মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী ৩১ জুলাই: নীলফামারীর সৈয়দপুরের পার্শ্ববর্তী চিরিরবন্দর এলাকার নওখৈর দারুল হাদিস সেলাফিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারের দেয়া ৫৪ জন এতিমের জন্য প্রতি মাসে ৫৪ হাজার টাকা বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতসহ একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় সমাজসেবা দপ্তরে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, চিরিরবন্দর নওখৈর এলাকার এতিম ও অসহায়দের জন্য একটি মাদ্রাসা খোলা হয়। সেখানে ১২ জন এতিম ছাত্রদের ভর্তি করিয়ে ৫৪ জন শিক্ষার্থীর খাওয়া, শিক্ষা, পোশাক ও চিকিৎসা বাবদ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন করা হয়। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে ৫৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য প্রতি মাসে ৫৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। অন্যদিকে যেসব শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় কোরআন শিক্ষা বা হাফেজ হওয়ার জন্য রয়েছে তাদের কাছেও জনপ্রতি ৮৫০ টাকা আদায় করা হয় প্রতি মাসে।
এলাকাবাসী বলেন, ৫৪ জনের দেয়া ৫৪ হাজার টাকা, ১২ জনের খাওয়া ও চিকিৎসার জন্য খরচ হওয়ার কথা হয়। এরপরেও ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অন্যায়ভাবে ছাত্র প্রতি ৮৫০ টাকা আদায় করে চলেছেন। এছাড়া মাদ্রাসার রশিদ বই দিয়ে প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকা আদায় করা হলেও সে টাকা মাদ্রাসার তহবিল ফান্ডে জমা করা হয় না।
নয়ন নামের এক ব্যক্তি জানান, সরকারের দেয়া অর্থ আর শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আদায় করা অর্থে প্রতিদিন গোস্ত ও মাছ-ভাত খাওয়ানোর কথা। কিন্ত সেখানে শিক্ষার্থীদের খাওয়ানো হচ্ছে শুধুই ডাল ভাত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, খাওয়ার মান খারাপ হলেও প্রতিবাদ করার সাহস নেই তাদের। কারণ প্রতিবাদ করলেই মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। তারা বলেন, প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের এক সময় কিছুই ছিলনা। তার বেতন মাত্র ৮ হাজার টাকা। অথচ ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকার কারণে অল্পদিনেই তিনি বনেছেন কোটি টাকার মালিক। ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের বিরুদ্ধে নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে সমাজসেবা অফিসে অভিযোগ দাখিল করলে তারা অভিযোগের সত্যতা পান। কিন্ত পরবর্তীতে পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে নিশ্চুপ রয়েছেন।
কথা হয় ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আজিজুল হক চৌধুরীর সাথে। তিনি বলেন, মাদ্রাসায় আসলে কতজন ছাত্র রয়েছে তার সঠিক হিসাব তার কাছে নেই। শিার্থীদের প্রতিদিন কি কি খাওয়ানো হয় তাও তিনি জানেন না। নামমাত্র তিনি সভাপতি। সম্পূর্ণ কাজই মাদ্রাসার পরিচালক করেন বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার পরিচালক সিরাজুল হকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, দুর্নীতি অনিয়ম যাই করিনা কেন তা কারও দেখার বিষয় নয়। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছুই করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।