সকল মেনু

সাংবাদিক নির্মল সেন এর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

fdb531af-20bd-4cf9-b373-cc45db59e3b5 হটনিউজ ডেস্ক: কমরেড নির্মল সেন স্মরণসভা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অজয় রায় বলেছেন, দেশে সরকারের ছত্রছায়ায় মৌলবাদের লালন পালন চলছে। একই সঙ্গে দেশে আজকে সীমাহীন দুঃশাসনও চলছে।

শুক্রবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বাম রাজনীতির পুরোধা কমরেড নির্মল সেনের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

কমরেড নির্মল সেন স্মরণ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. অজয় রায় সভাপতির বক্তব্যে বলেন, দেশে একের পর এক ব্লগার হত্যা হচ্ছে। কিন্তু এখনও কোনো হত্যার বিচার হয়নি। তাই আজকে এই সময়ে নির্মল সেনের খুব প্রয়োজন ছিল। দেশে কারো কোনো নিরাপত্তা নেই। নির্মল সেনের ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ কলামের চাহিদা আজকে আবার দেখা দিয়েছে।

এ স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের আহ্বায়ক কমরেড সিদ্দিকুর রহমান, সিপিবির নেতা সামছুজ্জামান সেলিম, বাসদ মার্কসবাদীর নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বিপ্লবী ওর্য়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন এর কার্যকরী সভাপতি ও শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল এর নেতা মোসাদ্দেক হোসেন স্বপন, বাসদ নেতা বজলুল রশীদ ফিরোজ, সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেম হোসেন প্রমুখ। এ সভা পরিচালনা করেন বাসদ নেতা মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন।

এ স্মরণ সভা শুরুর আগে কমরেড নির্মল সেনের অস্থায়ী বেদীতে পুষ্পুমাল্য অর্পণ করেন স্মরণসভা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক অজয় রায়, সদস্য সচিব কমরেড সিদ্দিকুর রহমানসহ অন্যান্য জাতীয় নেতৃবৃন্দ। পরে শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল, সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, সিপিবি, বাসদ, বিপ্লবী ওর্য়াকার্স পার্টি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, কোটায়ালীপাড়া সমিতি, ঢাকাস্থ কান্দি ইউনিয়ন যুব সংঘ।

বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের এদিনে রাজধানী ঢাকায় ৮৩ বছর বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন। নির্মল সেন ১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত। মার নাম লাবণ্যপ্রভা সেনগুপ্তা। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন পঞ্চম। নির্মল সেনের বাবা সুরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক ছিলেন।

তারা বলেন, দেশ ভাগের পরে নির্মল সেনের বাবা-মা অন্য ভাই-বোনদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতা চলে যান। জন্মভূমির প্রতি অকুণ্ঠ ভালবাসার কারণে তিনি এদেশে থেকে যান। নির্মল সেন বড় হয়েছেন ঝালকাঠি জেলায় তার পিসির বাড়িতে। তিনি ঝালকাঠি জেলার কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে ১৯৪৪ সালে মাত্র
১৪ বছর বয়সে এসএসসি পাস করেন। পিসির বাড়িতে যাওয়ার আগে নির্মল সেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে এক বছর লেখাপড়া করেন। তিনি বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও মাস্টার্স পাস করেন।

তারা আরো বলেন, স্কুলে পড়াকালীন নির্মল সেনের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের মাধ্যমে। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আরএসপিতে যোগ দেন। দীর্ঘ দিন তিনি ‘শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল’-এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে।

তারা বলেন, ১৯৫৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মধ্য দিয়ে নির্মল সেন তার সাংবাদিক জীবন শুরু করেন। এরপর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন।

লেখক হিসেবেও নির্মল সেনের যথেষ্ট সুনাম রযেছে। তার লেখা ‘পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ’, ‘মানুষ সমাজ রাষ্ট্র’, ‘বার্লিন থেকে মস্কো’, ‘মা জন্মভূমি’, ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’, ‘আমার জীবনে ৭১-এর যুদ্ধ’, ‘আমার জবানবন্দি’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top