সকল মেনু

স্রষ্টাকে দুষছেন নির্বাক রূপালী ‍

  Narayangan-death-114-pic2-RUPALI01-e1427459198437স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,হটনিউজ২৪বিডি.কম, নারায়ণগঞ্জ: মানিকগঞ্জের জাবরা এলাকা থেকে লাঙ্গলবন্দে এসেছিলেন রূপালী দাস। সঙ্গে ছিলেন স্বামী, শাশুড়ি, মেয়ে আর প্রতিবেশিসহ ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল। পাপ মোচন করতে তিনি এত কষ্ট করে লাঙ্গলবন্দে আসেন। কিন্তু পাপ মোচন হয়েছে কিনা তা জানেন না। তবে শাশুড়ি আর স্বামীকে হারিয়ে তিনি এখন নির্বাক। আহতাবস্থায় মেয়ে পূজাকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। যে জানে না তার বাবা আর ঠাকুমা পদদলিত হয়ে সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে। স্বামী শাশুড়ির শোকে নির্বাক রূপালী এখন দুষছেন শুধু স্রষ্টা আর ভাগ্যকে। তিনি আর্তনাদ করে বলছেন, ‘হায় ভগবান, তুমি এ কী করলে? আমার সব নিয়ে গেলে।’

শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ার গুজবে পুণ্যস্নান উৎসবে পদদলিত হয়ে সাত নারীসহ ১০ জন প্রাণ হারায়।

ওই ঘটনায় রূপালী দাস তার স্বামী নিত্য গোপাল ও শাশুড়ি মালতি দাসকে চোখের সামনে মানুষের পদতলে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেন। সেই সঙ্গে ভিড়ের মধ্যে হাত থেকে ফসকে যায় মেয়ে পূজা।

এক পর্যায়ে পদতলে পিষ্ট হয়ে নিজেও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন রূপালী। পূজাকে জীবিত অবস্থায় রক্ষা করা সম্ভব হলেও মারাত্মক আহতাবস্থায় তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ভর্তি করায় হাসপাতালে। আর নূরজাহান নামে স্থানীয় এক নারী রূপালী দাসকে উদ্ধার করে জ্ঞান ফিরিয়ে আনেন। সকাল থেকে রূপালী দাসের সঙ্গেই রয়েছেন নূরজাহান।

ঘটনার পরপর স্থানীয় সংসদ সদস্য ছুটে যান ঘটনাস্থলে। নিহতের স্বজনদের হাতে ২৫ হাজার করে টাকা অনুদান দেন। এসময় স্বজনদের কান্নায় লাঙ্গলবন্দের বাতাস ভারী হয়ে উঠে। লাঙ্গলবন্দ আওয়ামী লীগ অফিসে এমপির অনুদানের টাকা দেয়ারর জন্য যখন নিত্য গোপাল ও মালতি দাসের নাম ঘোষণা করা হয় তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন রূপালী দাস।
তিনি আর্তনাদ করে বলতে থাকেন, হায় ভগবান, তুমি এ কী করলে? আমার সব নিয়ে গেলে। আমি এখন কি করে বাচঁবো?

রূপালী দাস তার স্বামী, শাশুড়ি আর মেয়ের নাম বলতে পারলেও ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। তার সঙ্গে থাকা নূরজাহান জানান, সকালে ঘটনার পর রূপালী দাসকে বেইলি ব্রিজের ওপর অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার সঙ্গে কেউ না থাকায় তার সেবা করে জ্ঞান ফেরান। নূর জাহান আরো জানান, ঘটনার পর রূপালীর সঙ্গে থাকা নগদ টাকা পয়সা ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।

এ সময় হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় রূপালীর মেয়ে পূজাকে। পূজা আওয়ামী লীগ অফিসে এসেই জানতে চান তার বাবা কোথায়। উপস্থিত সবাই পূজাকে মিথ্যা সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top