সকল মেনু

প্রভাবশালী বাবার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ধর্ষিতার পরিবার

 unnamedযশোর প্রতিনিধি: যশোরের অভয়নগর পল্লীতে এক হতভাগা বাবা পরিবার নিয়ে ধর্ষণকারীর প্রভাবশালী বাবার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বিচার পাওয়ার আশায় বিভিন্ন মহলে ধর্না দিলেও ওই প্রভাবশালীর কারসাজিতে কোথাও ঠাঁই পাচ্ছেন না তিনি। অসহায় পরিবারটির সদস্যরা তাদের শিশুকন্যার ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। একই দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন এলাকাবাসীও। গত ৪ জুন দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামে চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া ওই শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এরপর চলে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার তৎপরতা। কিন্তু এলাকার কয়েকজন সচেতন মানুষের প্রচেষ্টায় অবশেষে গত বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। এরপর মামলা নেয় অভয়নগর থানা পুলিশ। আটকও হয় ধর্ষক একই গ্রামের মনসুর মোল্যার ছেলে  ও দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আলাউদ্দিন মোল্যা।
গ্রামবাসী জানায়, গত ৪ জুন বাঘুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে গাছ থেকে পাখির বাসা পেড়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আলাউদ্দিন শামসুর মোল্যার বাঁশবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে অসুস্থ অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় পরিবারের সদস্য শিশুটিকে প্রথমে স্থানীয় পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের ডাক্তার আবু সাঈদের কাছে নিয়ে যান। তিনি শিশুটিকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার তাকে বাড়িতে আনা হয়।
বাঘুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও আনসার ভিডিপি’র বাঘুটিয়া ইউনিয়ন কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, ধর্ষক আলাউদ্দিনের বাবা মনসুর আলী ও তার ভাই (মনসুরের) সাবেক ইউপি সদস্য   আবু হোসেন মোল্যা আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তারা প্রভাব খাটিয়ে ঘটনার পর এক সপ্তাহ ধরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছে। এমনকি মোটা অংকের টাকা লেনদেন করে মামলা আটকে রাখে। কিন্তু এলাকার কয়েকজন সচেতন মানুষ স্থানীয় ভাটপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে চাপ প্রয়োগ করায় সেখানকার ইনচার্জ এসআই বজলুর রহমান বৃহস্পতিবার অভয়নগর থানায় একটি মামলা করতে সহায়তা করেন। একই সাথে ধর্ষক আলাউদ্দিনকে আটকও করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বজলুর রহমান জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদে আলাউদ্দিন ওই শিশুটিকে ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছে।
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, শুক্রবার ২৫০ শয্যা যশোর জেনারেল হাসপাতালে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। আটক করা হয়েছে ধর্ষক আলাউদ্দিনকে। পরিবারটির নিরাপত্তা নিয়েও পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এদিকে, মামলা তুলে নেয়ার জন্য ওই শিশুর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভয়ে পরিবারের সদস্যদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। পরিবারটির নিরাপত্তা ও ধর্ষক আলাউদ্দিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল নওয়াপাড়া বাজারে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top