সকল মেনু

মাঠ আকন্দের দখলে,স্বেচ্ছানির্বাসনে মোশাররফ

 ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: না কোনো মামলা, না কোনো হুমকি। যেন স্বেচ্ছানির্বাসনে গিয়েছেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম মোশাররফ হোসেন। আর সেই সুযোগের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করে মাঠ দখলে নিয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ। এমনটাই জানালেন ময়মনসিংহের নগরবাসী। ব্যবসায়ী আলী হেসেন  বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনে বিএনপি মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগের নেতৃত্ব দেন মোশাররফ হোসেন ও অন্যটির আবু ওয়াহাব আকন্দ। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই দুই নেতার মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। তারপর থেকে তাদের মধ্যে গ্রুপিং শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু ওয়াহাব আকন্দ ’৯০ এর ছাত্র আন্দোলন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও ১৯৯৯ সালে তিনি কর্মসূত্রে নিউইয়র্কে চলে যান। ২০০৫ সাল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এই সময়ে ময়মনসিংহের বিএনপি’র নেতৃত্ব মোশাররফ হোসেনের  হাতে চলে যায়। আবু ওয়াহাব আকন্দ ২০০৫ সালে দেশে ফিরে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। কিন্তু ২০০৮ সালে মনোনয়ন দৌড়ে মোশাররফ হেসেনের কাছে হেরে যান তিনি।

জেলা বিএনপি’র একাধিক সূত্র জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ততোটা সক্রিয় না থাকলেও মাঠ ছেড়ে যাননি আবু ওয়াহাব আকন্দ।

অন্যদিকে, চলতি বছরের শুরুতে বিএনপি’র ডাকা লাগাতার অবরোধে হঠাৎ করেই মোশাররফ হোসেন আত্মগোপনে চলে যান বলে জানান দলটির কর্মী আজিজ মোল্লা। তিনি বলেন, মোশাররফ হেসেনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। পুলিশ একদিন তার বাসায় গিয়ে তল্লাশি চালায়। তারপর থেকে তিনি এলাকা ছেড়ে কোথায় গেছেন, তা কেউ বলতে পারে না। এমনকি তার কোনো খোঁজ-খবরও নেই। এখন আবু ওয়াহাব আকন্দ বিএনপি’র হাল ধরেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির একটি সূত্র জানায়, মোশাররফ হোসেনের নিষ্ক্রিয়তার কারণে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে তার অনুসারীরা। তাই সরকারি দলকে তাদের কোনঠাসা করতে হচ্ছে না। আবু ওয়াহাব আকন্দ অনুসারীরাই তাদের কোনঠাসা করে রাখছে। ময়মনসিংহ বিএনপি’র নিয়ন্ত্রণ এখন আকন্দের হাতে।

এসব বিষয় নিয়ে কথা হয় আবু ওয়াহাব আকন্দের সঙ্গে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনোয়ন না পাওয়ার বিষয়ে তিনি  বলেন, ওই সময় তারেক রহমান আমার সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতেন না, তাই আমি তখন নমিনেশন পাইনি। তবে আশা করছি, ভবিষ্যতে আমার কাজের মূল্যায়ন করা হবে।

মোশাররফ হোসেন আত্মগোপনে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ময়মনসিংহের বিএনপি একই আছে। গুম, হত্যা, গ্রেফতারের মহোৎসব চালাচ্ছে সরকার। তাই কৌশলগত কারণেই অনেক ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কার পরে কে দায়িত্ব নেবেন, সব উপর থেকে আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া আছে। তাই চিন্তার কিছু নেই।

মোশাররফ হোসেনের দিকে ইঙ্গিত করে আবু ওয়াহাব আকন্দ বলেন, বিএনপিতে দুই ধরনের লোক আছে। একদল হুট করে এসে রজনীতিবিদ বনে যান। আর একদল জন্ম থেকেই বিএনপি’র সঙ্গে আছে। আমি দ্বিতীয় দলের তালিকায়।

এদিকে ময়মনসিংহ দক্ষিণ বিএনপি সভাপতি মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এমনকি তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top