সকল মেনু

সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে ঈদুল আযহা

সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে ঈদুল আযহা
সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে ঈদুল আযহা

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫, নিরাপদ নিউজ : আজ ১০ জিলহজ, শুক্রবার পবিত্র ঈদুল আযহা। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ত্যাগের মহিমায় উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আযহা।

আজ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাতটায়। এরপর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে সকাল আটটায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে দেশের মুসলিম সম্প্রদায় তাদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা উদযাপন করছে। ঘরে ঘরে ত্যাগের আনন্দে মহিমান্বিত হচ্ছে মন।

প্রায় চার হাজার বছর আগে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়।

হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকেন। তবে ঈদের পর দুই দিন, অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানি করার ধর্মীয় বিধান রয়েছে।

আজ সকালে ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিরা স্থানীয় ঈদগাহ বা মসজিদে সমবেত হন। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে নিজের পাপমোচন এবং পরিবার-পরিজন, দেশ ও মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া চেয়ে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন।

নামাজ শেষে অনেকেই যান রাজধানীর বিভিন্ন কবরস্থানে স্বজনের কবর জিয়ারত করতে। অশ্রুসিক্ত হয়ে চিরকালের জন্য চলে যাওয়া স্বজনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে করজোড়ে মোনাজাত করেন তারা।

এরপর হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ভেতরের পশুত্বকে পরিহার ও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করেন তারা।

প্রতিবারের মতো এবারও দেশের বৃহত্তম ঈদের জামাত হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। রাজধানী ঢাকায় হাইকোর্ট-সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, সাংসদ, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকেরাসহ সর্বস্তরের জনগণ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। জাতীয় ঈদগাহে নামাজ শেষে দেশের অব্যাহত শান্তি ও উন্নয়ন, জনগণের কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর ঐক্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত হয়।

পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

ঈদুল আযহা উপলক্ষে সারা দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কলেমা ও ঈদ মোবারকখচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

আজ দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশুসদন, ছোটমণি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র ও সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।

শাওয়াল মাসের চাঁদ ওঠা নিয়ে ঈদুল ফিতরের দিন নির্ধারিত হয়। এ কারণে একেবারে রোজার শেষাবধি ঈদের দিনটি নিয়ে একরকমের অনিশ্চয়তা থাকে। তবে ঈদুল আযহা যেহেতু জিলহজ মাসের ১০ তারিখেই নির্ধারিত, তাই জিলহজের চাঁদ ওঠার পর হাতে বেশ খানিকটা সময় নিয়েই লোকে ঈদের প্রস্তুতি নিতে পারেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top