আছে। বরং বাংলাদেশ যেভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। এবারের বার্তাগুলোতে বাংলাদেশে পশ্চিমা নাগরিকদের সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশে পশ্চিমা দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে সতর্কবার্তার মধ্যেও স্বাচ্ছন্দ্যে সফর করেছে চার সদস্যের ব্রিটিশ সংসদীয় প্রতিনিধিদল। ওই দলের নেতা অ্যানি মেইন গত বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ঢাকা ও সিলেট সফর করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছি এবং অনেক শপিং মলে গিয়েছি। কিন্তু আমরা সেখানে কোনো ঝুঁকি অনুভব করিনি।’
তবে কথিত নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে সতর্কতার মধ্যে পূর্বনির্ধারিত ঢাকা সফর স্থগিত করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হুগো শায়ার। ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের মুখপাত্র ফৌজিয়া ইউনিস-সুলেমান অবশ্য এ প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘হালনাগাদ সর্বশেষ ভ্রমণ পরামর্শ সত্ত্বেও এ সপ্তাহে ব্রিটিশ সরকারের এক মন্ত্রীর সফর পরিকল্পনা চলছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ মুহূর্তে সফরটি স্থগিত করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই সফরটি হবে।’
জঙ্গিরা বাংলাদেশে পশ্চিমা স্বার্থে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে থাকতে পারে- এমন ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য থাকার কথা বলে গত সপ্তাহের শুরুর দিকে পশ্চিমা দূতাবাসগুলো তাদের নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়। এরই মধ্যে ঢাকায় কূটনৈতিক এলাকায় একজন ইতালীয় নিহত হওয়ার পর দূতাবাসগুলো সতর্কবার্তা আরো জোরদার করে। বিদেশি স্কুল, ক্লাব বন্ধ রাখা হয়, স্থগিত করা হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী গি্লটার পার্টি।
জানা গেছে, ২৮ সেপ্টেম্বর ইতালির নাগরিক সিজারে তাভেল্লা হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এর দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। এতে নতুন শঙ্কা দেখা দেয়। বিদেশি দূতাবাসগুলো এর সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা শুরু করে।
সতর্কবার্তা সরিয়ে ফেলেছে ইতালি দূতাবাস: ২৯ সেপ্টেম্বর ইতালি দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে সিজারে তাভেল্লাকে হত্যার উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়। আইএসের ওই হত্যার দায় স্বীকারের বিষয়টিও এখনো যাচাই করা যায়নি। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর ইতালি দূতাবাস তার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বার্তায় আইএস প্রসঙ্গ উল্লেখ না করে বলে, সিজারে তাভেল্লা হত্যার বিষয়টি এখনো পুলিশ কর্তৃপক্ষের তদন্তাধীন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইতালি দূতাবাস তার নাগরিকদের চলাফেরা সীমিত করতে, বিশেষ করে হেঁটে চলাচলের সময় জনসমাগমের স্থানে পারতপক্ষে না যাওয়া এবং বিদেশিরা সচরাচর যায় এমন স্থানগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইতালি দূতাবাস ১ অক্টোবর সেই বার্তাটিও সরিয়ে ফেলেছে।
মার্কিন দূতাবাসের ‘শেল্টার-ইন-প্লেস’ আদেশ প্রত্যাহার: যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসও তার কর্মীদের ‘শেল্টার-ইন-প্লেস’ (বাড়িতে অবস্থান করা) আদেশ প্রত্যাহার করে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
গত সপ্তাহে সতর্কবার্তা জারির পরও পশ্চিমা কূটনীতিকরা কূটনৈতিক এলাকার অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দিয়েছেন। এমনকি পশ্চিমা রাষ্ট্রদূতদের কেউ কেউ সচিবালয়ে গিয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন। সরকার কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
আরব কূটনীতিকের মতে, বিশ্বের অনেক স্থানের চেয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ : জানা গেছে, পশ্চিমাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিপরীত চিত্র ছিল পশ্চিমা নয় এমন দেশগুলোর দূতাবাসগুলোতে। একটি আরব দেশের রাষ্ট্রদূত গত বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, তাঁর মতো অনেক কূটনীতিকের মধ্যে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। বিভিন্ন দেশে কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে তারা মনে করেন, বিশ্বের অনেক স্থানের চেয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ।
অন্য এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে ডামাডোল দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। যিনি নিহত হয়েছেন তিনি কূটনীতিকও নন, একজন সাধারণ বিদেশি। হতে পারে, ঘটনাটি কূটনৈতিক এলাকার কাছাকাছি ঘটেছে। কিন্তু তাও দূতাবাস থেকে দূরে। আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলোচনায়ও এ বিষয়ে তেমন কোনো কথা হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা বিশ্বের কোথায় ঘটে না? আরব বিশ্বের অনেক নেতা ইউরোপের সুরক্ষিত দেশগুলোতে হত্যার শিকার হয়েছেন।’-বাংলানিউজ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top