সকল মেনু

জাকাতের কাপড় কেড়ে নিল ২২ প্রাণ !

Mymensingh-Pic-1জেলা প্রতিনিধি,ময়মনসিংহ:  ময়মনসিংহ জেলা শহরের একটি ফ্যাক্টরি থেকে জাকাতের কাপড় সংগ্রহ করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো অন্তত ২০ জন। এ ঘটনায় ফ্যাক্টরি মালিক ও তার ছেলেসহ আট জনকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার ভোরে শহরের পৌর এলাকার অতুল চক্রবর্তী রোডের নূরানি জর্দা ফ্যাক্টরির ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।

এ পর্যন্ত নিহত ১৬ জনের নাম পাওয়া  গেছে। তারা হলেন-ময়মনসিংহ শহরের থানা ঘাটে ব্রহ্মপূত্র নদের সঙ্গে বাস্তহারা ক্যাম্পের একই পরিবারের মা শামিমা বেগম (৬০), তার মেয়ে সখিনা (৩৫) ও নাতি লামিয়া (৬)। সিদ্দিক (১১), আঙ্গুরী বেগম (৪৫), বসাক পট্টির মেঘনা বসাক (৪০), পাটগুদাম বিহারী ক্যাম্পের খোদেজা বেগম (৬০), কাচারী ঘাটের ফজিলা বেগম (৭৫), আকুয়া মড়ল পাড়ার ফাতেমা বেগম (৬০), নাজমা বেগম (৫০), ও জহুরা বেগম (৪০), চরপাড়ার হামিদা বেগম (৪৫), চর ঈশ্বরদিদিয়ার সুফিয়া বেগম (৩৫), কাঠেগোলার রেজিয়া বেগম (৫৫), ধোপাখোলা এলাকার সুধারাণী সরকার (৫৫), অতুলচক্রবর্তী রোডের রূপালী (৩৫)। অন্যদের নাম পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এ ঘটনায় আহত ২০ জনের মধ্যে হেনা (৫৪) ময়না (৭০) ও রাসেল (২৫) এই তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আটককৃতরা হলেন- ফ্যাক্টরি মালিক শামীম তালুকদার (৬৫) ও তার ছেলে হেদায়েত তালুকদার (৩০), ফ্যাক্টরির ম্যানেজার ইকবাল হোসেন (৩৫), ইকবাল (৪০), আরমান হোসেন (৩৫), আলমগীর হোসেন (৩৪), আরশাদুল ইসলাম (৩২), ড্রাইভার পারভেজ (৩৫) ও কর্মচারী আ. হামিদ (৩৬)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, নূরানি জর্দা ফ্যাক্টরির পক্ষ থেকে দুস্থ-অসহায় নারীদের মধ্যে জাকাতের কাপড় বিতরণ করার ঘোষণা দেয়া হয় বৃহস্পতিবার রাতে। এখবর জানার পরে হাজারো নারী-পুরুষ মধ্যরাতের পর থেকেই অতুল চক্রবর্তী রোডে ফ্যাক্টরির গেটের সামনে জড়ো হয়। সেহরির পরে ফ্যক্টরির গেট খুলে দেয়া হয়। এ সময় গেট দিয়ে একসঙ্গে শত শত লোকজন ঢোকার চেষ্টা করলে হড়োহুড়ি লেগে যায়। এতে পদদলিত হয়ে ঘটনাস্থলেই অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়। এদের বেশিরভাগই নারী।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। তবে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের ভর্তি করা হয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, নূরানী জর্দা ফ্যাক্টরিতে পদদলিত মৃত এ পর্যন্ত ১৭ জনের লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশ ঘরে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

এ ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী, পুলিশ সুপার মইনুল হক দুর্ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।

জেলা প্রশাসক মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী জানান, সঠিক পরিচয় নির্ণয়ের পর প্রত্যেক মৃত ব্যক্তি ও আহতদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথা সম্ভব আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে। এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা আগামী ৫ কার্যদিবসে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top