ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫, নিরাপদনিউজ ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিশেষ করে ধনী দেশগুলোর উচিত বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া বলে মন্তব্য করেছেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরাঁ ফ্যাবিউস।
তিনি বলেন, “আপনারা কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী নন, অথচ ফলটা আপনাদেরই ভোগ করতে হয়,” ঢাকা সফরের শেষ কর্মসূচিতে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ধনী দেশগুলোকে তাদের দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্রমাগত তাগিদের মধ্যে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য করলেন।
সোমবার বিরল এক যৌথ সফরে ঢাকায় আসেন ইউরোপের প্রভাবশালী দুই রাষ্ট্র ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্যাবিউস এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টেইনমায়ার।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়ে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা ফ্রান্সের জন্য খুই গুরুত্বপূর্ণ।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “পুরো বিশ্বের জন্যই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ এবং পরবর্তীতে এর প্রভাব মোকাবেলায় সবাইকে আংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।”
বারিধারায় দুই দেশের যৌথ দূতাবাসের নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও তারা দেখা করেন।
যৌথ দূতাবাস উদ্বোধন করে ফ্যাবিউস বলেন, ঢাকায় প্রথম ফ্রাঙ্কো-জার্মান দূতাবাসের অর্থ হচ্ছে ইউরোপের এই দুটি শক্তি বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে চায়।
নতুন এই যৌথ দূতাবাস তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তাদের চিন্তায় অর্থনৈতিক সম্ভাবনাসহ অনেকগুলো বিষয়ই কাজ করেছে বলে জানান ফ্যাবিউস।
তিনি বলেন, ফ্রান্স ও জার্মানির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি ‘সহযোগিতার এক নতুন দিগন্ত’, যার শুরু ১৯৬৩তে এলিসি চুক্তির মধ্য দিয়ে। অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ মানুষের প্রত্যয়ী বৈশিষ্ট্যের কথা তুলে ধরে ফ্যাবিউস বাংলাদেশকে তুলনামূলকভাবে নতুন ও বিশাল সম্ভাবনার একটি দেশ বলে অভিহিত করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফ্রান্স ও জার্মানির একটি ‘বিশেষ ইস্যুতে’ ঐক্যমত্যের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এটা বেশ ভালো যে ইউরোপ আপনাদের পাশে থাকতে পারবে।
“ফ্রান্স ও জার্মানির মত দুটি বড় রাষ্ট্র দেখাচ্ছে যে আমার আপনাদের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়তে চাই।”
ইত্তিহাদ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইটে রাতে ঢাকা ছাড়েন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তার সফরসঙ্গীর মঙ্গলবার সকালে বার্লিন রওনা হবেন।
ঢাকায় প্রথম ফ্রাঙ্কো-জার্মান দূতাবাসের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রভাব বাংলাদেশে কীভাবে পড়ছে, তা দেখা এই সফরের উদ্দেশ্য।
দিনব্যাপী সফরে পটুয়াখালীতে জার্মান অর্থায়নে তৈরি সাইক্লোন শেল্টারটি উদ্বোধনের পরিকল্পনা থাকলেও ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে তা বাদ দিতে হয়েছে।
পরিবর্তে তারা সাভারের সাঙ্গু নদীতে দুই ঘণ্টা নৌবিহার করেছেন। পরে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে এক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।