শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর নিজে দুই অপহরণকারীকে হাতেনাতে ধরে অপহরণের শিকার হতে নেয়া এক গার্মেন্টস কর্মীর ইজ্জত ও জীবন রক্ষা করেছেন। দুই অপহরণকারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তারা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ভেতর গতকাল সোমবার রাত আনুমানিক সোয়া ১১ টার দিকে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর পুলিশের বিভিন্ন পোষ্ট চেক করে শহরের ষোলঘর এলাকায় অবস্থিত তার সরকারি বাসায় ফিরছিলেন। বাসা এবং অফিসের কাছাকাছি আসতেই চাঁদপুর সার্কিট হাউজ ও জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাঝামাঝি অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকায় দুই হোন্ডারোহি কর্তৃক একটি রিক্সাকে ঘিরে রাখতে দেখে তিনি গাড়ি থামিয়ে সেখানে যান। দেখতে পান ১৮/১৯ বছর বয়সী এক তরুণী রিক্সায় বসে আছে। মেয়েটির নাম শিখা আক্তার। সে চট্রগ্রামে একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করে। বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী গ্রামে। সে রাত পৌনে ১১ টার দিকে চাঁদপুর কোর্ট স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে রিক্সাযোগে গ্রামের বাড়িতে যাবার পথে অন্ধকারাচ্ছন্ন ওই জায়গায় উল্লেখিত দু’যুবক তার রিক্সার গতিরোধ করে তাকে বাসষ্ট্যান্ডের দিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল। সেখানে নিয়ে তারা নাকি সিএনজিচালিত অটোরিক্সায় করে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেবে। কিন্তু মেয়েটি তাদের সাথে যেতে চাইছিল না। পুলিশ সুপার রিক্সাচালক নূরুল আমিন এর সাথে কথা বলে নিশ্চিত হন, ওই যুবকরা মেয়েটিকে রিক্সায় উঠার পর থেকে ফলো করে আসছিল। নির্জন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গা পেয়ে মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দেবে বলে অন্যত্র নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল। বিষয়টি অপহরণের উদ্যোগ বুঝতে পেরে কালবিলম্ব না করে পুলিশ সুপার নিজেই দু’অপহরণকারীকে ধরে মেয়েটিকেসহ পাশেই অবস্থিত তার কার্যালয়ে নিয়ে যান। পরে টহল পুলিশ এসে ওই দ’যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপার মেয়ের বাবাকে খবর দিয়ে চাঁদপুর আনান এবং মেয়ের জবানবন্দি গ্রহনের ব্যবস্থা করে তাকে তার বাবার হাতে তুলে দেন। মঙ্গলবার সকালে মেয়ের বাবা শুক্কুর গাজী বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেছে। আটককৃত দুই যুবকের নাম ও পরিচয় জানা গেছে। তারা হচ্ছে ঃ চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের রংয়েরগাঁও গ্রামের মৃত কালু গাজীর ছেলে জয়নাল আবেদীন গাজী (২৮) এবং চান্দ্রা ইউনিয়নের মদনা গ্রামের আঃ সাত্তার পাটওয়ারীর ছেলে আঃ শহীদ সুজন (২৯)। সুজন বর্তমানে চাঁদপুর শহরের আবহাওয়া অফিস লাগোয়া একটি বাসায় থাকে। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত তাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর না করে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।