সকল মেনু

বালু নদীতে ঐতিহ্যের নৌকা বাইচ অনুিষ্ঠত

boatbg_807343530ক্রীড়া ডেস্ক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২২ আগস্ট : ‘আম হায়ো (খাও) রসো রঙে-কাঁঠাল হায়ো কুশে (কোষ)-চিনি চম্পা কলা হায়ো মনেরও বিলাসে’- এমন কোরাস আর পাশার তালে তালে গাইছেন রঙ্গিন পোশাক পরা মাঝি-মাল্লার দল। সেই সাথে বৈঠা ঠেলে নদীর বুক চিরে ‘হেইয়ো’ বলে এগিয়ে চলেছে ৬৯ হাত লম্বা ছুরির মত তীক্ষ্ণ ‘সারঙ্গ’। নদীর দুই কূলে তখন হাজার হাজার দর্শকের হাততালি। নদীমাতৃক বাংলাদেশে আবহমানকাল থেকে বাংলার ঐতিহ্যের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ নৌকা বাইচ। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর ঢাকার পাশ ঘেঁষে বয়ে চলা বালু নদীতে হয়ে গেল এমনই এক নৌকা বাইচ। বাইচকে ঘিরে বসেছিল জমজমাট মেলা। ছিলো নাগরদোলা, ছেলে ভুলানো খেলনা আর মিষ্টান্নের দোকান। জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার উৎসুক জনতা। শনিবার বাড্ডা থানার বেরাইদ ইউনিয়নের বালু নদীতে অনুষ্ঠিত হয় এই নৌকা বাইচ উৎসব। বিকাল সাড়ে তিনটায় বেরাইদ ঘাটে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। এদিকে বাইচ উদ্বোধনের অনেক আগে থেকেই বেরাইদ ঘাট থেকে বসুলিয়া পর্যন্ত নদীর দুই পাশ ঘিরে জড়ো হন হাজার হাজার দর্শনার্থী। রাজধানী সহ, পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী জেলা সহ দূর দূরান্ত থেকে উৎসুক জনতা ছোট ছোট লঞ্চ, নৌকা, ট্রলার ও স্পিড বোট নিয়ে হাজির হন উৎসবস্থলে। রঙ্গ বেরঙ্গের পোশাক এবং সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে নেচে গেয়ে কিশোর-তরুণরা উপভোগ করেন এই নৌকা বাইচ। বেরাইদ ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে এই প্রতিযোগিতায় ৩৪টি দল অংশ নেয়। এর মধ্যে মাসুদ রানার দল প্রথম স্থান অধিকার করে। দ্বিতীয় স্থান ‍অধিকার করে খানবাড়ী নামের একটি দল। বিজয়ী দলের হাতে পুরস্কার হিসেবে তুলে দেয়া হয় সোনার নৌকা। দ্বিতীয় স্থান অধিকারী দল পুরস্কার হিসেবে পায় একটি এলইডি টেলিভিশন। এছাড়া অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক দলকে একটি করে রঙ্গিন টেলিভিশন উপহার দেয়া হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবিএম তাজুল ইসলাম, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহ প্রমুখ। আয়োজক কমিটির প্রধান ও বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হিসেবে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বালু নদীতে আমরা নৌকা বাইচের আয়োজন করে থাকি। এটি আমাদের জন্য একটি উৎসব। এর মাধ্যমে একটি মিলন মেলা ঘটে। অনেক বছর বন্ধ থাকার পর গত তিন বছর ধরে আমরা আবার চালু করেছি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছরই এমন আয়োজন তারা করে যাবেন বলেও জানান তিনি।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top