মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী ০২ সেপ্টেম্বর: নীলফামারীর বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে শাক-সবজি বিভিন্ন তরিতরকারির বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। এলাকায় ভারী বর্ষণের কারণে পচন ও ক্ষেতের গাছ মরে যাওয়ার এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ক্রেতা সাধারণ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জমিতে কৃষকরা শাক-সবজি ও তরিতরকারির আবাদ করেন। আগাম এসব সবজি বাজারে বিক্রি করে দুটো পয়সার মুখ দেখবেন চাষিরা। কিন্ত সে আশায় গুঁড়ে বালি। ভারী বর্ষন কৃষকের সেই স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে। ফসলি জমিতে পানি জমে থাকায় বড় ধরণের ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। গাছে পচন ও মরে যাওয়ার কারণে উৎপাদন অনেক কমে এসেছে। বৃষ্টির আগে যে জমিতে একমন সবজি উঠতো সেখানে বর্তমানে ৮/৯ কেজি কেজিও সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাজারে সরবরাহ কম থাকায় শাক- সবজি ও তরকারির বাজারে আগুন লেগেছে।
সৈয়দপুরের পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি করলা ৫০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, পটল ৭০ টাকা, ঝিঙ্গে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, রসুন ৮০ টাকা, লাল শাক ২৪ টাকা, পাট শাক ২০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, দেশি জাতের আদা ১৩০ টাকা টাকা বিক্রি হচ্ছে। এসব শাক-সবজি ও তরকারি মাত্র ৫০ গজ দূরে খুচরা বাজারে ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছেন দোকানীরা।
বাজারে সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে বলে জানান, আড়তদার আফতাব আহমেদ। বাজারে আমদানি কম থাকায় স্বাভাবিকভাবে দাম বেড়ে যায়। তিনি বলেন, যেটুকু মাল উঠছে তার চেয়ে ক্রেতাই বেশি। আধুনিক পৌর সবজি বাজারের খুচরা দোকানদার নজরুল ইসলাম জানান, পাড়াপাড়ি করে মালামাল বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই একটু লাভ দরে বিক্রি করছি। কোরবানির ঈদের আগেই আরেক দফা পেঁয়াজ, রসুন ও মসলা জাতীয় জিনিসের দাম বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের শাক-সবজির এলাকা হিসেবে পরিচিত শ্বাসকান্দর এলাকার কৃষক আবুজার রহমান জানান, টানা বর্ষণ ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কাঁচা মরিচ, পটল, বেগুন ও শাক- সবজির গাছ মরে যাচ্ছে। কোনভাবেই ফসলের ক্ষেত টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। উৎপাদন কম হওয়ার কারণে এসবের দাম বাড়ছে বলে জানান তিনি।
শাক-সবজি ও তরিতরকারির দাম উর্ধ্বগতির কারণে নাকাল হয়ে পড়েছে উপজেলার নিন্ম আয়ের মানুষ। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করার যেন কেউ নেই। বাজার করতে আসা শহরের পুরাতন বাবুপাড়া এলাকার মতিউল আলম জানান, সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্রেতা সাধারণের শরীরে এখন বিষের ফোঁড়া হয়েছে। বাজেটে কুলাতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত জিনিসপত্রের দাম বাড়লে আর কমতে চায়না এদেশীয় সাংস্কৃতির একটা অংশে পরিণত হয়েছে। দাম বাড়ার এই মহোৎসবে অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দাসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম। দীর্ঘ খরার পর ভারী বর্ষণ, তারপর আবার প্রখর রোদ পড়লে বেগুন, করলা, পটলসহ অন্যান্য সবজি গাছ মারা যেতে পারে বলে আশংকা করছেন চাষিরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।