সকল মেনু

বিতর্কিত ভূমিকায় বিশ্বমিডিয়া ফাঁসির খবরেও

indexআন্তর্জাতিক ডেস্ক,ঢাকা: বরাবরের মতোই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নিয়ে বিতর্কিত সংবাদ প্রচার করছে বিশ্ব সংবাদমাধ্যমগুলো! শনিবার (১১ এপ্রিল) রাতে একজন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলেও এসব সংবাদমাধ্যম বলছে, একজন ইসলামী নেতাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে! এ ধরনের বিতর্কিত ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেওয়া প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলোকেও।

শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় আল বদর কমান্ডার যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরপরই গুরুত্ব দিয়ে সংবাদটি প্রচার করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিবিসি, রয়টার্স, কাতারভিত্তিক আল জাজিরা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এপি, নিউইয়র্ক টাইমস, ইয়াহু নিউজ, এবিসি নিউজ, ওয়াশিংটন পোস্ট, ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, আইবিএনলাইভ, দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, জি নিউজ, নিউজিল্যান্ডের এনজিহেরাল্ড, অস্ট্রেলিয়ার ডেইলি টেলিগ্রাফ, মালয়েশিয়ার দ্য স্টার.কম, সংযুক্ত আরব আমিরাতের গালফ নিউজসহ অনেক খ্যাতনামা সংবাদ-সম্প্রচারমাধ্যম।

তবে, এসব মাধ্যমের প্রায় বেশিরভাগই সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে কামারুজ্জামানকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে পরিচয় দেওয়ার চেয়ে ইসলামী নেতা বা জামায়াতে ইসলামীর কর্মকর্তা/শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে চেয়েছে বেশি।

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষীর ভূমিকা রাখা বিবিসি তাদের অনলাইনে খবরটির শিরোনাম করেছে ‘বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতিকের ফাঁসি’।

তারা বলেছে, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার দায়ে ঢাকার কারাগারে এক ইসলামী রাজনীতিককে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে’।

এপি যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির খবরটির শিরোনাম দিয়েছে ‘যুদ্ধাপরাধের জন্য বাংলাদেশে ইসলামী দলের কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি তাদের খবরে বলেছে, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ইসলামী দলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে শনিবার ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ।’

জামায়াতের আন্তর্জাতিক মুখপত্র বলে পরিচিত আল জাজিরা এ বিষয়ে তাদের খবরের শিরোনাম করেছে ‘১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসলামী নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে বাংলাদেশ’।

খবরটিতে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভের সময় যুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জামায়াতে ইসলামীর নেতা কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে আল জাজিরা।

বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, খবরটি প্রচারে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বাংলাদেশের মানুষের উল্লাসের কোনো ছবি না দিলেও চতুর আল জাজিরা প্রচার করেছে কামারুজ্জামানের পরিবারের ভি চিহ্ন প্রদর্শনের কান্নাকাটিরত ছবি।

সোহাগপুরের বিধবাপল্লীর কুখ্যাত কামারুজ্জামানকে ইসলামী নেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আগ্রহ দেখা গেছে রয়টার্সের মধ্যেও।

এসব ছাপিয়ে সবচেয়ে বিস্ময়ের খবর দিয়েছে ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া। প্রতিবেশী দেশের প্রগতিশীল এ সংবাদমাধ্যমও কামারুজ্জামানকে যুদ্ধাপরাধীর চেয়ে ইসলামী নেতা বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়াস চালিয়েছে বেশি।

এছাড়া, অন্য অনেকগুলো সংবাদমাধ্যম এপি, বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরার বরাত দিয়ে খবরটি প্রচার করায় প্রায় একই ধরনের ভূমিকায় থেকেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top