সকল মেনু

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মন্দিরের জায়গা দখলের পায়তারা

Kotalipara photo-1)-05.07.2015 গৌরাঙ্গ লাল দাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার ভট্টের বাগান মন্দিরের ৮৪ শতাংশ জায়গা দখলে নিতে পায়তারা করছেন হাবিল বিশ্বাস নামে এক কৃষক।
দখলদার ওই জায়গা দখলে নিতে সেখানে কলা গাছ রোপন করেছে। মন্দিরের পুকুরে মাছ চাষ করেছে। মন্দিরের সীমানা পিলার তুলে ফেলেছে। জোর করে ড্রেজার বসিয়ে মন্দিরের পুকুর থেকে মাটি কেটে নিয়েছে। গত মার্চে মন্দিরের ৩ শ’ বছরের ঐতিহাসিক  বার্ষিক মেলার আয়োজন করা হয়। মন্দিরের জায়গায় মেলার দোকানপাট বসাতে গেলে হাবিল বিশ্বাস বাধা দেয়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। হাবিল বিশ্বাস ওই জায়গা নিজের দখলে নিতে সেখানে  কলা গাছ রোপন করে। এ ব্যাপারে মন্দির কতৃপক্ষ কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মিকাইল এ ব্যাপারে দু’ পক্ষকে নোটিশ করেছেন।
মন্দির কমিটির সহ সাধারন সম্পাদক অশোক কর্মকার জানান, কোটালীপাড়া উপজেলার ঊনশিয়া গ্রামের ভট্টাচার্যদের বাগানে প্রায় ৩ শ’ বছর আগে মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ মন্দির ভট্টের বাগান মন্দির নামে পরিচিত। এখানে মহা মানব গনেশ পাগোল সাধনা করে সিদ্ধি লাভ করেন। এ মন্দিরের ৪৭ শতাংশ সম্পত্তি দেবত্তর সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ড রয়েছে। মন্দিরের পাশের ১১১ শতাংশ সম্পত্তি সরকারের ক তপশীল ভূক্ত রয়েছে। এ জমি সরকারের কাছ থেকে মন্দির কমিটি বন্দোবস্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ২৭ শতাংশের একটি পুকুর মন্দিরের দখলে রয়েছে। বাদ বাকী ৮৪ শতাংশ সম্পত্তি হাবিল বিশ্বাস দখলে নিতে পায়তারা করছে। ওই ৮৪ শতাংশের মধ্যে ২ টি পুকুর ও জমি রয়েছে। জমিতে হাবিল বিশ্বাস কলা গাছ লাগিয়েছে। পুকুরে মাছ চাষ করছে।
মন্দির কমিটির সভাপতি শ্যামল সেন জানান,বিভিন্ন সময়ে হাবিল ওই জমিতে ঘর তুলেছে। পুকুরে ড্রেজার বসিয়ে বালু কেটে নিয়েছে। মন্দিরের সীমানার পিলার ভেঙ্গে ফেলেছে। এ বছর বার্ষিক মেলার দোকান বসার সময় হাবিল বাধা দেয়। পরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশের সহায়তায় আমরা মেলা করেছি। সম্প্রতি সে সেখানে কলাগাছ লাগিয়েছে। এর আগে হাবিল মন্দিরের জমি নিজের নামে বন্দোবস্ত নিতে আবেদন করে। প্রশাসন সমস্ত কাগজপত্র যাচাই  করে মন্দিরের নামেই জমির বন্দোবস্ত বহাল রাখে। এখন সে মন্দির উচ্ছেদ করে সব জায়গা দখলে নিতে চাইছে। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়েই আমরা প্রতিকার চেয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।
অভিযুক্ত হাবলি বিশ্বাসের স্ত্রী কুট্টি বেগম বলেন, আমরা ১৯৬৭-৬৮ সালে এ জমি নিলামে ক্রয় করেছি। সর্বশেষ মাঠ রেকর্ডেও আমরা ওই জমির রেকর্ড পেয়েছি। মন্দিরে সব জায়গা আমাদের। এখন আমরা ওই জমি দখলে নিতে চেষ্টা করছি। সেখানেকোন কিছু করতে গেলেই মন্দির কমিটি বাধা দেয়। তারা কোন সরকারের কাছ থেকে জমির বন্দোবস্ত নিয়েছে, তা আমার জানা নেই।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিকাইল বলেন, মন্দির সংলগ্ন জায়গার মালিক হাবিল বিশ্বাস মন্দিরের জায়গা দখলে নিতে পায়তারা করছে। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে শুনেছি জমিটি ক তপশীল ভূক্ত। আমরা দু’ পক্ষকেই এ ব্যাপারে নোটিশ করেছি। আগামী সোমবার এ ব্যাপারে শুনানী গ্রহন করা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top