নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৫ আগস্ট : বাগেরহাটের শরণখোলায় নাজমুল (১৫) নামের এক কিশোরের মা হওয়া নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে বাগেরহাটের শরণখোলা হাসপাতালে সে একটি কন্যা সন্তান জম্ম দিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাসপাতালে উৎসুক জনতার ভিড় লেগে আছে। সকলেই এক পলকের জন্য দেখতে চায় ভ্যান চালক নাজমুল ইসলামের ফুটফুটে কন্যা সন্তানটিকে। জনগণের চাপ সামলাতে তাই হিমসিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। তবে নাজমুল আসলেই কিশোর না কিশোরী তা নিয়েও সন্দেহের দোলায় দুলছে শরণখোলার মানুষ। গত কালও যে ছিল দরিদ্র ভ্যান চালক কিশোর নাজমুল। আজ তার পরিচয় পাওয়া গেল এক কিশোরী মাতা হিসেবে। সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল পরম মমতায় সন্তানকে পাশে নিয়ে শুয়ে রয়েছে নাজমুল রূপী ‘নাজমা’। এলাকাবাসী জানায়, শার্ট-প্যান্ট পরা, দেখতে কিশোর। মাথায় ছেলেদের মত চুলের ছাট। আসল নাম নাজমা আক্তার। বর্তমান বয়স ১৫ বছর। শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের মৃত আ. খালেকের মেয়ে নাজমা। পেটের দায়ে বছর দুই আগে নিজের নাম গোপন করে নাজমুল ইসলাম নাম দিয়ে ছেলেদের ছদ্মবেশে রিকশা-ভ্যান চালাতে শুরু করে সে। তবে এক লম্পটের লালসার শিকার হয়ে এখন সে কুমারী মা। শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি নাজমা বলে, ‘আমার বয়স যখন চার বছর তখন আমার বাবা মারা যান। মা মরিয়ম বেগম বছর পাঁচেক আগে অন্যত্র বিয়ে করে আমাকে ছেড়ে চলে যান। সব হারিয়ে আমার আশ্রয় হয় বৃদ্ধা দাদীর কাছে। এরপর গত এক বছর ধরে জীবীকার তাগিদে রিকশা-ভ্যান চালানোর কঠিন সংগ্রামে নেমে পড়ি।’ নাজমা আরো বলে, ‘মানুষ রূপী পশুদের হাত থেকে বাঁচতে আমি পুরুষের ছদ্মবেশ ধারণ করি। নিজের নাম পাল্টে নাজমুল ইসলাম রাখি। তার পরও নিজেকে রক্ষা করতে পারিনি।’ এ কথা বলার পর কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে নাজমা। সে জানায়, শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের হার্ডওয়ার ব্যাবসায়ী রফিকুলের লালসার শিকার হয় সে। অবশেষে সে অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। বার বার এ কথা জানালেও রফিকুল তাকে গ্রহণ করতে স্বীকৃতি জানাননি। সোমবার সন্ধ্যায় প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যায় নাজমা। ভোরে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের জম্ম দেয় সে। শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার জানান, নাজমা ও তার মেয়ে সুস্থ আছে। পুরুষ ছেলের সন্তান হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় সকাল থেকে শত শত মানুষ হাসপাতালে ভিড় করছে। এখন ভিড় সামলাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম তালুকদারকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী। রফিকুল উপজেলা সদরের মৃত শামছু তালুকদারের ছেলে। শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম জানান, নাজমার স্বীকারোক্তি মতে সোমবার রাতেই থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে মামলার আসামি লম্পট রফিকুলকে গ্রেফতার করে বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।