সকল মেনু

দেশে এই প্রথম যশোরে শুরু হয়েছে বাণিজ্যিকভাবে খেজুর গাছের চাষ

indexযশোর প্রতিনিধি: খেজুর রসের জন্য যশোরের খ্যাতি দীর্ঘদিনের। নানা কারণে শত বছরের এই ঐতিহ্য ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে। নতুন উদ্যোগ নিয়ে এখন আশার আলো দেখাচ্ছে কৃষি বিভাগ, সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দেশের মধ্যে এই প্রথম যশোরে শুরু হয়েছে বাণিজ্যিকভাবে খেজুর গাছের চাষ। বাণিজ্যিকভাবে এখন জেলায় চারা ও বীজ লাগানো হচ্ছে, তৈরি করা হচ্ছে খেজুর বাগান। এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে বেনাপোল, মাটিপুকুর, কাগজপুকুর, জিরেনগাছা, শাখারীপোতা, বারোপোতা, রঘুনাথপুর ও ডিহি। দেশে এখানেই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে খেজুর বাগান করা হচ্ছে বলে জানান শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার। তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে পাঁচ হাজার খেজুর গাছ লাগানো হয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ৩৫ হাজার পুরাতন খেজুর গাছ। “গত বছর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এক হাজার দেশি জাতের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আনা খেজুরের চারা লাগানো হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে।”এসব খেজুর গাছ লাগানোর মাধ্যমে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা যাছাই ও স্থানীয় কৃষক ও হত দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নিত্যরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, জেলায় প্রায় ১০ লাখ খেজুর গাছের মধ্যে অন্তত পৌন সাত লাখ গাছ থেকে রস আহরণ করা হয়। ইট ভাটাসহ নানা কারণে খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে। তবে নতুন করে খেজুর বাগান তৈরির জন্য কৃষিবিভাগ যশোরে কাজ করে যাচ্ছে। শার্শা উপজেলা বনবিভাগের রেঞ্জার নজরুল ইসলাম বলেন, “যশোর অঞ্চলের শত বছরের এই ঐতিহ্যটি ধীরে ধীরে যখন হারিয়ে যেতে বসেছে, ঠিক তখনই বনবিভাগের উদ্যোগে ২০০৯ সালে বেশকিছু খেজুর গাছ রোপন করা হয়।
“বৃহত্তর যশোরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ খেজুর গাছের চারা লাগানো হয়েছে।”
সরেজমিনে জানা যায়, শার্শার জিরেনগাছা ও মাটিপুকুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন, আক্তারুজামান, ইয়াকুব আলী, কামাল হোসেন, আইয়ুব হোসেনসহ শতাধিক চাষি তিন বছর আগে খেজুর গাছ লাগিয়েছেন।
জিরেনগাছা গ্রামের আক্তারুজামান বলেন, “তিন বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে দেড় বিঘা জমিতে ৭৮টি খেজুর গাছ লাগিয়েলাম। এখন তার সুফল পাচ্ছি। রস, গুড় ও পাটালি বিক্রি করে সংসারে সুদিন ফিরেছে।”
ওই গ্রামের জয়নাল আবেদীন বলেন, শীতের মৌসুম কেবল শুরু হয়েছে। এখন খেজুরের রস বিক্রি হচ্ছে ৬/৭ কেজি ওজনের প্রতি ভাড় ১০০ টাকা, আর গুড় ও পাটালি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৫০-২২০ টাকা দরে।
মাটিপুকুর গ্রামের চাষি আয়ুব আলী বলেন, “কৃষি জমির চার পাশে খেজুর গাছ লাগিয়েছি। এর থেকে রস ও গুড় ছাড়াও পাচ্ছি জ্বালানি।”
এতে একদিকে সংসারে বাড়তি আয় যেমন আসছে তেমনি জমির ফসলেরও কোনো ক্ষতি হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top