সকল মেনু

ক্যাম্পাসের পাহাড়ি কন্যা

015 স্বপ্ন পারে মানুষকে তার কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছে দিতে। জীবনের প্রতিটি সিঁড়িতে মানসিক শক্তিকে উজ্জ্বীবিত করতে স্বপ্নের হাত ধরে হাঁটি আমরা সবাই। তবে বাস্তবতাকে যদি স্বপ্নের সঙ্গী করে দেয়া যায় তাহলেই দেখা দেয় জীবনের আশানুরূপ স্বর্ণযুগ। স্বপ্ন আর বাস্তবতাকে মিলিয়ে সেই মধুর সন্ধি-লগ্নকে উপভোগ করছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিশু দেওয়ান।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কলেজগেট এলাকার মেয়ে মিশু। সমুদ্র নয়, পাহাড়কে বেশি ভালো লাগে তাই তার নৃত্যতেও পাহাড়ের নির্জনতার প্রকাশ পায় সুনিপুনভাবে। ক্যাম্পাসের সবাই তাকে পাহাড়ি কন্যা বলে।

নৃত্যটাকে মনে প্রাণে গেঁথে নিয়েছেন মিশু। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন অনুষ্ঠানে নাচের কোরিওগ্রাফী থেকে শুরু করে পরিবেশনা পর্যন্ত তাকে দেখা যায়। অথচ এ বিষয়ে তার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। গানের সঙ্গে নিজের অনুভূতি মিলিয়ে নাচের মাধ্যমে তা প্রকাশ করেন ক্লাস সিক্স থেকে। একা একা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চলত তার চর্চা।

হঠাৎ করে সুযোগ পেলেন মঞ্চে পারফর্ম করার। খাগড়াছড়ির পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোর ভার এসে পড়তো তার উপরে। স্কুল পেরিয়ে কলেজের গণ্ডিতে পা রাখার পরেও একই দায়িত্বভার তার উপর।

চট্টগ্রামের কুণ্ডেশ্বরী গার্লস কলেজের মিশু দেওয়ান তখনি মনোমুগ্ধকর অধিবাসী নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে দর্শকদের মন কেড়ে নেন শিল্পকলা একাডেমীর এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। এরপর একে একে অংশগ্রহণ করেছেন বনানীর রেডিসন, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন এর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। সর্বশেষ ২০১৫ এর ২১ ফেব্রুয়ারি মহামাণ্য রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদের নর্থ টাওয়ারে বিটিভি ওয়ার্ল্ড প্রযোজিত মায়ের ভাষা অনুষ্ঠানে পাহাড়ি নৃত্য পরিবেশনা করেছেন। ছোটবেলা থেকে নাচের পাশাপাশি ছবি আঁকার চর্চাও চালিয়ে আসছেন তিনি।

নিজের ইচ্ছায় শখগুলো চলতে দিয়েছেন বাবা। তার ইচ্ছায় সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ভর্তি হন। জাতি হিসাবে চাকমা হলেও বাঙালি সংস্কৃতিটাকে বেশি ভালবাসেন মিশু। অবসর সময়ে নকশা করতেও ভালোবাসেন। পাহাড়ে ঘোরাটা মিশুর কাছে অনেক আনন্দের। কথা বলতে বলতে হঠাৎ বলে উঠলেন আমার বাবা-মা আমার কাছে অনেক সহানুভূতিশীল। আমার স্বপ্ন ভবিষ্যতে একটা ক্লাব খোলার। যেখানে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নাচ ও ছবি আঁকা শিখবে। তাছাড়া ভবিষ্যতে নাচের কোরিওগ্রাফার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন এই পাহাড়ি কন্যা। যদিও বাবার মত ডাক্তার হয়ে মানবসেবায় ইচ্ছা ছিল কিন্তু ভর্তিযুদ্ধের কাছে হার মানতে হয় তাকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top