সকল মেনু

সংগ্রাম, রুবেল-ফজলুলের

indexসাখাওয়াত হোসেন সাখা, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: রুবেল হোসেন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবে আর জেএসসি পরীক্ষা শেষ করেছে ফজলুল হক। দু’জনেই দিনমজুর ঘরের সন্তান এবং একই গ্রামে বসবাস করে। রুবেল হোসেন এর দু’পা বাঁকানো। স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারে না। আর বৈদ্যুতিক তারে স্পৃষ্টে হয়ে ফজলুল হকের বাম হাত হারাতে হয়েছে। এ কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চেয়ে তাদের দু’জনের লেখাপড়ার সংগ্রাম একটু আলাদা। দু’জনেই রৌমারী উপজেলার কোমরভাঙ্গি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

উপজেলার বাইমমারী গ্রামের দিনমজুর আব্দুল মান্নানের ছেলে রুবেল হোসেন। আব্দুল মান্নান বছরের ৯ মাসই শ্রম বিক্রি করে থাকে দেশের বিভিন্ন জেলায়। জমাজমি বলতে শুধুমাত্র বাড়ির ভিটেটুকু।

আব্দুল মান্নান জানান, বয়স যখন দুই বছর তখন রুবেলের প্রচন্ড জ্বর হয়। গ্রামের মানুষ কইছিল এটা টাইফয়েড জ্বর। এজন্য মেলা কবিরাজি চিকিৎসা করছিলাম। সুস্থ হলেও তার দু’টি পা-ই বাঁকা কোকরানো হয়ে যায়। প্রথম অবস্থায় সে হাঁটতে পারত না। এখন হাঁটতে পারে। স্কুলে লেখাপড়ার খুব ইচ্ছা তার। এজন্য আমার শত কষ্টের মাঝেও তাকে পড়ার খরচ দিছি।

আব্দুল মান্নান আরো বলেন, ‘ভালো ডাক্তার দেখানোর জন্য রুবেল একবার ঢাকায় নিয়া গেছিলাম। ডাক্তাররা কইছে অপারেশন করলে তার পা ভালা অবো। কিন্তু এর জন্য দেড় থেকে দুই লাখ ট্যাহা খরচ অবো। এত ট্যাহা পামু কই। ট্যাহার অভাবে অপারেশন করা হয়নি।’

অপরদিকে, ফজলুল হকের বাবার নাম জালাল উদ্দিন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ৭ বছর আগের কথা। বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ফজলুল হক মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরে চিকিৎসরা তাকে বাঁচাতে বাম হাত কেটে ফেলে। এর ফলে ফজলুলকে এক হাত দিয়েই সব কাজ করতে হয়।

প্রতিবন্ধী রুবেল আর ফজলুল হকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল তাদের লেখাপড়া করার খুব আগ্রহ। এ কারণে কোনো দিনও তারা দু’জন স্কুলে অনুপস্থিত থাকেনি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, দু’জনেই লেখাপড়ায় খুব ভালো। কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। এর ফলে তাদের লেখাপড়ায় যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য স্কুলের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতা করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top